সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জে বেতন ও ঈদ বোনাসের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে একটি রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানার কয়েক শতাধিক শ্রমিক। এ সময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা সিভিল সার্জন ও সদর উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার দুটি গাড়ি ভাংচুর করেছেন। এতে আহত হন দুই গাড়ির দুই গাড়ির চালক।
১৯ মে মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার কায়েমপুর এলাকায় ‘ফকির নিটওয়্যার’ নামে পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। পরে শিল্প পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এর আগে ঘটনাস্থলে যান সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদা বারিক। তিনি হ্যান্ড মাইক নিয়ে শ্রমিকদের শান্ত করার চেষ্টা করেন।
শিল্প পুলিশ-৪ নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার সৈকত শাহীন মিডিয়াতে বলেন, ‘ফকির নিটওয়্যারে ১২’শ শ্রমিক কাজ করে। মঙ্গলবার দুপুরে মালিকপক্ষ ঘোষণা দেয় সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী মে মাসের বেতন ও ঈদ বোনাসের ৫০ ভাগ ঈদের আগে পরিশোধ করা হবে। এতে শ্রমিকেরা বিক্ষোভ শুরু করে। ওইসময় কারখানা চত্বরে থাকা সিভিল সার্জন ও সদর উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার দুটি গাড়ি শ্রমিকেরা ভাংচুর করে। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ নিয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলি। পরে মালিকপক্ষ আশ্বাস দেয় আগামীকাল মে মাসের বেতন ৫০ ভাগ ও ঈদ বোনাস ১০০ ভাগ পরিশোধ করা হবে। তখন শ্রমিকেরা শান্ত হয়ে বাসায় ফিরে যায়।’
তিনি বলেন, সিভিল সার্জন ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তার গাড়ি কেন সেখানে ছিল সেটি জানা নেই। এ বিষয়ে তারা অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে কাউকে আটক করা হয়নি।’
নারায়ণগঞ্জ সিভিল সার্জন ডা. মুহাম্মদ ইমতিয়াজ বলেন,‘ফকির নিটওয়্যার গার্মেন্টসে ৬ জন শ্রমিক কোভিড-১৯ পজেটিভ শনাক্ত হয়েছে। এ বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন কেন শ্রমিকেরা আক্রান্ত হচ্ছে এজন্য পোশাক কারখানায় সরেজমিনে গিয়ে স্বাস্থ্য সুরক্ষার ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করে রিপোর্ট দেওয়ার জন্য। সেইজন্য বেলা সাড়ে ১১টায় আমি ও সদর উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম পোশাক কারখানায় যাই। ওইসময় শ্রমিকেরা মালিকপক্ষের গাড়ি মনে করে আমাদের গাড়ি ভাঙচুর করে। এতে দুই গাড়ির চালক আহত হন। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, শ্রমিকদের হামলার কারণে কারখানা পরিদর্শন করা সম্ভব হয়নি। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ফতুল্লা থানায় মামলা দায়ের করা হবে।
ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসেন বলেন, ‘ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। গাড়ি ভাংচুরের বিষয়ে অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ফকির গার্মেন্টসের নির্বাহী পরিচালক শ্যামল জানান, একই মালিকের তিনটি প্রতিষ্ঠান ফকির গার্মেন্টস, ফকির নিটওয়্যার ও ফকির অ্যাপারেলস। তিনি বলেন, তার প্রতিষ্ঠানে এ ঘটনা ঘটেনি।
ফকির নিটওয়্যারের জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) দেবাশীষ সাহার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দেয়া হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।
সূত্র: ডেইলি স্টার