সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদল বলেছেন, ‘নারায়ণগঞ্জের ১০ হাজার শিক্ষার্থী মূল্যবান ভোট দিয়ে আমাকে ভিপি নির্বাচিত করেছিলেন। তার পূর্ব থেকেই দলের জন্য লড়াই সংগ্রামে নিয়োজিত ছিলাম। “অস্ত্র নয় শিক্ষা চাই, সন্ত্রাস নয় শান্তি চাই” এই শ্লোগানকে প্রতিপাদ্য রেখে ছাত্র রাজনীতি করেছি। প্রাণপ্রিয় নেত্রী ও জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে যে দায়িত্ব দিয়েছেন তা আমি অক্ষরে অক্ষরে পালন করবো ইনশাআল্লাহ। আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা শেখ হাসিনার নির্দেশ মোতাবেক কাজ করে থাকে এবং সকল দলের নেতাকর্মীদের সম্মান দিতে জানে। ক্ষমতার কোন অপব্যবহার যাতে আমি না করি এবং ক্ষমতার হুংকার যাতে আমার মধ্যে না থাকে সকলের কাছে সেই দোয়া চাই। আমি গরিব তাই আজীবন গরিবের বন্ধু হয়ে থাকতে চাই’।
এখানে উল্লেখ্যযে, এর আগের দিন শহীদ বাদলকে ইঙ্গিত করে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের এমপি একেএম সেলিম ওসমান বলেছিলেন, ২ জুলাই বৃহস্পতিবার বিকেলে খানপুর ৩০০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ১০ শয্যার আইসিইউ ইউনিট উদ্বোধনকালে তিনি বক্তব্য রাখতে গিয়ে শহীদ বাদলকে ইঙ্গিত করে বলেছেন, ‘সেলিম ওসমানের থাবা বাঘের চেয়েও ভয়ংকর, বাঘের চেয়েও ভয়ংকর সেলিম ওসমানের থাবা।’ সেই সঙ্গে শহীদ বাদলের পৈত্রিক নিবাস মতলবে হওয়ায় তাকে ইঙ্গিত করে মতলববাদীও আখ্যায়িত করেছেন এবং তাকে মতলবে ফিরে যেতে হবে বলেও মন্তব্য করেন এই এমপি।
আগের দিন বন্দরের এক অনুষ্ঠানে জেলা আওয়ামীলীগের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদলের একটি বক্তব্যের বিষয়ে এমপি সেলিম ওসমান বলেন, আজকে সকালে একটি পত্রিকায় দেখলাম আমার ছবি দিয়ে নিউজ হইছে। বন্দরে রিলিফ দিতে গিয়ে যিনি নাকি চাষাড়া রেলওয়ের ফ্লাটে থাকতেন। এক এমপি সাবের আশীর্বাদে উনি বলে এখন লেতা (নেতা), উনি নাকি এখন লেতা, এই লেতা বন্দরে গিয়ে বললো সেলিম ওসমান বন্দরের এমপি না, উপজেলা চেয়ারম্যান বন্দরের এমপি। প্রশ্ন থাকবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে এমপিশিপ পাল্টাই দিতে পারে! এটা কি করে সে পারে? দুই দিনের জুগিনা ভাতেরে অন্ন বইলেন না। আমরা দেশটা স্বাধীন করেছি, আমরা মুক্তিযোদ্ধা। হাজারবার বলি সেলিম ওসমানের থাবা বাঘের থেকেও ভয়ংকর। বাঘের থেকেও ভয়ংকর।
শহীদ বাদলকে ইঙ্গিত করে এমপি বলেন, আমি ডিক্লোরেশন দিতে পারি আমি কোন সংসদ সদস্য নই। আমি সেইদিন থেকে জনগণের গোলাম, আমার জীবন যতক্ষণ থাকবে আমি জনগণের গোলাম থাকবো। দেখি কোন মতলববাদী আমাকে সংসদ সদস্য থেকে সরাই দেন। উনি কে যে আমাকে সংসদ সদস্য থেকে সরাই দিবেন। উনাকে আবার মতলবে ফিরে যেতে হবে। সেখান থেকে ধানমন্ডি অট্টালিকায় দুই নম্বর স্কুল বানাইয়া কত পয়সার মালিক তিনি হয়েছেন সেলিম ওসমান দেখে দিবেনে। আপনি আওয়ামীলীগ করেন, আর যা মনে করেন তাই।
তিনি বলেন, প্রকাশ পেয়ে যাচ্ছে আওয়ামীলীগের লোকজনও শেখ হাসিনার নেতৃত্ব মানছেনা। চাল চুরি করছে, মেডিকেল কলেজে খাবারের বিল ২০ কোটি এক মাসে খরচ করছে। আমার আপা মানসিক রোগী হয়ে যাচ্ছেন। চুরি বন্ধ করতে হবে। এই সমস্থ হারামিরা যারা নাকি মৃত্যুকেও ভয় পায়না। করোনার মাঝেও ব্যবসা করে বিত্তবান হওয়ার চেষ্টা করছেন।
এদিকে শহীদ বাদল আরও বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা একেএম শামীম ওসমান ও একেএম সেলিম ওসমান সহ যাদেরকে মনোনয়ন দিয়েছেন এবং যারা গণমানুষের জন্য কাজ করে চলেছেন তাদের জন্য সকলে দোয়া করবেন। নির্বাচন না আসতেই অনেকে নির্বাচনে নেমে গেছেন। যারা নারায়ণগঞ্জের শান্তি বিনষ্ট করতে চায় তাদের প্রতি নিন্দা জানাই। তৃতীয় পক্ষ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অপচেষ্টা চালাচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে সকলকে রুখে দাড়াতে হবে’।
বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপন ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ৩ জুলাই শুক্রবার বিকেলে বন্দর উপজেলাধীন মদনপুর ইউনিয়নের পূর্ব কেওঢালায় গ্রীণ কেয়ার কিন্ডার গার্টেন স্কুল ও নাগিনা জোহা উচ্চ বিদ্যালয়ের আয়োজনে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি ও খাদ্যসামগ্রী বিতরণে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদল এসব কথা বলেন।
গ্রীণ কেয়ার কিন্ডার গার্টেন স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও আওয়ামী লীগ নেতা হাবিবুর রহমান হাবিবের সভাপতিত্বে এবং আওয়ামী লীগ নেতা জুয়েল ভূঁইয়ার সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ও সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এমএ রউফ, সাবেক প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাবিবুর রহমান মিয়া, বন্দর থানা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম ও মদনপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শুক্কুর আলী উপস্থিত ছিলেন।
তাছাড়া এসময় পরিবেশ রক্ষা ও উন্নয়ন সোসাইটির সভাপতি ডাঃ হোসাইন, আওয়ামী লীগ নেতা আক্তার হোসেন মোল্লা, কবির হোসেন ভূঁইয়া, মোস্তফা কামাল ভূঁইয়া, আলী নূর হোসেন মাস্টার, লাইক সিদ্দিকি বাবু, শাহাদাৎ হোসেন, আলমগীর হোসেন, মাসুদ, শাহালম, আক্তার হোসেন ভূঁইয়া সহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভা শেষে দোয়ার মাধ্যমে সমস্ত মুসলিম উম্মাহর জন্য রহমত প্রত্যাশা করা হয় এবং কর্মহীনদের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ শেষে বৃক্ষরোপন করা হয়েছে।