সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জের খানপুর ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট (করোনা) হাসপাতালে করোনা রোগীদের পাশাপাশি সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা দেওয়ার লক্ষ্যে হাসপাতালের জরাজীর্ণ টিনসেড ভবনটি ভেঙ্গে নতুন একটি ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছে ৩০০ শয্যা হাসপাতালের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান।
সেই লক্ষ্যে বুধবার ৮ জুলাই বিকেল ৩টায় হাসপাতালটি সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন এমপি সেলিম ওসমান।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার গৌতম রায়, সিটি কর্পোরেশনের ১২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শওকত হাসেম শকু, ইঞ্জিনিয়ার নাজমুল হাসান ও তার সহকর্মীবৃন্দ।
সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান জানান, সরকারী অনুমোদন পেলে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সহযোগীতা নিয়ে উক্ত স্থানে সাড়ে ৫ হাজার স্কয়ার ফিট জায়গা নিয়ে ৬ তলা ফাউন্ডেশন দিয়ে ৩ তলা পর্যন্ত ভবন নির্মাণ করা হবে। সেখানে সাধারণ রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে।
তিনি বলেন, খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালটি ৫০০ শয্যায় উন্নীত করতে হাসপাতালের একটি অংশ ভেঙ্গে দিয়ে উন্নয়নের কাজ শুরু করা হয়েছে। যা বর্তমানে বিভিন্ন জটিলতায় কাজ আটকে রয়েছে। অপরদিকে হাসপাতালটিও এখন আর কাগজে ৩০০ শয্যা থাকলে বাস্তবে সেটি ১৫০ শয্যা হয়ে গেছে। যেখানে সম্পূর্ণ করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি সরকারের কাছ থেকে অনুমোদন পেলে আমরা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সহযোগীতা নিয়ে হাসপাতালের পেছনের অংশে জরাজীর্ণ টিনসেটটির জায়গা নতুন একটি ভবন তৈরি করে করোনা ব্যতিত অন্তত ১৫০ শয্যায় সাধারণ সকল রোগীদের জন্য চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। যার আনুমানিক ব্যয় হবে ৫ কোটি টাকা। যেখানে ইতোমধ্যে বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের সহযোগীতায় ২ কোটি টাকা তহবিল গঠন করা হয়েছে। এছাড়াও আরো ২ কোটি টাকার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি পেয়েছি। সরকারী অনুমোদন পেলে নারায়ণগঞ্জের মানুষের সুস্বাস্থ্য রক্ষার জন্য এ ভবনের কাজ ধরা হবে। পরবর্তীতে যখন হাসপাতাটি ৫০০ শয্যা হবে তখন সেটি মেডিকেল কলেজে রূপান্তরিত করতে এই ভবনটি ভূমিকা রাখবে।
যেহেতু এখন হাসপাতালটি ৩০০ শয্যা থেকে ১৫০ শয্যা হয়ে গেছে তাই নতুন ভবনটির মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ ৩০০ শয্যায় রূপান্তরিত করে ১৫০ শয্যা করোনা রোগী এবং ১৫০ শয্যা সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হবে। সরকারী অনুমোদন পেলে যা আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে সম্পন্ন করা সম্ভব। ১০০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে। নারায়ণগঞ্জে বেশ কয়েকটি ক্লিনিক থাকলেও তারা সেভাবে এগিয়ে না আসায় নারায়ণগঞ্জের মানুষ হৃদরোগ সহ বিভিন্ন রোগীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ সকল সমস্যা সমাধানের জন্যই আমরা এই উদ্যোগ নিয়েছি।
প্রসঙ্গত, খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালে ১০ বেডের আইসিইউ ইউনিট উদ্বোধনের দিন সেলিম ওসমান বক্তব্যে জানিয়েছেন, প্রয়োজনে আমরা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে অনুমোদন আনবেন। সেই সাথে তিনি কিছু দুস্কৃতিকারী, টেন্ডারবাজ, অসৎ ব্যবসায়ীদের হাসপাতালে কার্যক্রম থেকে উৎখাত করে হাসপাতালটি পুণরুজ্জীবিত করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন এমপি সেলিম ওসমান।
উল্লেখ্য, করোনা শুরু হওয়ার পর থেকে এমপি সেলিম ওসমান ব্যক্তিগত তহবিল থেকে করোনা মোকাবেলায় খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালে নারায়ণগঞ্জবাসীর চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে আইসিইও সরঞ্জামাদি ক্রয়ের জন্য ২৫ লাখ ১০ হাজার, বার একাডেমী স্কুলে সরঞ্জামাদি ফিটিংয়ের জন্য ১ লাখ ৯৫ হাজার, পিসিআর ল্যাবের সরঞ্জামাদি ১৯ হাজার, রোগীদের অ্যাম্বুলেন্সের ভাড়া বাবদ ৪ লাখ ৫০ হাজার, ডাক্তারদের যাতায়াতের জন্য মাইক্রোবাসের ভাড়া বাবদ ১ লাখ টাকা, ডাক্তার নার্স ওয়ার্ড বয়দের খাওয়া বাবদ ২৮ লাখ এবং অন্যান্য আনুসাঙ্গিক খরচ ৭ হাজার টাকা বর্তমানে টেন্ডার জটিলতার জন্য জুলাই মাসের ১ তারিখ থেকে হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীদের খাওয়ার ব্যবস্থা করেছেন যেখানে ৮ জুলাই পর্যন্ত ৮২ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। সব মিলিয়ে ব্যক্তিগতভাবে এখন পর্যন্ত আনুমানিক প্রায় ৬২ লাখ টাকা ব্যয় করেছেন। যা আগামী আগস্ট মাস পর্যন্ত বলবৎ থাকবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। সেই সাথে তিনি নারায়ণগঞ্জের সকল ব্যবসায়ীদের সহযোগীতা কামনা করেছেন।