সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জের রুপগঞ্জে বালু নদীর উপর সড়ক ও জনপথের নির্মাণাধীন সেতুর কাজ থমকে গেল বিআইডব্লিউটিএ এর আপত্তির কারনে। সেতুর কাজ প্রায় ৭০ ভাগ সম্পন্ন হওয়ার পর গত জুন মাসে ওই আপত্তির পর সেতুর কাজ বন্ধ হয়ে যায়। সেতুটি নির্মাণ সম্পন্ন হলে রুপগঞ্জের সাথে ঢাকার যোগাযোগ অধিক সহজতর হবে। সেতু নির্মাণে বাধা দূর করতে আগামী ১১ নভেম্বর আন্ত:মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে আলোচনা হবে বলে জানাগেছে।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নারায়ণগঞ্জ সড়ক বিভাগের তথ্যমতে, রুপগঞ্জের মাঝিনা-কায়েতপাড়া-ত্রিমোহনী সড়কের চতুর্থ কিলোমিটারে বালু নদীর উপর ৭৫ দশমিক ৩০ মিটার আরসিসি পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০০৩ সালে।
২০০৭ সালের এপ্রিল পর্যন্ত সেতুর ৬০ ভাগ কাজ শেষ হওয়ার পর সেতুর সংযোগ সড়কের ভুমি অধিগ্রহণ জটিলতায় এর নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যায়। ওই সময়ের মোট ব্যয় অনুমোদন করা হয়েছিল ৫ কোটি ৮০ লাখ টাকা।
এরপর ভুমি অধিগ্রহনের ওই জটিলতা দূর করতে সময় লাগে ১৫ বছর। চলতি বছরের মে মাসে পুনরায় সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ করতে ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হয়। ঠিকাদার সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণ শুরু করে মূল সেতুর অবশিষ্ট কাজ শুরু করার সময়ে গত ২৫ জুন বিআইডব্লিউটিএ একটি আপত্তি দেয়। এতে সেতুর নির্মাণ কাজ আবারো অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
সেতুটির নির্মাণ প্রকল্পের বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকা নারায়ণগঞ্জ সড়ক উপ-বিভাগ-২এর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সাখাওয়াত হোসেন জানিয়েছেন, বিআইডব্লিউটিএ চিঠি দিয়ে জানিয়েছে সেতুটির নির্মাণের সময় ভার্টিকেল ক্লিয়ারেন্স স্ট্যান্ডার্ড হাই ওয়াটার লেভেল হতে ১২দশমিক ২০ মিটার রাখতে হবে এবং এক গার্ডার থেকে অপর গার্ডারের মধ্যে ৭৬ দশমিক ২২মিটার ক্লিয়ারেন্স থাকতে হবে। বালু নদীকে তারা দ্বিতীয় শ্রেণীর নদী হিসেবে উন্নীত করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন। আমাদের সেতু ডিজাইন বিভাগ নদীটিকে তৃতীয় শ্রেণীর বিবেচনায় ডিজাইন সম্পন্ন করে। এই ডিজাইন অনুযায়ী দরপত্র আহ্বান করে গত ১৬ মে ঠিকাদার নিয়োগ দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। সেতুর প্রায় ৭০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর বিআইডব্লিউটিএ এ আপত্তি জানায়। অথচ বালু নদীর উপর রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ একটি ১০৯ মিটার দীর্ঘ সেতু এবং স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ১১০ দশমিক ৫০ মিটার দীর্ঘ কায়েতপাড়া সেতুটি নির্মাণ করেছে বালু নদীকে তৃতীয় শ্রেণীর নদী অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা রেখে। এই সেতু দুটির মধ্যিখানে সওজ এর নির্মাণাধীন আমাদের সেতু। ওই দুটি সেতুর ভার্টিক্যাল ক্লিয়ারেন্স রাখা হয়েছে ৭ দশমিক ৬২ মিটার এবং এক গার্ডার থেকে অন্যটির দূরত্ব রাখা হয়ে যথাক্রমে ৩৪ দশমিক ৫০ মিটার এবং ২৫ দশমিক ৫০ মিটার।
ওই প্রকৌশলী আরো বলেন, আমরা সরেজমিনে দেখেছি বালু নদী একটি শাখা নদী। সেখানে বড় কোন নৌযান চলাচল করে না। শুষ্ক মৌসুমে নদীটিতে সর্বোচ্চ ৩ থেকে ৪ মিটার পানি থাকে এবং এর প্রসস্থতা ২৫ থেকে ৩০ মিটারের মধ্যে নেমে আসে। এছাড়াও আমাদের সেতুর মোট দৈর্ঘ্য ৭৫ দশমিক ৩০ মিটার। বিআইডব্লিউটিএ বলেছে গার্ডারের মাঝে গ্যাপ রাখতে হবে ৭৬ দশমিক ২২ মিটার। অথচ নদীটির বিদ্যমান অবস্থায় এধরনের প্রসস্থতা নেই।
প্রকৌশলী সাখাওয়াত হোসেন বলেন, সেতুটি নির্মাণ না হলে ইতিপূর্বে যে টাকা খরচ হয়েছে তার পুরোটাই অপচয় হবে। আর সেতুটি নির্মান সম্পন্ন হলে রুপগঞ্জের সাথে সড়কপথে রাজধানীর সরাসরি সহজ যোগাযোগ স্থাপিত হবে। এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের এ দাবি পূরণ হলে তারাও উপকৃত হবেন।
সৃষ্ট সমস্যা সমাধানে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও পাট ও বস্ত্র মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী কাজ করছেন জানিয়ে ওই প্রকৌশলী আরও বলেন, ১১ নভেম্বর এ বিষয়ে আন্ত:মন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে।