সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
দীর্ঘদিন যাবত নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর থানাধীন সিটি কর্পোরেশনের বাহিরের ৫টি ইউনিয়ন এলাকা নিয়ন্ত্রন করে আসছিল মহানগর যুবদল। ওই ৫টি ইউনিয়ন এলাকা নিয়ে বন্দর উপজেলা যুবদল নামের কমিটিও রয়েছে যা মহানগর যুবদলের নিয়ন্ত্রনাধীন। কিন্তু সেখানে পরবর্তীতে কমিটি গঠন করতে গেলে বাধার মুখে পড়ে মহানগর যুবদল। তবে মহানগর যুবদল না পাড়লেও সেই ৫টি ইউনিয়ন এলাকা নিয়ন্ত্রনে নিয়েছে মহানগর ছাত্রদল।
এর কারন হিসেবে স্থানীয় নেতাকর্মীরা বলছেন- মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি সাহেদ আহমেদ ও সেক্রেটারি মমিনুর রহমান বাবুর মাঝে জটিল ঐক্য রয়েছে। দুজনে যেকোন সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন। এখনও পর্যন্ত সভাপতি ও সেক্রেটারির মধ্যে কোন ফাটল দেখা যায়নি। তবে একইভাবে মহানগর যুবদলের সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ ও সেক্রেটারি মমতাজ উদ্দীন মন্তুর মাঝে ঐক্য থাকলেও তারা বন্দরে কমিটি ঘোষণা করলেও কেন্দ্রীয় যুবদলের নির্দেশে সেই কমিটি স্থগিত করা হয়।
এর কারন হিসেবে নেতাকর্মীরা বলছেন- মহানগর যুবদলের সভাপতি ও সেক্রেটারির সঙ্গে দূরুত্ব রয়েছে সিনিয়র সহ-সভাপতি মনোয়ার হোসেন শোখন ও সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাগর প্রধানের। শোখন নীরব থাকলেও সাগর প্রধান নিয়মিত মহানগর যুবদলের ব্যানারে মহানগর যুবদলের নেতাকর্মীদের নিয়ে রাজপথে সচল রয়েছেন। তিনি সভাপতি ও সেক্রেটারির বিকল্প পাল্টা বলয় তৈরি করেছেন। আর এই বিরোধের কারনেই বন্দরে উপজেলা যুবদলের কমিটি ঘোষণা করেও তার স্থায়ীত্ব দিতে পারেননি খোরশেদ ও মন্তু। কিন্তু মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি সাহেদ ও মমিনুর রহমান বাবুর বলিষ্ঠ নেতৃত্বের ঐক্যের কারনে তারা ৫টি ইউনিয়ন নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন। একইভাবে মহানগর ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি রাফিউদ্দীন রিয়াদ সহ বেশকজন যুগ্ম সম্পাদকের সঙ্গে সাহেদ ও বাবুর সঙ্গে দূরত্ব রয়েছে। সেক্ষেত্রে তারা সাহেদ ও বাবুর সঙ্গে পেড়ে ওঠতে পারেনি। যা মহানগর যুবদলে খোরশেদ ও মন্তুকে বেশ বেকায়দায় ফেলেছেন সাগর প্রধান।
জানাগেছে, গত ১০ ফেব্রুয়ারি সোমবার কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ-দপ্তর সম্পাদক আজিজুল হক মোল্লা মহানগর ছাত্রদলকে এক চিঠির মাধ্যমে জানান, নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের সাংগঠনিক কাজে গতিশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ছাত্রদল নারায়ণগঞ্জ জেলার অধীন বন্দর থানার ধামগড়, মদনপুর, মুসাপুর, কলাগাছিয়া ও বন্দর ইউনিয়ন ইউনিট সমূহ মহানগর ছাত্রদলের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।
১০ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন ও সেক্রেটারি ইকবাল হোসেন শ্যামল এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানানো হয় এবং এদিন থেকেই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি সাহেদ আহমেদ বলেন, ছাত্রদল স্বতন্ত্র সংগঠন। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নির্দেশ মেনে আন্দোলন সংগ্রাম এবং সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করবো।
অন্যদিকে গত বছরের ৩১ মার্চ নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় যুবদল। যা ৫ এপ্রিল শুক্রবার মিডিয়াতে প্রকাশ করা হয়েছিল। এর পরদিন ৬ এপ্রিল বন্দরে উপজেলা যুবদলের বর্তমান কমিটি বাতিল করে একই মুহুর্তে উপজেলা যুবদলের ১৯ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেছিলেন মহানগর যুবদলের সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ ও সেক্রোরি মমতাজ উদ্দীন মন্তু। এই কমিটি গঠনের মাত্র ১২ ঘন্টার মধ্যেই কেন্দ্রীয় যুবদল তার সকল কার্যক্রম স্থগিত করে দেয়।
ওই সময় বন্দর উপজেলা যুবদলের কমিটির কার্যক্রম স্থগিতের বিষয়ে কেন্দ্রীয় যুবদলের দপ্তর বিষয়ক সম্পাদক কামরুজ্জামান দুলাল জানিয়েছিলেন, বন্দর উপজেলা যুবদলের কমিটি আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় যুবদলের সভাপতি ও সেক্রেটারির নির্দেশ এই কমিটির কার্যক্রম স্থগিত রাখা। এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের যুবদলের নেতাদের জানানো হয়েছে।’ তিনি আরও বলেছিলেন, এখন কাগজের মাধ্যমে এভাবে কমিটি হবেনা। সকল কমিটি এখন সম্মেলনের মাধ্যমে গঠন করা হবে।’
বন্দর উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন জেলা নাকি মহানগর কমিটির আওতাধীন থাকবে জানতে চাইলে তিনি ওই সময় বলেছিলেন, এ বিষয়ে আমরা পরে সিদ্ধান্ত জানাবো। আপাতত আমরা এ বিষয়ে কিছু বলছিনা। মহানগর যুবদল বন্দরে যে কমিটি গঠন করেছে সেটা আমরা স্থগিত করেছি।’
বন্দরের যুবদল নেতা নজরুল ইসলামকে আহ্বায়ক ও শাহাদুল্লাহ মুকুলকে সদস্য সচিব করে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ ও সেক্রেটারি মমতাজ উদ্দীন মন্তু ১৯ সদস্য বিশিষ্ট একটি আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন দিয়েছিলেন। বন্দর উপজেলা যুবদলের বর্তমান কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে ৯০ দিনের জন্য এই ১৯ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি অনুমোদন করেছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদল।
কমিটিতে যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে পারভেজ খান ও সদস্য হিসেবে মনিরুল ইসলাম মনু, মোঃ রুবেল মিয়া, বাবুল হোসেন মেম্বার, আবদুস সাত্তার, মোঃ মামুন ভূইয়া, মোঃ জাহিদ খন্দকার, আল-মামুন প্রধান, মোঃ নুর হোসেন, গোলজার হোসেন ভূইয়া, মোঃ আসাবুদ্দিন, মোঃ শিপন মাহমুদ, মোঃ বর জাহান, সেলিম খন্দকার, কামরুল ইসলাম, জাহিরুল খন্দকার জনি, স¤্রাট হাসান সুজনকে রাখা হয়েছিল।