সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জের বহু বিতর্কিত ভূমিদস্যূ সহ নানান অভিযোগে অভিযুক্ত জয়নাল আবেদীন ওরফে আল জয়নালের বিরুদ্ধে চেক জালিয়াতি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়না জারি করেছেন আদালত।
১৩ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার সকালে অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম মাসুম নামের এক আইনজীবীর দায়েরকৃত মামলায় নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল মোহসীনের আদালত এ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
এর আগে গত মাসের ২১জানুয়ারি সকালে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল মোহসীনের আদালতে এ মামলাটি দায়ের করে তিনি। আদালত বাদীর অভিযোগ আমলে নিয়ে ১৩ ফেব্রুয়ারি শুনানি ধার্য করেন।
মামলার বাদী অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম মাসুম জানান, চেক জালিয়াতি মামলায় আল জয়নালের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। আজকে আসামির আদালতে হাজির হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিনি হাজির না হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে সময়ের আবেদন করলে আদালত তা নামঞ্জুর করে আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
তিনি আরোও অভিযোগ করে বলেন, আল জয়নালের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়ায় আসামির আইনজীবী নুরুন্নাহার মায়া আপা আমাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন এবং আমার বিরুদ্ধে একাধিক হয়রানিমূলক মামলা দায়ের হয়রানি করবেন বলেও হুমকি দেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, আইনজীবী নজরুল ইসলাম মাসুম জমি বিক্রি বাবদ আল জয়নালের কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা পেতেন। এর বিপরীতে মাসুমকে সমপরিমান টাকার একটি চেক দেন জয়নাল আবেদীন। পূবালী ব্যাংকের নারায়ণগঞ্জ শাখায় চেকটি নিয়ে গেলে একাউন্টে অপর্যাপ্ত টাকা দেখায়। পরে বিষয়টি জয়নাল আবেদীনের কাছে জানালে কোনো টাকা দিবে না বলে জানায় সে। টাকা চাইলে প্রাণনাশের হুমকিও দেয়। তারপরে নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে আদালতে মামলাটি দায়ের করেন।
তবে, নজরুল ইসলাম মাসুমের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত আল জয়নাল। তিনি দাবি করেন, চেকটি পাঁচ থেকে সাত বছর আগের। এই চেকের টাকা সে হাতে হাতে নিয়েও গেছে। বর্তমানে আমি তার কাছ থেকে উল্টো ১৬ লাখ টাকা পাওনা আছি। এই টাকা চাওয়ার কারণে পুরণো চেক দিয়ে এই মিথ্যা মামলা সে করেছে।
এর আগে গেল বছরের ২৮ ডিসেম্বর জুবায়ের নামে এক ব্যক্তির দায়ের করা একটি চাঁদাবাজির মামলায় শহরের টানবাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন আল জয়নাল। সদর মডেল থানা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছিল।
এছাড়াও একই বছরের ২৪ এপ্রিল স্বর্ণ ব্যবসায়ী ফারুকের কাছে ২২ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে দায়ের করা মামলায় আল জয়নালকে গ্রেপ্তার করেছিল সদর মডেল থানা পুলিশ ।
এর আগে ২০১৮ সালের ২৪ ডিসেম্বর থানায় ঢুকে পুলিশকে গুলি করার অভিযোগ ছিল আল জয়নালের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় তাকে আটক করলেও আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের দেনদরবারে পরদিন ২৫ ডিসেম্বর তাকে থানা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এছাড়াও নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি হাসান ফেরদৌস জুয়েলের দায়ের করা একটি মামলায় ২০১৫ সালের ৫ মার্চ জয়নালের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
অপরদিকে ২০১৩ সালের ১১ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জে জামায়াত ও শিবিরকে পৃষ্ঠপোষকাতর অভিযোগে সদর মডেল থানায় জয়নালের বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছিল এবং ২০১২ সালের ১ নভেম্বর জয়নালের বিরুদ্ধে তৎকালিন সদর মডেল থানার ওসি মঞ্জুর কাদের একটি জিডি করেছিলেন।