সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে মটরপার্টসের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখলে নিতে এক কর্মচারী একই প্রতিষ্ঠানের মালিক হেকমত আলীকে (৪০) হত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত কর্মচারী রফিকুল ইসলাম সবুজ নিজের বিয়ের জন্য মেয়ে দেখতে বলে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে এ হত্যাকাণ্ড ঘটায়।
২ জুলাই বৃহস্পতিবার দুপুরে এশিয়ান হাইওয়ে (বাইপাস) সড়কের পাশের উপজেলার কোশাব এলাকার একটি মাছের খামারের বন্ধ ড্রাম থেকে হেকমত আলীর লাশ উদ্ধার করা হয়। এ সময় কাঞ্চন ফায়ার সার্ভিস লাশ উদ্ধার কাজে সহযোগিতা করেন। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। নিহত হেকমত আলী উপজেলার কাঞ্চন পৌরসভার কালাদি এলাকার মৃত কদম আলীর ছেলে।
হেকমত আলীর ভাতিজা মিজান ও স্ত্রী রোকসানা বেগম জানান, হেকমত আলী মটরপার্টসের ব্যবসায়ী। ভুলতা নুরম্যানশন মার্কেটে হাসান এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে তার। ওই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কর্মচারি হিসেবে কাজ করে আসছিল রফিকুল ইসলাম সবুজ। তিনি কেরাব মোল্লা বাড়ি এলাকার ইয়াকুব মোল্লার ছেলে।
হেকমত আলীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি লাভজনক। প্রায় সময়ই কর্মচারি সবুজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটির পার্টনার দাবি করতেন। এ নিয়ে রফিকুল ইসলাম সবুজের সঙ্গে হেকমত আলীর বিরোধ ছিল।
গত ৪ এপ্রিল সকালে রফিকুল ইসলাম সবুজ নিজের বিয়ের জন্য মেয়ে দেখতে যাবার কথা বলে হেকমত আলীকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে আর বাড়ি ফিরেনি।
পরিবারের সদস্যরা আত্মীয় স্বজনসহ বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজির পর গত ১৪ এপ্রিল রফিকুল ইসলাম সবুজ, রফিকুল ইসলাম সবুজের ভাই মাহফুজুর রহমান, মামুন মিয়া ও বাবা ইয়াবুব মোল্লাকে আসামি করে হেকমত আলীর স্ত্রী রোকসানা বেগম বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় একটি অপহরণ ও গুমের অভিযোগ এনে একটি মামলা করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন ভোলাব তদন্ত কেন্দ্রের উপ-পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম। পরে রফিকুল ইসলাম সবুজকে পুলিশ গ্রেপ্তার করলেও ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি। পরে বাদীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলাটি নারায়ণগঞ্জ পিবিআইকে তদন্ত করার জন্য দায়িত্ব দেয়া হয়।
পিবিআই আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার ও আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনাটি উদঘাটিত হয়। নিহত হেকমত আলীর দুই মেয়ে ও দুই ছেলে রয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ পিবিআইয়ের এসপি এআরএম আলিফ জানান, কয়েকদিন আগে মামলাটি তদন্ত করার জন্য আমাদের দেয়া হয়। পরে পিবিআই আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার ও আসামি রফিকুল ইসলাম সবুজকে জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটিত হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে সবুজ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা শিকার করেছেন এবং এ হত্যাকাণ্ড একাই ঘটিয়েছেন বলে দাবি করেছেন। তবে এ হত্যাকাণ্ডটি একার পক্ষে সম্ভব নয় বলে পুলিশ ধারনা করছে। ঘটনার সঙ্গে আরো কেউ জড়িত থাকতে পারে এ জন্য তদন্তের মাধ্যমে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে পুলিশ।
রফিকুল ইসলাম সবুজের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী এসপি আরো জানান, শ্বাসরোধে হত্যার পর বস্তাবন্দির পর একটি ড্রামে ঢুকিয়ে ড্রামের মুখটি সিমেন্ট দিয়ে ঢালাই করে বন্ধ করে দেয়া হয়। পরে এশিয়ান হাইওয়ে (বাইপাস) সড়কের পাশের একটি মাছের খামারে ফেলে দেয়া হয়। নিখোঁজের প্রায় তিন মাস পর লাশটি উদ্ধার করা হয়।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মমতাজ বেগম ও কাঞ্চন পৌরসভার মেয়র রফিকুল ইসলাম রফিক।