সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
অতটা বিলাসি জীবনযাপন তিনি কখনই করেননি। একজন সাধারণ মানুষের মতই যার জীবনযাপন। রিক্সাভ্যান চালকদের পক্ষে আন্দোলন করে হয়েছিলেন তাদেরও নেতা। কৃষক শ্রমিক খেটে খাওয়া মানুষের পাশে দাঁড়ানোর মাধ্যমেই যার উত্থান তিনি অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার। রাজনীতির উচ্চশিখরে পৌছে গেলেও তিনি এখনও সেই আমজনতার নেতাই। ছোটকাল থেকেই তিনি বৃক্ষপ্রেমী। কয়েক বছর ধরেই তিনি তার বাড়ির সামনে গড়ে তুলেছিলেন বৃক্ষের বাগান। সেই বাগানটি এখন তিনি তার প্রকল্পের ধারণা ‘একটি বাড়ি একটি খাদ্যভান্ডার’ এর আওতায় এনে ফলজ গাছ, শাক সবজি, ফুলের গাছ ও ওষুধী মিলিয়ে কয়েক হাজার রকমের বৃক্ষ তিনি রোপণ করেছেন। যেখানে সার্বক্ষনিক একজন পরিচর্যা করছেন।
অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা। ছিলেন জেলা বিএনপির সভাপতি। বিএনপির সরকার আমলে তিনি হয়েছিলেন এডিশনাল এ্যাটর্ণী জেনারেল। পরবর্তীতে তিনি বিআরটিসির চেয়ারম্যান হোন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট এডিলেট ডিভিশনের একজন আইনজীবী।
তার পৌত্রিক নিবাস নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের রুপসী খন্দকার বাড়িতে। এ ছাড়াও বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১৩নং ওয়ার্ডের মাসদাইর এলাকায় তার স্থায়ী বসবাস। এই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তার ছোট ভাই মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ। তার বাড়ির সামনে তিনি গড়ে তুলেছেন একটি হরেক রকমের বৃক্ষ বাগান।
১৮ আগস্ট মঙ্গলবার বিকেলে তার মাসদাইরের বাসভবন মজলুম মিলনায়তনের সামনে গিয়ে দেখা যায় অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার তার বাগানের গাছের পরিচর্যা করছেন। প্রতিটি গাছ তিনি খুঁটিয়ে খুুঁটিয়ে দেখছেন। গিয়ে দেখা যায় কয়েক শতক জমির এই বাগানে তিনি লাগিয়েছিলেন কয়েক হাজার গাছ। রয়েছে শাক সবজি, ফলজ ও ওষুধী গাছও।
ফলজ গাছের মধ্যে রয়েছে- আতা ফল, করমজা, চালতা, বেল, হরেক রকমের পেয়ারা গাছ, পেঁপে, মালটা, জাম্বুরা, ডালিম, সফেদা, কামরাঙা, জলপাই, আমড়া, আমরুজ, আম, জাম, কাঠাল। ওষুধী গাছের মধ্যে রয়েছে তুলশি পাতা, পুতিদা পাতা, ধনে পাতা। শাক সবজির মধ্যে রয়েছে- কঁচু শাক, পুঁইশাক, লেবু, ডেরশ, মুলা, বেগুন, মরিচ এবং সূর্যমুখী, বেলী সহ নানান ধরণের ফুলের গাছও লাগিয়েছেন এই বাগানে।
এ বিষয়ে অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার ‘একটি বাড়ি একটি খাদ্যভান্ডার’ প্রকল্প নিয়ে বলেছেন, করোনা পরবর্তী পরিস্থিতি সামাল দিতে হলে দেশের মানুষকে এখনই সচেতন হওয়া প্রয়োজন। কারন করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে খাদ্যের সংকট দেখা দিতে পারে। তাই আমি সেই লক্ষ্যেই ‘একটি বাড়ি একটি খাদ্যভান্ডার’ কনসেপ্ট নিয়ে কাজ করছি। নারায়ণগঞ্জ জেলায় ইতিমধ্যে ১১ হাজার বৃক্ষ রোপণ করেছি। কয়েকশত কর্মী এই টিমে কাজ করছে। যারা বিভিন্ন এলাকায় বৃক্ষ রোপণ করছে। এগুলো তারা পরিচর্যা করবে।
তিনি বলেন, আমি মনে করি ১৮ কোটি মানুষের ৩৮ কোটি হাত যদি যার যার বাড়ির পতিত জায়গায় একটি করে গাছ লাগান তাহলে দেশে কোন অভাব দেখা দিবেনা কোনদিনই। বাংলাদেশের মাটি কোন মাটি নয়, এদেশের মাটি হলো স্বর্ণ। বাড়ির আনাচে কানাচে একটি বীজ পুতে রাখলেও শাক সবজি ফলফ্রুট হয়ে যায়। আমি আমার নিজের বাড়িটিতেই ‘একটি বাড়ি একটি খাদ্যভান্ডার’ ধারণার আওতায় নিয়ে আসার চেষ্টা করছি। এটা উদাহরণ হিসেবে। যাতে সারাদেশের মানুষ আমাকে ফলো করে এ রকম বাগান তৈরি করে।
অন্যদিকে গত ২ জুলাই থেকে নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকায় বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকারের নির্দেশে ঘোষিত ৩০ হাজার বৃক্ষরোপন কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। এই কাজে সহযোগীতা করছেন ১ হাজার স্বেচ্ছাসেবী কর্মী। যারা সকলে টি-শার্ট পরিধান করে কাজ করবেন। সেজন্য ১ হাজার টি-শার্ট তৈরি করা হয়। যেখানে বিএনপির চেয়ারপারসন ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এবং তৈমূর আলমের ছবি রয়েছে।
মুলত করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে সামাল দিতে অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকারের থিওরি ‘একটি বাড়ি একটি খাদ্য ভান্ডার’ এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকায় ১ হাজার স্বেচ্ছাসেবী কর্মীর মাধ্যমে বিভিন্ন প্রজাতির ৩০ হাজার চারা গাছ রোপণের ঘোষণা দেন তিনি। ইতিমধ্যে তিনি উন্নতজাতের কয়েক হাজার চারা গাছ রাজশাহী থেকে এনেছেন।
এই প্রকল্পের আওতায়- এসব গাছ বিভিন্ন মসজিদ মাদ্রাসা বিদ্যালয় সহ রাস্তারর দুইপাশে রোপণ করা হচ্ছে। এছাড়াও যেখানে খালি থাকবে সেখানেই চারা রোপণ করা হয। ১ হাজার কর্মীরাও এসব গাছ রক্ষণাবেক্ষণে কাজ করছেন। মোট কথা করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে মানুষের যে খাদ্যের সংকট দেখা দিবে সেই সংকট মোকাবেলায় একটি বাড়ি একটি খাদ্য ভান্ডার থিওরি নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছেন তৈমূর আলম।