সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নাশকতার মামলায় ফেঁসে গেলেন নারায়ণগঞ্জ বিএনপির ৩৮ জন নেতাকর্মী। কিন্তু এই মামলায় নির্দেশদাতা হুকুমের আসামি হয়েছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য শিল্পপতি মুহাম্মদ শাহআলম। আর মামলা থেকে চার্জশিট দেয়ার সময় পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তা তার অব্যাহতি চেয়ে চার্জশিটে লিখেছেন, আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় তাকে অত্র মামলার দায় হতে অব্যাহতি প্রদানের আবেদন জানাইলাম।’ ৫ ফেব্রুয়ারি বুধবার নারায়ণগঞ্জের একটি আদালত চার্জশিট গ্রহণ করেন। ফলে মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়ে গেলেন শিল্পপতি মুহাম্মদ শাহআলম।
তবে এই মামলায় জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমান খোকা ও শাহআলমের পিএস বোরহান উদ্দীন বেপারী সহ ৯জনকে দেখানো হয়েছে পলাতক। অথচ তারা নিয়মিত রাজনৈতিক কর্মকান্ডে সক্রিয়। বিশেষ কৌশলে একের পর এক মামলা থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন শিল্পপতি মুহাম্মদ শাহআলম। তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতির পদ ছেড়ে দিলেও কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য পদে বহাল রয়েছেন। কৌশলে নিজেকে দল থেকে আড়ালে রেখে মামলা থেকে অব্যাহতি পেতে বিশেষ সুবিধায় ম্যানেজ প্রক্রিয়াতে তিনি কাজ করছেন। ফলে নেতাকর্মীরা ফেঁসে গেলেও তাদের উদ্ধার না করে নিজে মামলা থেকে অব্যাহতি আদায়ে কাজ করছেন বলেও নেতাকর্মীদের অভিযোগ।
ঘটনা সূত্রে জানাগেছে, ২০১৮ সালে ২৫ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার দেলপাড়া এলাকায় ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মশিউর রহমান রনিকে গ্রেপ্তার ও তার মুক্তির দাবিতে এই কর্মসূচি পালন করতে গেলে ঘটনাস্থল থেকে ছাত্রদলের ৬ জন নেতাকর্মীকে আটক করে পুলিশ।
ওই ঘটনায় আটককৃত ৬ জন সহ ৩৭ জন বিএনপির নেতাকর্মীদের নাম উল্ল্যেখ করে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা দায়ের করেন ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের এসআই এনামুল হক। মামলায় উল্লেখ করা হয়- মুহাম্মদ শাহআলম বিদেশে থেকে তার পরিকল্পনা মত ফতুল্লা থানা বিএনপির বর্তমান আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ বিশ^াসের নির্দেশে ওই নাশকতা ঘটানো হয়। মামলায় আজাদ বিশ^াস ছাড়াও একরামুল কবির মামুন, স্বপন চৌধুরী, বোরহান উদ্দীন বেপারী, গিয়াসউদ্দীন লাভলু, লুৎফর রহমান খোকা, খন্দকার হুমায়ুন সহ ৩৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। মামলায় শিল্পপতি মুহাম্মদ শাহআলমকে ৭নং আসামি করা হয়।
এ মামলায় গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আজিজুল হক আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। চার্জশিটে শিল্পপতি মুহাম্মদ শাহআলম সহ দুজনকে অব্যাহতির আবেদন করা হয়। সেই সঙ্গে ৯ জনকে পলাতক দেখানো হয়। মামলায় ৩৮ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। যা ৫ ফেব্রুয়ারি বুধবার নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালত চার্জশিট গ্রহণ করেন। ফলে মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন শাহআলম।
মামলায় জেলা বিএনপির নেতা লুৎফর রহমান খোকা, খন্দকার হুমায়ুন, বোরহান উদ্দীন বেপারী, গিয়াসউদ্দীন আহমেদ লাভলু ও সাগর সিদ্দিকী সহ ৯ জনকে পলাতক দেখানো হয়।