সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
বিশ্বব্যাপী মহামারি করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি পেতে নারায়ণগঞ্জের বন্দরের ৫০টি মসজিদের ইমাম ও খতিবদের নিয়ে দোয়া পালন করেছেন বন্দর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এহসান উদ্দীন আহম্মেদ। এর আগে তিনি সকলের সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বক্তব্য দেন। একই সঙ্গে তিনি মসজিদে নামাজ আদায়ের সময় দূরত্ব বজায় রাখার আহ্বান রাখেন এবং মসজিদ পরিষ্কার রাখতে জীবাণুনাশক ওষুধ ও সরঞ্জামাদি প্রদান করেন। সেই সঙ্গে উপস্থিত ইমাম ও খতিবদের সম্মানার্থে হাদিয়া প্রদান করেন চেয়ারম্যান।
এখানে উল্লেখ্যযে, এর আগে তিনি করোনা সংক্রমণ রোধে বন্দর ইউনিয়নের ২শতাধিক চায়ের দোকানদারদের নিয়ে সচেনতামুলক সভা ও তাদের মাঝে খাদ্য সামগ্রীও বিতরণ করেছিলেন। নিয়মিত তিনি করোনা ভাইরাস সংক্রম রোধে বন্দর ইউনিয়নে কাজ করে যাচ্ছেন। একই সঙ্গে তিনি নারায়ণগঞ্জ শহরে অবস্থিত একটি ক্লিনিকে করোনা রোগীদের সেবায় নিয়োজিত ডাক্তার ও নার্সদের থাকার জন্য ব্যবস্থা করেছেন বলেও ঘোষণা দিয়েছিলেন। যা সর্বমহলে ব্যাপক প্রশংসনীয় হয়।
জানাগেছে, ৮ মে শুক্রবার করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বন্দর ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে বিভিন্ন ‘মসজিদের ঈমাম, খতিব ও মুয়াজ্জিনদের করনীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। শুক্রবার সকাল ১০টায় বন্দর ইউনিয়নের বাড়ৈখালী মাদ্রাসা মাঠে এই সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বন্দর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এহসান উদ্দিন আহমেদ বিভিন্ন মসজিদের ঈমাম, খতিব ও মুয়াজ্জিনদের করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে করনীয় সম্পর্কে আলোকপাত করেন।
ইমাম, খতিব, মুয়াজ্জিন ও পঞ্চায়েত কমিটির উদ্দেশ্যে এহসান উদ্দীন চেয়ারম্যান বলেন, বন্দর ইউনিয়নের বিভিন্ন মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও পঞ্চায়েত কমিটির প্রতি আমার আহ্বান থাকবে, আপনারা নিজে প্রথমে সচেতনতা তৈরী করুন। মুসল্লীদের নামাজের পরিচ্ছন্নতা ও নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা সম্পর্কে অবগত করেন। আমেরিকায় কিন্তু যে হারে প্রথম দিকে করোনা সংক্রমনে মানুষ মারা যাচ্ছিল বাংলাদেশে একমাত্র আল্লাহর রহমত আছে বলে আমাদের তেমন বেগ পেতে হয় নাই।
তিনি আরও বলেন, ঘণবসতিপূর্ণ দেশ এই বাংলাদেশ। এখানে সংক্রমন রোধে তেমন কোন প্রতিরোধ ক্ষমতা যন্ত্রাংশ নাই। ভরসা একমাত্র আল্লাহ আর সচেতনতা। প্রশাসন এক ঠিলে অভিযান দেওয়ায় মসজিদগুলোও এখন ভীড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আপনাদের প্রতি আমার আহ্বান একটাই আপনারা দয়া করে নিয়মনীতি মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে মসজিদে সালাত আদায় করবেন। মুসল্লীদের মধ্যে সচেতনতা তৈরী করবেন।
