সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী এমপি একেএম শামীম ওসমানের অস্ত্র বিষয়ক বক্তব্য নিয়ে রীতিমত তোলপাড় শুরু হয়েছে জেলার মিডিয়া জুড়ে। তবে শামীম ওসমান তার বক্তব্যের একদিন পর সেটার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন। মুলত শামীম ওসমান ৯০দশকে অস্ত্রের রাজনৈতিক পরিস্থিতি তুলে ধরতে গিয়ে ছিলেন, ‘ওই সময় পুলিশের কাছে যত অস্ত্র ছিল, তারচেয়ে বেশি আমার কাছেই ছিল। আজকে আমার গাড়িতে অস্ত্র (লাইসেন্সকৃত) আছে কিনা আমি জানিনা।’
শামীম ওসমানের এমন বক্তব্যের জেরে সেই সময়কার পরিস্থিতি তুলে ধরেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুকুল ইসলাম রাজীব।
মাসুকুল ইসলাম রাজীব তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ৯০ দশকের রাজনীতি তুলে ধরেছেন।
তিনি লিখেছেন, গত কয়েকদিন ধরেই মাননীয় এক সংসদ সদস্যের অস্ত্র নিয়ে একটি বক্তব্য বেশ আলোচিত সমালোচিত হচ্ছে। উনি বলেছিলেন উনার কাছে যতোগুলো অস্ত্র ছিল পুলিশের কাছেও ছিলনা। তারপর উনি সেগুলো ২০০১ সালের পরে সংশোধন করে বলেছেন ৯১ সালে সে সময়ের পুলিশ সুপারের কাছে জমা দিয়েছেন। আজ এক সংবাদমাধ্যমে দেখলাম উনি অস্ত্র ভান্ডার বলতে বিশাল কর্মী বাহিনীকে বুঝিয়েছেন তাহলে ঐ সময়ে কি জমা দিয়েছিলেন অস্ত্র না কর্মীবাহিনী?
রাজীব আরও লিখেন, আসলে সত্য অনেক সময় নিজের অজান্তেই বের হয়ে যায়। কারন সত্য যতই নির্মম হউক না কেন সেটা সবসময়ই সুন্দর। আমার মতে উনি ঐ অনুষ্ঠানে যে বক্তব্য দিয়েছেন এবং ২০০১ সাল উল্লেখ করেছেন পুরোটাই সত্যি। কারন ২০০১ সালের পর অস্ত্রের রাজনীতি করার আর সুযোগ ছিলনা। এটা অস্বীকার করার কোন সুযোগ নেই যে একসময় নারায়ণগঞ্জ সহ সারাদেশেই অস্ত্রের রাজনীতির রেওয়াজ ছিল।
সেই সময়কার রাজনীতি তুলে ধরে রাজীব লিখেন, আমি নিজে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলাম ১৯৯৯ সালে। তখন মিনিমাম ৩০/৪০ জন অস্ত্রধারী আমাকে ঘিরে গুলি করেছিল। ৯১, ৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত আতংকের নগরী ছিল নারায়ণগঞ্জ। এ অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে দেশনেত্রীর ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসার পর। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষে দলমত নির্বিশেষে অস্ত্রের রাজনীতি বন্ধের জন্য উনি ছিলেন কঠোর এবং বদ্ধপরিকর। পরবর্তীতে পুরোপুরি নির্মুল করেছিলেন যার ধারাবাহিকতা আজো অনেকাংশে বিদ্যমান।
‘মানুষ এবং তার মানুষিকতা পরিবর্তনশীল। ৯৬ থেকে ২০০১ এই সাংসদের শাসনামলের সাথে যদি ২০০৮ থেকে অদ্যবধি শাসনামলের বা বিরোধী দলের নেতা কর্মীদের প্রতি আচরনের তুলনা করা হয় (পুলিশ ব্যতিত) তাহলে আমার দৃষ্টিতে সেটা আকাশ পাতালের মত পার্থক্য মনে হবে।’
‘২০০৮ এর পর আজ অবধি উনার বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের প্রতি আচরণ ছিল সৌহার্দ্যপূর্ন হয়তো আল্লাহর উপর অবিচল আস্থা বিশ্বাস বেড়ে যাওয়ার কারনে। তাই সত্য স্বীকার করা এবং বলার সাহস সব রাজনীতিবিদের মাঝে তৈরী হউক এটাই প্রত্যাশা। সবশেষে সত্য স্বীকার করা আর এখন আল্লাহর উপর অনেক আস্থা রাখেন এই কথা বলার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।’