সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভীর নানা কর্মকান্ডের কঠোর সমালোচনা করেছেন এমপি শামীম ওসমান। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র আইভীকে ইঙ্গিত করে শামীম ওসমান বলেন, মানুষ সবচাইতে বেশি চায় সুশাসন। দরজা খুলে শান্তিতে মানুষ ঘুমাতে চায়। মানুষ ট্যাক্স দিবে কিন্তু ময়লার মধ্যে থাকবে, কেন? মানুষ ট্যাক্স দিবে কিন্তু মশার জন্য জানালা খুলতে পারবেনা, কেন? মানুষ ট্যাক্স দিবে, কিন্তু আপনি সরকারি জায়গা দখল করে ফেলবেন, কেন? যে রহমতুল্লাহ ইন্সটিটিউটের সাথে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত আছে, বঙ্গবন্ধু একবার না সেখানে শতবার এসেছেন, আপনি সেটি ভেঙে দিয়েছেন। জায়গাটি আপনার নয়, জেলা প্রশাসকের। জেলা প্রশাসকও যদি সেখানে সফল না হয় তবে মানুষ কার কাছে যাবে সেই প্রশ্নটা জাগতে পারে। রেলওয়ে মন্ত্রী এসে রেলওয়ের জায়গা উদ্ধার করছেন, গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এসে গণপূর্তের জায়গা উদ্ধার করছেন! এটা হতে পারে না, এটা চলা উচিত না।
এর আগে সিটি কর্পোরেশনের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ ও ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডে বর্জ্য ফেলা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে এমপি শামীম ওসমান বলেছেন, লিংকরোডের পাশে সিটি করপোরেশনের এলাকায় ময়লা ফেলা হয়, এরমধ্যে আবার আগুন দেয়া হয়। এগুলো থেকে যে ধোঁয়া তৈরি হয় আশপাশের বাড়িঘরে মানুষের মধ্যে করোনা ভাইরাসের চেয়ে বড় ভাইরাস নিঃশ্বাসের সাথে শরীরের ভেতরে যাচ্ছে। এ বিষয়টি কিভাবে সমাধান করা যায় এটি দেখতে হবে। এ বিষয়ে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে নাসিক সিও আবুল আমিনকে অনুরোধ করেন শামীম ওসমান। এ ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তরেরও ব্যবস্থা নেয়া উচিত, দরকার হলে মামলা করুক।
১২ মার্চ বৃহস্পতিবার সকালে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে মুজিববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে ‘পরিছন্ন গ্রাম-পরিছন্ন শহর’ কর্মসূচি আওতায় দেশব্যাপী পরিছন্নতা কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
বঙ্গবন্ধু সড়কে হকার সমস্যা নিয়ে মেয়র আইভীকে শামীম ওসমান আরও বলেন, গরীব মানুষের কর্মসংস্থান করবো, নাকি নিয়ম-অনিয়মের অভিযোগে গরীব মানুষের পেটে লাথি মারবো। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে আমরা মশক নিধন করবো নাকি গরীব নিধন করবো! এ বিষয়গুলো দেখা দরকার। কয়েকদিন পরপর হকার নিয়ে কথা ওঠে। প্রধানমন্ত্রীর বরাত দিয়ে শামীম ওসমান বলেন, আমার কথা হচ্ছে, মাথার উপর ঠাঁই দেয়া এবং মানুষের কাজের সন্ধান করে দেয়া। আগে প্রশাসন ছিলো রাষ্ট্রের কর্মচারী কিন্তু এখন তারা কর্মচারী নয়, তারা সেবক। আমরাও মানুষের সেবক। কোন পার্থক্য নাই।
নারায়ণগঞ্জের পত্রিকার সমালোচনা করে শামীম ওসমান বলেন, পত্রিকাগুলো নিয়মকানুন মানছে না। একেকদিন একেকজনের চরিত্র হনন করছে। কোন সময় প্রশাসনের চরিত্র হনন করা হচ্ছে, কোন সময় ইউএনও চরিত্র হনন করা হচ্ছে, কোন সময় একজন রাজনীতিবিদদের চরিত্র হনন করা হচ্ছে। এগুলোর পেছনে কারা অর্থায়ন করছে সেটা আমরা জানি। সরকার যখন এদিক-ওদিক হয় তখন এগুলোকে এজেন্ট হিসেবে কাজে লাগানো হয়। আমার মনে হয়, এবিষয়গুলো দেখা উচিৎ।
শামীম ওসমান বলেন, ময়লা শহর, যানজটের শহর বলে নতুন প্রজন্ম। গাড়ি চলে তবে বেশিরভাগগুলোর রুট পারমিট নেই। ডিএনডি প্রজেক্ট হলে গুলশান-বনানীর চেয়ে নারায়ণগঞ্জে জায়গার দাম বাড়বে। নারায়ণগঞ্জ শহর আমার-আপনার সকলের শহর। রাস্তা ভালো থাকলে সবাই উপকার পাবে। হকার বসলে গরীব মানুষ ভাত খেতে পারবে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন নারায়ণগঞ্জ- ৫ আসনের সংসদ সংসদ একেএম সেলিম ওসমান, নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সংসদ নজরুল ইসলাম বাবু, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম, সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইমতিয়াজ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মুহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ, নাসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো.আবুল আমিন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ মোহাম্মদ বাদল, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার অ্যাডভোকেট নুরুল হুদা, নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রিজের সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজল, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদা বারিক, সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম, আড়াইহাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহেল হোসেন, আড়াইহাজার পৌর মেয়র সুন্দর আলী, কাঞ্চন পৌর মেয়র রফিকুল ইসলাম, রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাহজাহান ভূঁইয়া, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাস, আড়াইহাজার উপজেলা চেয়াররম্যান মুজাহিদুর রহমান হেলো সরকার প্রমূখ।