করোনা ভাাইরাস সংক্রমণ রোধে মসজিদের ফ্লোর পরিষ্কার, জীবাণুমুক্ত করার জন্য একটি বালতি, ডিটারজেন্ট পাউডার ও সাবান সহ পরিষ্কারক সরঞ্জামাদি প্রদান করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- বাড়ৈখালী মাদ্রাসা মসজিদের পেশ ঈমাম ও খতিব মাওলানা মুফতী মামুনুর রশিদ, পূর্ব কুশিয়ারা জামে মসজিদের পেশ ঈমাম ও খতিব মুফতী বেলাল হোসেন, ওলাক আল হেরা জামে মসজিদের ঈমাম ও খতিব মাওলানা আবু সাঈদ, কুশিয়ারা বড় জামে মসজিদের পেশ ঈমাম ও খতিব নুরুল তৈহিদস বন্দর ইউনিয়নের বিভিন্ন মসজিদের ঈমাম ও মোয়াজ্জিনেরা।
এর আগে গত ৩ মে অন্যদিকে মহামারি করোনা ভাইরাসের সংক্রমন প্রতিরোধে নারায়ণগঞ্জের বন্দর ইউনিয়নের ২শতাধিক চায়ের দোকানদারদের নিয়ে করোনা সংক্রমন প্রতিরোধ বিষয়ক সচেতনতামুলক মতবিনিময় সভা করেছিলেন বন্দর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এহসান উদ্দীন আহমেদ। ওই মতবিনিময় সভা শেষে ওইসব চায়ের দোকানদারদের মাঝে খাদ্য সামগ্রীও বিতরণ করেছিলেন তিনি।
করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের পরেও বিভিন্ন এলাকার অলিগলিতে চায়ের দোকান ছিল অহরহ। এসব দোকানে জমতো আড্ডাবাজি। লকডাউন অমান্য করে অনেকেই সেখানে গিয়ে চা পান করতেন। এতে করোনা ভাইরাস সংক্রমের ঝুঁকি ছিল অনেকাংশে। এসব চায়ের দোকান ও দোকানের সামনে জমায়েতের মাধ্যমে করোনা সংক্রমন প্রতিরোধে চায়ের দোকানদারদের নিয়ে চেয়ারম্যান এহসান উদ্দীন আহম্মেদের এমন উদ্যোগ ব্যাপক প্রসংশিত হয়েছে বন্দরে।
৩ মে বিকেল বন্দর ইউনিয়নের প্রায় ২০০ চায়ের দোকান মালিকদের নিয়ে করোনা বিষয়ক এই সচেতনতামুলক সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় বন্দর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এহসান উদ্দীন আহম্মেদের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শুক্লা সরকার এবং এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ইব্রাহীম খলিল।
চায়ের দোকান মালিকদের উদ্দেশ্যে চেয়ারম্যান এহসান উদ্দীন আহম্মেদ বলেছিলেন, বর্তমানে চায়ের দোকানগুলোতেই সবচেয়ে বেশি জনসমাগম দেখা যায়। চায়ের দোকানগুলোতে যত জনসমাগম দেখা যায় তা আর অন্য কোথাও দেখা যায়না। তাই আপনাদের এ বিষয়ে সচেনত হতে হবে যাতে চায়ের দোকানে জনসমাগমের মাধ্যমে করোনা ভাইরাস সংক্রমন না ছড়ায়।
এ ছাড়াও তিনি বন্দর ইউনিয়নের মসজিদগুলোর কমিটির নেতৃবৃন্দের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, করোনা সংক্রমন রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখতে পারেন আপনারা। মসজিদে নামাজের আগে পরে ফ্লোরগুলো জীবাণুনাশক দিয়ে জীবাণুমক্ত করতে হবে। নামাজের সময় যেনো সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। সকল মুসুল্লি যেনো মাস্ক পড়ে মসজিদে প্রবেশ করে সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে।
এ ছাড়াও তিনি দাবি করেন যদি চায়ের দোকান মালিক এবং মসজিদ কমিটির নেতৃবৃন্দ সচেতন থাকেন তাহলে বন্দরে ইউনিয়নে অন্তত করোনা সংক্রম বিস্তার করতে পারবে না।