সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর ১৩নং ওয়ার্ডের মাসদাইর এলাকায় অবস্থিত বেগম রোকেয়া খন্দকার পৌর উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের কমিটি “গোপনে” করার চেষ্টা সহ নানা ধরনের তেলেসমাতি কারবার চলছে। কমিটির নেতাদের সঙ্গে মারামারি ও বিদ্যালয়ের মাঠ সভাপতির গ্যারেজ সহ নানা কর্মকান্ডে লঙ্কাকাণ্ড শুরু হয়েছে বিদ্যালয়ে। যার ফলে বিদ্যালয়ের পরিচালনা নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন তৈমূর আলম খন্দকার। এ বিষয়ে তিনি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
সেই অভিযোগটি তিনি দশটি দপ্তরে অনুলিপি প্রদান করেছেন। তা হলো, চেয়ারম্যান, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা। জেলা প্রশাসক, নারায়ণগঞ্জ। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, ঢাকা শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা। স্কুল ইন্সপেক্টর, ঢাকা শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা। চেয়ারম্যান, সদর উপজেলা পরিষদ, নারায়ণগঞ্জ। উপজেলা নির্বাহী অফিসার, নারায়ণগঞ্জ সদর। জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, নারায়ণগঞ্জ। মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, নারায়ণগঞ্জ সদর। মাকসুদ আলম খন্দকার খোরশেদ, কাউন্সিলর, ওয়ার্ড নং-১৩, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন এবং প্রধান শিক্ষক, বেগম রোকেয়া খন্দকার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, নারায়ণগঞ্জ।
২০ আগস্ট বৃহস্পতিবার মিডিয়াতে পাঠানো অভিযোগে তিনি লিখেছেন, আমি নিম্নস্বাক্ষরকারী, বেগম রোকেয়া খন্দকার পৌর উচ্চ বিদ্যালয় এবং বেগম রোকেয়া খন্দকার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা। আমার কর্মজীজনের প্রারম্ভের উর্পাজিত অর্থে নগদ মূল্যে সরকারের অনুমোদনক্রমে পৌরসভার পুকুর ক্রয় করে মাটি ভরাট করত: বেগম রোকেয়া খন্দকার পৌর উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছি। কিন্তু নানা ধরনের অনিয়ম, আর্থিক দূর্নীতির অভিযোগ, স্কুলের মাঠ কমিটির সভাপতির ব্যক্তিমালিকানাধীন গাড়ীর গ্যারেজ হিসাবে ব্যবহার, স্কুল কমিটির মধ্যে মারামারির খবর পত্রিকায় প্রকাশিত ছাড়াও বর্ণিত বিষয়ে অভিবাবকগণ আমার দৃষ্টি আকর্ষন করেছে।
আরো গুরুতর অভিযোগ এই যে, অভিবাবকদের না জানিয়ে এবং পর্যাপ্ত নোটিশ প্রদান না করে দীর্ঘদিন আপনি সম্পূর্ণ গোপনীয়তা রক্ষা করে পছন্দের মানুষদের সমন্বয়ে স্কুল পরিচালনা কমিটি গঠন করে যাচ্ছেন যাতে অভিভাবকদের সমর্থন নাই। স্কুল পরিচালনা বিশেষ করে কমিটি গঠন সংক্রান্ত বিষয়ে আপনি কোন দিনই আমার সাথে পরামর্শ করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন নাই। পরিচালনা পর্ষদ গঠনে অভিবাবকরা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারছে না, কারণ নির্বাচনী তপছিল যথা সময়ে জানানো হয় না। এ ভাবেই কয়েক দফা স্কুল পরিচালনা পর্ষদ গঠন করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ ভাবে নৈতিকতা পরিপন্থী এবং বেআইনী।
অভিবাবকগণ আমাকে জানিয়েছেন যে, স্কুলে বর্তমানে ১১/১২ শত ছাত্র-ছাত্রী ছাড়াও একটি প্রভাতী শাখা রয়েছে। প্রভাতী শাখার হিসাব সহ অন্যান্য খরচাদির হিসাব নিকাশের স্বচ্ছতা সম্পর্কে অভিবাবকদের অভিযোগ রয়েছে।
মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, নারায়ণগঞ্জ সদর কার্যালয় থেকে জানতে পারলাম যে, অত্র কমিটির ম্যায়াদ চলতি সালের নভেম্বর মাসে শেষ হয়ে যাচ্ছে। এমতাবস্থায়, ৯০ দিন পূর্বে কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করার বিধান রয়েছে। নির্বাচনের তপছিল যাহাতে যথা সময়ে সকল অভিভাবকের নিকট পৌছে এবং অভিবাবকগণ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারে তা নিশ্চিত করার জন্য আপনাকে অনুরোধ করা হইল, অন্যথায় গোপনীয়ভাবে আসন্ন কমিটি করা হলে এর দায় দায়িত্ব আপনি বহন করিবেন। কারণ এখন থেকে আপনাদের প্রত্যেকটি অনিয়ম ও গোপনীয় কার্যক্রম সম্পর্কে কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হবে।
উল্লেখ্য, অত্র করোনা পরিস্থিতিতে যদি নির্বাচন করতে সরকারী অনুমতি না থাকে তবে এডহক কমিটি গঠন প্রক্রিয়া সম্পর্কে আমাকে অবহিত করার জন্য আপনাকে অনুরোধ করা হলো। এলাকার উচ্চ শিক্ষিত ও গন্যমান্য ব্যক্তি সমন্বয়ে একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিচালনা করার মত যোগ্যতা সম্পন্ন একটি ম্যানেজিং কমিটি গঠন হওয়া আবশ্যক। স্কুলে কমিটির মধ্যে মারামারি এবং স্কুলের মাঠকে সভাপতি কর্তৃক ব্যবসায়িক গ্যারেজ হিসাবে ব্যবহারের পুনরাবৃত্তি এলাকাবাসী দেখতে চায় না। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালনে আপনি অত্যান্ত সতেচন থাকবেন।