সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
আগামী ১১ জুলাই প্রয়াত বিএনপি নেতা এএম বদরুজ্জামান খান খসরুর দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী। তিনি কেন্দ্রীয় বিএনপির ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক ও নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপির সভাপতি ছিলেন। একই সঙ্গে তিনি মৃত্যুকালীন সময়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি পদেও ছিলেন। প্রয়াত নেতার মৃত্যুবার্ষিকীকে সামনে রেখে আড়াইহাজার বিএনপির নেতাকর্মীরা তাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছেন। তারা মনে করছেন- আড়াইহাজার বিএনপির রাজনীতিতে খসরুর অবদান ভুলে যাওয়ার মত নয়। তিনি নেতাকর্মীদের মাঝে কৃর্তিমান। তারা বলছেন- বিএনপির নেতাকর্মীদের হৃদয়ে এখনো আছেন প্রয়াত নেতা খসরু তার করে যাওয়া কর্মের মাধ্যমে। আজীবন তিনি তার কর্মের মাধ্যমে আড়াইহাজারবাসীর বেচে থাকবেন।
প্রয়াত বিএনপি নেতা এএম বদরুজ্জামান খান খসরু’কে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের সহ-ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ শব্দর আলী বলেন, এএম বদরুজ্জামান খান খসরু এক সময়ে আড়াইহাজার উপজেলা পরিষদের সফল চেয়ারম্যান ছিলেন। ১৯৮৮ সালে বন্যার্তদের মাঝে ব্যাপক ত্রাণ বিতরণ করে তিনি আলোচনায় চলে আসেন। পরে তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির শিল্প ও কুটির শিল্প বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। মৃত্যুকালে তিনি কেন্দ্রীয় বিএনপির ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। তিনি আড়াইহাজার বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন টানা ৩০ বছর। যা ইতিহাসে বিরল। সেই সঙ্গে তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন দীর্ঘদিন। দায়িত্ব পালন করাকালে ছিল না তার কোন প্রকার অবহেলা। যার ফলস্বরুপ আড়াইহাজার বিএনপির দায়িত্ব পালন করেন তিনি টানা ৩০ বছর। আর এ দাতিত্ব পালনকালেই তিনি পাড়ি জমান আল্লাহর ডাকে ওপারে।
তিনি আরোও বলেন, মৃত্যুর পূর্বে তিনি অসংখ্য স্কুল কলেজ প্রতিষ্ঠা, দাতা সদস্য, প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এর মত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে যান নিষ্ঠার সাথে। তাছাড়া তিনি রসুলপুর দাখিল মাদ্রাসা ও এএম বদরুজ্জামান উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে আড়াইহাজারে ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করেন। কলাগাছিয়া হাই স্কুল জুনিয়র স্কুল থেকে হাই স্কুল করেন তিনি। গোলাম মোহাম্মদ উচ্চ বিদ্যালয়, দুপ্তারা হাই স্কুল, পাঁচগাও উচ্চ বিদ্যালয়, কবি নজরুল উচ্চ বিদ্যালয়, শম্ভুপুরা উচ্চ বিদ্যালয়, পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, জাঙ্গালিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, আতাদী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে কোনটায় আজীবন সদস্য দাতা আবার কোনটায় প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবে দাতিত্ব পালন করেন তিনি। মোট কথা আড়াইহাজারের প্রতিটি উন্নয়নে খসরুর অবদান রয়েছে।
তিনি আরোও বলেন, আড়াইহাজারের স্বনাম ধন্য বিদ্যাপিঠ সরকারি সফর আলী কলেজ সরকারিকরণ করেন তিনি। দেশের বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় দি পিপলস ইউনিভার্সিটির চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। তিনি বলেন, আসলে তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারও ছিল বর্ণাঢ্য। তিনি কেন্দ্রীয় যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ক্ষুদ্র শিল্প বিষয়ক সম্পাদক, পরে শিল্প বিষয়ক সম্পাদক,আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপির সভাপতি ৩০ বছর, আড়াইহাজার উপজেলার সফল চেয়ারম্যান ছিলেন। তাছাড়া তিনি নামে বেনামে বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দান করেছেন যা খসরু’র অবর্তমানে আড়াইহাজারবাসী ভোগ করছেন ও উপকৃত হচ্ছেন নিঃসন্দেহে।
অবশেষে শব্দর আলী প্রয়াত নেতা খসরু’র বিদেহী আত্বার মাগফেরাত কামনা করে বলেন, যারা দলের দুঃসময়ে দীর্ঘদিন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে ছিলেন, দলের পোড় খাওয়া নেতাকর্মী, কিন্তু দলীয় কোনো সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেননি এমন নেতাদের রাজনৈতিকভাবে মূল্যায়ন করতে তিনি কন্ঠাবোধ করতেন না। কারণ তিনি নিজেও ছিলেন সত্যিকার অর্থে একজন তুখোর পোড় খাওয়া রাজপথের লড়াকু সৈনিক। নারায়ণগঞ্জে চাষাড়ায় তৎকালীন তৈমূর আলম নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি থাকাকালে তিনি যে নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন তা আজও আমাকে পীড়া দেয়। তিনি চেয়েছিলেন আড়াইহাজার উপজেলা হবে একটি আদর্শ উপজেলা। আর সেই লক্ষেই তিনি এগিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু জীবনযুদ্ধে প্রকৃতির নিয়মে হঠাত করে আল্লাহর ডাকে পাড়ি জমান ওপারে। মৃত্যুর দুই বছর পার হতে বসলেও তার চলে যাওয়ার শূণ্যতা আজও পূরণ করতে পারেনি আড়াইহাজার বিএনপি। তার শূণ্যতা আজও আমাদের বেদনা দেয়। তিনি থাকলে হয়তো আড়াইহাজার বিএনপিতে এতো বিভাজন বিরাজ থাকতো না। সত্যিকার অর্থে আমরা আড়াইহাজার বিএনপি একজন ন্যায়পরায়ণ অভিভাবক হাড়িয়েছি। যার অভাব বিএনপির এ দুঃসময়ে আমরা হারে হারে টের পাচ্ছি। আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ মহান সৃষ্টিকর্তা যেন খসরু সাহেবকে বেহেশতের সম্মানিত স্থান দান করেন। আমিন।