সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট এপিলেট ডিভিশনের আইনজীবী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার বলেছেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা, ভাষাসৈনিক, জাতীয় সাংবাদিক আবু নঈম মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল খাঁন লোহানী দীর্ঘদিন জাতিকে বিভিন্নভাবে সেবা দেয়ার পরও আবেদন নিবেদন করেও কাংখিত বিষেশায়িত হাসপাতল তথা সিএমএইচ হাসপাতালে আইসিইউতে একটি সীট পান নাই, যা অত্যান্ত দুঃখজনক।
কামাল লোহানী সম্পর্কে তৈমূর আলম খন্দকার স্মৃতিচারণ করে বলেন, সামাজিক অভিশাপ বিবাহে যৌতুক প্রথা বিলোপের জন্য আইন পাশের দাবীতে ১৯৭৮ সালের জানুয়ারি মাসে নারায়ণগঞ্জ থেকে আন্দোলন শুরু করি এবং প্রবীণ আইনজীবি (প্রয়াত) আমিনুল হককে সভাপতি করে “বাংলাদেশ যৌতুক প্রথা দূরীকরণ সংস্থা” নামে একটি সামাজিক সংগঠন গঠন করে আমরা দেশের বিভিন্ন জেলায় মিছিল, মিটিং, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, জাতীয় পত্রিকায় আর্টিকেল লেখা সহ প্রতি জেলায় সংস্থার শাখা কমিটি গঠন করার উদ্দেশ্যে জেলাগুলি সফর করি।
তিনি এও জানান, ১৯৭৮ সালের ডিসেম্বর মাসে অ্যাডভোকেট এবি সিদ্দিক, প্রয়াত অ্যাডভোকেট আবুল কালাম (পৌর সভার সাবেক সচিব, এম.এ. মান্নানের সহোদর) সংস্থার বৃহত্তর রাজশাহী জেলা কমিটি গঠন করার জন্য রাজশাহী শহরে গেলে প্রথম যে ব্যক্তিটি আমাদের রাজশাহীতে যৌতুক বিরোধী একটি সভা করার ব্যবস্থা করে দেন, তিনি ছিলেন প্রয়াত কামাল লোহানী। শহরের একটি পুরাতন ভবনে “দৈনিক বার্তা” অফিসে আমাদের সাথে কামাল লোহানীর প্রথম সাক্ষাৎ হয়, তখন তিনি পত্রিকাটির সম্পাদক ছিলেন। আমার মনে পড়ে সাদা পাঞ্জাবী পায়জামা পড়া ৬ ফুট লম্বা একটি লোক (কামাল লোহানী) দ্বরাজ কন্ঠে বলেছিলেন, “ভাই, আমি তোমাদের কেই খুজছি, যৌতুক একটি সামাজিক ব্যধিতে পরিনত হয়েছে, অনেক কন্যাদয় গ্রস্থ পিতা আত্মহত্যা করছে, অনেক বিবাহযোগ্য মেয়ের বিবাহ হচ্ছে না, বিবাহ হলেও যৌতুকের কারণে বিবাহ বিচ্ছেদ হচ্ছে, এ আন্দোলনে আমি তোমাদের সর্বাত্মক সহযোগীতা করব”।
তিনি আমাদের উপস্থিতিতে অনেকগুলি প্রতিনিধিত্বকারী ব্যক্তিদের ফোন করে রাজশাহী জেলা আইনজীবি সমিতির হল রুমে যৌতুক বিরোধী একটি সফল সভা করে দিলেন, নিজেও একটি চমৎকার বক্তব্য করলেন যা তৎসময়ে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে ফলাও করে প্রচারিত হয়, যা ছিল আমাদের জন্য খুবই উৎসাহ ব্যঞ্জক। সব জেলাতে না হলেও বেশ কিছু জেলায় এ ধরণের কামাল লোহানী পেয়ে ছিলাম, যা ছিল আমাদের আন্দোলনের যাত্রা পথের পাথেয়। ১৯৮০ সালে সরকার “যৌতুক প্রথা নিরোধ আইন’ ১৯৮০” পাশ করে। এই আইন পাশ হওয়ার জন্য জনমত সৃষ্টিতে আমরা যার কাছে ঋণী তাদের মধ্যে অন্যতম প্রয়াত কামাল লোহানী। পত্রিকায় দেখেছি যে, তার কন্যা সি.এম.এইচে একটি আই.সি.ইউই সীট পাওয়ার জন্য আবেদন করেও ব্যর্থ হয়েছে, যা দেশ ও জাতির জন্য অবশ্যই দুঃখ ও লজ্জাজনক। চিকিৎসার সূযোগ দেশের গোটা দেশবাসী পাচ্ছে না, আবার অনেকেই চিকিৎসা পাচ্ছে। তারপরও বলি যে, একজন মুক্তিযোদ্ধার প্রতি অবিচার করা হয়েছে। প্রয়াত কামাল লোহানীর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা সহ তৈমূর আলম খন্দকার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপনকরেন।
তৈমূর আলম খন্দকার আরো বলেন যে, প্রায় ঔষধের দোকানে বেশী মূল্যে ঔষধ বিক্রি করা হচ্ছে। কোথাও কোথাও মার্কেট অব আউট বলে মূল্য বেশী নেয়া হচ্ছে। অক্সিজেনের মূল্য বৃদ্ধির কথা তো মহামান্য হাই কোর্ট ও সরকার অবগত হয়েছেন বলে মিডিয়াতে প্রকাশ। এমনিতেই হাসপাতালে ভর্তি ও চিকিৎসা নেয়া একটি কঠিন বিষয়, অধিকন্তু বাসায় চিকিৎসা নেয়ার প্রশ্নে ঔষধের মূল্য বৃদ্ধিতে মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত ও বিত্তহীনদের জন্য চিকিৎসা নেয়া অন্তরায় হয়ে পড়েছে। এমতাবস্থায়, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে সংবাদ নিয়ে যারা করোনার দূর্ভোগে ঔষধের বেশী মূল্য গ্রহণ করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর ও সরকারের প্রতি তৈমূর আলম খন্দকার পুণরায় দাবী জানিয়েছেন। তিনি মনে করেন যে, জনস্বার্থে বিষয়টি অতীব জরুরী।