সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিইডি) মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম বলেছেন, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বপ্ন দেখেছেন একটি সুখি সমৃদ্ধ দেশ গড়ার। এজন্য তিনি সারাজীবন লড়াই সংগ্রাম করে গেছেন। বঙ্গবন্ধু জীবদ্দসায় অল্প সময়ের কারণে পারেননি, অনেক কিছু করতে। এক সময় এ দেশকে অসম্ভব দারিদ্র দেশ হিসেবে মনে করত। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দেশকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিনত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। এ উন্নয়ন যাত্রা কেউ ধাবিয়ে রাখতে পারবে না।’
৬ জানুয়ারি দুপুরে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার মুড়াপাড়ার দড়িকান্দি এলাকায় নবনির্মিত বীরপ্রতীক গাজী সেতু পরিদর্শন শেষে স্থানীয়দের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এলজিইডি মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম এসব কথা বলেন।
এলজিইডি মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম আরো বলেন, ‘যোগাযেগ ব্যবস্থা, বিদ্যুৎ, শিল্পায়ন, শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য খ্যাতে, খাদ্যসহ বিভিন্ন খ্যাতে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। কৃষি ও শিল্পের উন্নয়ন ঘটাতে বিদ্যুতের উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে। যদি শিল্পায়ন বৃদ্ধি না করা যায় তাহলে দারিদ্র বিমোচন করা যাবে না। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের নেতৃত্ব দেয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে।’
এলজিইডি মন্ত্রী বলেন, ‘স্থানীয় সরকারের প্রতিটি উন্নয়ন কাজ পরিদর্শন করে থাকি। এতে কোন রকম অনিয়ম হলে ব্যবস্থাও নেই।’
সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে যোগ দেন, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, ‘বিশ্বব্যাংকের পরিকল্পনানুযায়ী ঢাকাকে পূর্ব দিকে বাড়াতে হবে। সে লক্ষ্যে রূপগঞ্জ ঢাকার পূর্ব দিকে অবস্থান করায় এ অঞ্চলে আরো উন্নয়ন দরকার।’
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী আরো বলেন, ‘২০৪১ সালে উন্নত বিশ্বে যেতে হলে যোগাযোগ ব্যবস্থার আরো উন্নয়ন করতে হবে। এই যে দেশে ছোট বড় সড়ক হচ্ছে, সেতু হচ্ছে, এটা উন্নত বিশ্বে যাওয়ার পথকে সুগম করবে।’
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী বলেন, ‘বীরপ্রতীক গাজী সেতুর কারণে বদলে যাবে পুরো রূপগঞ্জের চিত্র। এছাড়া ব্যবসা, বাণিজ্য, শিল্প-কারখানার মালামাল পরিবহনে সময় ও ব্যয় দুটোই কমে আসবে। ঢাকা থেকে সিলেট এবং চট্টগ্রাম যাওয়ার জন্য কয়েকটি জেলার যাত্রীরা মুড়াপাড়া ও রূপগঞ্জ সদর এলাকার শীতলক্ষ্যা নদীর উপর দিয়ে চলাচল করা ফেরি ব্যবহার করেন। ফলে এই পথে যানজটের কবলে পড়তে হয় তাদের। বীরপ্রতীক গাজী সেতু সেই সমস্যার সমাধান করবে।
এছাড়া সেতুটি নির্মাণের ফলে সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কিশোরগঞ্জ ও নরসিংদী জেলার দূরত্ব ঢাকার সঙ্গে ১০ কিলোমিটার কমবে। একইসঙ্গে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও পূর্বাচল উপ-শহরের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হবে। এতে করে ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের উপর চাপ কমবে এবং এলাকার আর্থ সামাজিক অবস্থার উন্নতি ঘটবে। এমনকি রাজধানীর সঙ্গে রূপগঞ্জের দূরত্ব কমে যাবার কারণে নতুন নতুন শিল্পকারখানা গড়ে উঠবে বলেও আশা করা হচ্ছে।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু, স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের সচিব মোহাম্মদ হেলালুদ্দিন, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী সুশংকর চন্দ্র আচার্য, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মমতাজ বেগম, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দা ফেরদৌসী আলম নীলা, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তরিকুল ইসলাম, মুড়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদ আলমাছ, আওয়ামীলীগ নেতা আনছার আলী, কায়েতপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মোহাম্মদ জাহেদ আলী, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি কামরুল হাসান তুহিন, সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান শাহিন প্রমূখ।
এর আগে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ইছাপুরা এলাকায় নির্মাণাধীন বালু সেতু পরিদর্শন করেন- স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিইডি) মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম।
পরে মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক রূপগঞ্জের খাদুন এলাকায় তারাবো পৌরসভা কার্যালয় পরিদর্শন করেন। এ সময় রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী মহিলা লীগের সভাপতি ও তারাবো পৌরসভার মেয়র হাসিনা গাজী এই দুই মন্ত্রীকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।
পরে তারাবো পৌরসভার বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ড ঘুরে দেখেন এলজিইডি মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী।