দিনকাল নারায়ণগঞ্জ ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁয়ে দুটি রাজনৈতিক কলংক সৃষ্টি হয়েছে বর্তমানের বিনা ভোটের এমপি লিয়াকত হোসেন খোকার আমনেই ঘটেছে। এর আগে সোনারগাঁয়ে কোন রাজনৈতিক শীর্ষ নেতা কোন কর্মী বা সন্ত্রাসীদের দ্বারা কোন রকম রাজপথের মুখোমুখী অবস্থান ছাড়া এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটেনি। সোনারগাঁয়ে সন্ত্রাসী স্টাইলের রাজনীতি কায়েম করতে চাচ্ছেন বর্তমান এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা।
স্থানীয় বিভিন্ন দলের নেতাকর্মী ও বিভিন্ন শ্রেণির পেশার লোকজনদের হুমকি ধমকি ভয় ভীতি দেখিয়ে নিজের বগলতলায় বন্ধি করার চেষ্টা করছেন এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা। এসব ছাড়াও সোনারগাঁয়ে দুজন প্রতিষ্ঠিত রাজনীতিক প্রকাশ্যে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হলেন। যাদের একজন আজহারুল ইসলাম মান্নান ও অপরজন কেন্দ্রীয় মহিলা পার্টির সাধারণ সম্পাদক অনন্যা হুসেইন মৌসুমী।
জানাগেছে, গত ১৩ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁও) আসনে বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী আজহারুল ইসলাম মান্নানের উপর হামলা চালিয়েছে সোনারগাঁও পৌর ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক দাবিদার রনি বিল্লাহ। ওই সময় রনি বিল্লাহকে আটক করে থানা পুুলিশ। পরে ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে রনি বিল্লাহকে তিন মাসের কারাদন্ডও দেন আদালত। ওইদিন বুধবার বিকেলে সোনারগাঁও উপজেলা পরিষদে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সভা চলা অবস্থায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও সোনারগাঁ থানার ওসির সামনেই এ হামলা চালানো হয়।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন- রনি বিল্লাহ বর্তমান লিয়াকত হোসেন খোকার ছবি সম্বলিত ব্যানার পোস্টার ফ্যাস্টুন লাগিয়ে প্রচারণা চালিয়ে আসছিলেন। আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে জড়িত এই রনি বিল্লাহ এক সময় উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালামের মিটিং মিছিলে দেখা যেতো। তবে বিএনপি নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেছেন- সোনারগাঁও ইউএনও ও ওসির মদদে এবং এমপির নির্দেশেই মান্নানের উপর এমন হামলা চালানো হয়।
এর আগে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় লিয়াকত হোসেন খোকা নির্বাচিত হওয়ার কয়েক মাসের মাথায় সোনারগাঁও উদ্ধবগঞ্জ এলাকায় জাতীয়পার্টির অফিসে অনন্যা হুসেইন মৌসুমীর উপর হামলা চালায় এমপি খোকার লোকজন। ওই হামলার শিকার হয়ে মৌসুমী থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছিলেন। কিন্তু তার মামলা গ্রহণ করেনি। পরবর্তীতে মৌসুমী কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে সক্রিয় হন।
এছাড়াও ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাজকে কেন্দ্র করে অনন্যা হুসেইন মৌসুমীকে অভিযুক্ত করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করে এমপি খোকা অনুগামী ছাত্র সমাজের নেতা ফজলুুল হক মাস্টার। পরদিন সোনারগাঁও জাতীয়পার্টির নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে জেলা কমিটি। যেখানে মৌসুুমীকে তার সভাপতি পদে রাখা হয়নি। এর আগে সোনারগাঁয়ে রাজনীতিকদের মাঝে এমন সব ঘটনা দেখা যায়নি বলে জানিয়েছেন রাজনীতিক নেতাকর্মীরা।
সূত্রমতে, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে এ আসনে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন পান উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন ও জাতীয়পার্টি থেকে মনোনয়ন পান জাতীয়পার্টির যুগ্ম মহাসচিব লিয়াকত হোসেন খোকা। ওই নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করেনি। নির্বাচনে আওয়ামীলীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের শরীক দল জাতীয়পার্টিকে এ আসনটি ছেড়ে দিলে মোশারফ হোসেন তার মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন। এতে বিনা ভোটে এমপি নির্বাচিত হয়ে যান লিয়াকত হোসেন খোকা। এর আগে সোনারগাঁয়ের মানুষের কাছে পরিচিতই ছিলেন তিনি।
সোনারগাঁয়ে জাতীয়পার্টির রাজনীতিকে বাচিঁয়ে রেখেছিলেন মৌসুমী। কিন্তু মৌসুমীকে মনোনয়ন দেয়া হয়নি। মৌসুমী ছিলেন সোনারগাঁও জাতীয়পার্টির সভাপতি। এবারের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও লাঙ্গল প্রতীকে নির্বাচনে মনোনিত হয়েছেন এমপি খোকা। এখানে আওয়ামীলীগের সাবেক এমপি আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত সিংহ প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়াই করছেন। ফলে এখানে লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে আওয়ামীলীগ ও সোনারগাঁবাসীর মাঝে উৎসাহ নেই। ধানের শীষ প্রতীকে লড়ছেন আজহারুল ইসলাম মান্নান। মূল লড়াইটা হবে ধানের শীষ ও সিংহ প্রতীকের। এমনটাই মনে করছেন স্থানীয়রা।