সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
এবার মানবতা দেখালেন নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সোনারগাঁয়ের সন্তান অ্যাডভোকেট ফিরোজ মিয়া। গত ১২ নভেম্বর মঙ্গলবার সকাল ভোরে নারয়ণগঞ্জ শহরের ১নং বাবুরাইল এলাকার মৃত মোতালেব শাহর স্ত্রী আসমা বেগম তার নিজ বাড়ীতে বার্ধক্যজনিত কারনে মৃত্যুবরণ করেন।
মরহুমা আছমা বেগমের ছেলে মেহেদী আক্তার বকুল একটি মামলায় নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারে। মৃত্যুর আগে আসমা বেগমের শেষ ইচ্ছা ছিল কারাগারে থাকা তার ছেলে জানাজায় দাফন কাফন অংশগ্রহণ করবে। কিন্তু মেহেদী কারাগারে থাকায় তার মায়ের শেষ ইচ্ছা পূরণ প্রায় অসম্ভব ছিল।
মায়ের শেষ ইচ্ছে পূরণের জন্য পরিবারের সদস্যরা নারায়ণগঞ্জ আদালতপাড়ায় কান্নাজড়িত অবস্থায় ছোটাছুটি করতে থাকেন। অতঃপর তাদের ছোটাছুটি ও কান্নাঝরা অশ্রুমুখ দেখে অ্যাডভোকেট মোঃ ফিরোজ মিয়া এগিয়ে আসেন এবং তাদের মুখ থেকে তাদের মায়ের শেষ ইচ্ছা কথা শুনেন।
মরহুমার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে প্যারোলে মুক্তির জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত আবেদন করেন। জেলা প্রশাসক জরুরী কাজে নিজ কর্মস্থলে অনপুস্থিত থাকলে তারা সবাই অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে যান এবং ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ খুলে বলেন।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ঘটনার বিস্তারিত শুনে প্যারোলে মুক্তির লিখিত আবেদনটি জরুরী ভিত্তিতে ফাইলিং করার জন্য জিএম শাখাকে নির্দেশ প্রদান করেন। জিএম শাখার সহকারী কমিশনার ফারজানা আক্তারের সার্বিক সহযোগীতায় মায়ের মৃত্যুতে প্যারোলে মুক্তির আবেদনের বিষয়ে জেল কোড অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশ সুপার ও জেল সুপারকে নির্দেশক্রমে অনুরোধের একটি পত্র প্রেরণ করেন।
পরবর্তীতে অ্যাডভোকেট মোঃ ফিরোজ মিয়া উক্ত অনুরোধের একটি পত্র পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে জমা দিয়ে মেহেদীর পরিবারের লোকজনদের নিয়ে উক্ত অনুরোধের আরেকটি পত্র জেলা প্রশাসকের কর্মচারী দিয়ে জেল সুপার বরাবর জমা প্রদান করেন। কিছুক্ষণ পর পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে পুলিশের একটি গাড়ীযোগে পুলিশ আসে এবং তাদের পাহাড়ায় মেহেদী আক্তার বকুলকে তার মায়ের দাফন কাফনের জন্য রওনা হয়।
এ বিষয়ে অ্যাডভোকেট মোঃ ফিরোজ মিয়া বলেন, আমি ভাল একজন আইনজীবী হওয়ার আগে ভালো একজন মানবিক মানুষ হতে চাই। আমি যেন সবার সাহয্যে এগিয়ে আসতে পারি এবং সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।