বন্দর ইউপির দুর্নীতিবাজ বরখাস্ত সচিবের বিরুদ্ধে মামলা

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয়ে জন্ম নিবন্ধন ও ট্রেড লাইসেন্স খাতে ৩৩ লাখ টাকা আত্মসাতের ঘটনায় নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার বন্দর ইউনিয়ন পরিষদের বরখাস্তকৃত সচিব ইউসুফের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এহসান উদ্দিন।

২৮ নভেম্বর বৃহস্পতিবার এহসান উদ্দিন বাদী হয়ে নারায়ণগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (খ) অঞ্চল আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। আদালতে মামলাটির আবেদন করা হলে আদালত মামলাটি গ্রহণ করে তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুর অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছেন। বাদীর সরল বিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে আসামি দুর্নীতি করেছেন। মামলার বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শরীফুল ইসলাম শিপলুু।

মামলায় চেয়ারম্যান এহসানউদ্দিন অভিযোগ করেন, ৩৩ লাখ টাকা আত্মসাতের ঘটনায় বরখাস্ত সরকারি কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইউসুফ বন্দর ইউনিয়নের সচিব থাকাবস্থায় জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন সনদ জাল করে তৈরি করতেন এবং সেসব টাকা আত্মসাৎ করেছেন। নিবন্ধনের সরকারি ফি ব্যাংকে জমা না দিয়ে নিজেই আত্মসাৎ করতেন এবং এ বিষয়ে ২০১৮ সালের ৬ মার্চ তৎকালীন সময়ের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসকের কাছে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুলিপি প্রদান করেছিলেন চেয়ারম্যান এহসান উদ্দিন। এরপর একই বছরের ৯ এপ্রিল ইউপি সচিবের বেআইনি কার্যকলাপের বিভিন্ন তথ্য সম্বলিত একটি চিঠি জেলা প্রশাসকের বরাবর প্রেরণ করা হয়।

বন্দর ইউনিয়নের এই চেয়ারম্যানের অভিযোগ, সাবেক সচিব ইউসুফ ৬ জন গ্রাম পুলিশের বেতন জালিয়াতি করে নিজে আত্মসাৎ করেছিলেন। এ ব্যাপারে ২০১৮ সালের ২২ মার্চ গ্রাম পুলিশের সদস্যরা ইউসুফের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছিলেন। ইউসুফ বদলী হয়ে যাওয়ার কাউকে দায়িত্ব না বুঝিয়ে দিয়েই চলে যান। টাকার হিসাব না বুঝিয়ে দেওয়াতে বন্দর থানায় জিডি করা হয়।

এদিকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৫-১৬ ও ২০১৬-১৭ এই দুই অর্থ বছরের জন্ম নিবন্ধন ও ২০১৭ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত ছয় মাসের ট্রেড লাইসেন্স খাতে আদায়কৃত অর্থ আত্মসাত করেছেন সচিব (বরখাস্ত) মোহাম্মদ ইউসুফ। এই দুই খাতে মোট ৩৩ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এতে বন্দর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এহসান উদ্দিন আহম্মেদের উপরও দায় চাপানো হয়।

এদিকে স্থানীয় ইউনিয়নবাসী বলছেন- দুই মেয়াদে এহসান উদ্দিন চেয়ারম্যান বন্দর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে তেমন কোন অভিযোগ ওঠেনি। সফলতার জেরেই দ্বিতীয়বার তিনি আবারো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। চেয়ারম্যান হওয়ার আগেই তিনি ধনী এবং ব্যবসায়ী। একজন ক্লিন ইমেজের ব্যক্তি হিসেবেই ইউনিয়নের জনগণ তাকে নির্বাচিত করেছেন। সরাসরি তিনি কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে রাজনীতিও করেন না। যে কারনে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ ওঠলে সেটা স্থানীয়বাসী বিশ্বাস করছেন না। তাই ইউনিয়নের জনগণও চান এ বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিষয়টির সূরাহ করা হোক এবং দুর্নীতিবাজ বরখাস্ত সচিবের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।