সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
মহামারি করোনাভাইরাসে লকডাউনেও নিজেদের ঝুঁকি নিয়ে নারায়ণগঞ্জের আইনজীবীদের সেবায় কাজ করছেন সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ মোহসীন মিয়া ও সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমানের নেতৃত্বে সমিতির কার্যকরী পরিষদ। করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারনে দেশের সকল মানুষের আয়ের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। এতে সংকটে পড়েছেন বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। তেমনি নারায়ণগঞ্জের অনেক আইনজীবীদের সমস্যার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে আইনজীবীদের আর্থিক সহায়তা শর্তসাপেক্ষে প্রদান করছে সমিতির কার্যকরী পরিষদ। এতে সমিতির আইনজীবীদের বাহবা পাচ্ছেন সভাপতি ও সেক্রেটারি।
১৫ এপ্রিল বুধবার সকাল থেকে আইনজীবীদের চাহিদাপত্র জমা নিয়ে আইনজীবীদের আর্থিক সহায়তা প্রদানে কাজ করছেন সেক্রেটারি মাহবুবুর রহমান। তার সঙ্গে ছিলেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বরুণ চন্দ্র দে, লাইব্রেরী সম্পাদক মাহমুদুল হক মমিন, কার্যকরী পরিষদ সদস্য দেলোয়ার হোসেন সুজন প্রধান সহ কার্যকরী কমিটির অন্যরা। বুধবার করোনাভাইরাসের ঝুঁকি নিয়ে নারায়ণগঞ্জ শহরে যুগ্ম সম্পাদকের চেম্বারে বসে কাজ করেন এবং আইনজীবীদের আর্থিক (ঋণ) সহায়তা প্রদান করেন। এর আগের দিন সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ মোহসীন মিয়া নিজে আইনজীবীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজ খরব নেন এবং তাদের চাহিদাপত্রের মাধ্যমে ঋণ প্রদান করেন। প্রায় দুই শতাধিক আইনজীবীকে ইতিমধ্যে এই ক্ষুদ্র ঋণ প্রদান করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সেক্রেটারি মাহবুবুর রহমান।
আইনজীবী সমিতির দাবি- বিশ্বব্যাপী মহামারি রূপ নেয়া করোনা ভাইরাসের প্রকোপে বাংলাদেশেও আতঙ্ক ছড়িয়ে পরছে সর্বত্র। স্কুল কলেজ বন্ধ হয়ে গেছে অনেক আগেই, ঘোষণা করা হয়েছে সাধারণ ছুটি। ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছিল সরকার, সেই ছুটি বাড়ানো হয়েছে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত। সেই সাথে দেশের সকল মার্কেট, সুপার মার্কেট ও দোকানপাট বন্ধ ঘোষণা করেছে দোকান মালিক সমিতি, বন্ধ রয়েছে গণপরিবহনও। শুধুমাত্র নিত্যপণ্যের দোকান ও ওষুধের দোকান ছাড়া বাকী সব বন্ধ থাকবে।
করোনা ভাইরাসের রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত নারায়ণগঞ্জের পরিস্থিতি রীতিমত ভয়াবহ। গত প্রায় এক সপ্তাহ যাবত পুরোপুরি লকডাউন চলছে নারায়ণগঞ্জে। গত ২৬ মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে দেশের সকল আদালত। এতোটা সময় কর্মহীন থাকেননি নারায়ণগঞ্জ আদালতপাড়ার আইনজীবীরা।
এ কারনে অনেক তরুণ আইনজীবীর জীবনযাপণে সাময়িক সমস্যা পরিলক্ষিত হওয়ায় জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ মোহসীন মিয়া সমিতির ফান্ড থেকে ১০ হাজার টাকা ঋণ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
এ লক্ষ্যে সকল আইনজীবীদের কাছে একটি ক্ষুদে বার্তা প্রেরণ করা হয়। যেখানে উল্লেখ করা হয়, করোনা ভাইরাস জনিত দূর্যোগ পরিস্থিতিতে যে সকল নিয়মিত সদস্যগণ আইনজীবী সমিতি হতে ঋণ (পরিশোধের শর্তে) গ্রহণ করতে ইচ্ছুক তাদেরকে ১২ এপ্রিল রাত ১২টার মধ্যে নিম্ন বর্নিত নম্বরে যোগাযোগ করে নাম এন্ট্রি করার জন্য অনুরোধ করা হলো। ০১৫১৫৬৫৬৮৬৮ (অ্যাডভোকেট হাছিব-উল-হাছান রনি)।
১৪ এপ্রিল মঙ্গলবার সকাল থেকে দিনভর আইনজীবীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজ খবর নিয়েছেন বার সভাপতি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ মোহসীন মিয়া এবং যারা ঋণের জন্য নাম এন্ট্রি করেছিলেন তাদের ঘরে ঘরে গিয়ে সেই টাকা পৌছে দিয়েছেন।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী সমিতির যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট বরুন চন্দ্র দে, ক্রীড়া সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহমুদুল হক মমিন, সমাজ সেবা সম্পাদক অ্যাডভোকেট হাছিব উল হাসান রনি। এ ছাড়াও সঙ্গে ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবলীগ নেতা সুমন কাজী।
এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ মোহসীন মিয়া বলেন, করোনাভাইরাস একটি বৈশ্বিক মহামারি। সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশও এই মহামারির কবলে। করোনার বিস্তার ঠেকাতে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটি চলছে। সারাদেশের মতো নারায়ণগঞ্জ আদালতের আইনজীবীগণও ছুটিতে রয়েছেন। এ সময়ে অনেক জুনিয়র আইনজীবীর আর্থিক সমস্যার সম্মুখিন হয়েছেন। তাদের সুবিধার্থে আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে ১০ হাজার ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আজ আমরা বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ঘুরে আইনজীবীগণের খোঁজ খবর নিয়েছি এবং সেই ঋণের টাকা তাদের বাড়িতে পৌছে দিয়েছি, আইনজীবী সমিতির সভাপতি হিসেবে এটা আমার দায়িত্ব। নারায়ণগঞ্জের আইনজীবীদের যে কোন প্রয়োজনে তাদের পাশে রয়েছে জেলা আইনজীবী সমিতি। সেইসাথে কুতজ্ঞতা প্রকাশ করছি আমার সাথে থাকা তিনজনের প্রতি, তারা এই দূর্যোগের সময়েও আমার সাথে থেকে আইনজীবীদের সেবায় কাজ করেছেন।
তিনি আরো বলেন, বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে সকল আইনজীবীগণকে বলবো আপনারা ঘরে থাকুন, নিজে সুস্থ্য থাকুন, অন্যকেও সুস্থ্য রাখুন। বেশী বেশী করে ইবাদত করুন, নিশ্চয়ই সুষ্টিকর্তা সকল মুসিবত থেকে আমাদের হেফাজত করবেন।