সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে প্রায় ১০ বছর ধরে নজরুল ইসলাম (৩৫) নামের এক যুবককে শিকলবন্দী করে রেখেছে তার পরিবার। যদিও পরিবারের দাবি নজরুল ইসলাম মানসিক ভারসাম্যহীন। তাই তাকে শিকলবন্দী করে রাখা হয়েছে। নজরুল ইসলাম সাদিপুর ইউনিয়নের দক্ষিণপাড়া গ্রামের মৃত জামির আলী মোল্লার ছেলে।
২২ আগস্ট শনিবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়নের দক্ষিণপাড়া গ্রামে ছোট একটি টিনের চালার চারদিক খোলা একটি ঘরে শিকল পায়ে মাটিতে বসে আসে নজরুল ইসলাম। ঘরের পাশে থাকা গাছের সাথে লোহার শেকল আর তালা দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে নজরুলকে। শরীরে পড়া ছেড়া লঙ্গী ও পুরনো একটি শার্ট। রোদ-বৃষ্টি-ঝড় যা-ই-হোক না কেন নজরুলের জীবন সঙ্গি শিকল আর ভাঙ্গা একটি খোলা ঘর। ৬ ভাই ৫ বোনের মধ্যে নজরুল ইসলাম ভাইদের মধ্যে ৫ নম্বর। বেশ সম্পত্তির মালিকও নজরুল। সু-চিকিৎসা করে সুস্থ করবেন তার পাশে দেখার যেন কেউ নেই।
নজরুলের বড় ভাই নবীর হোসেন নবু জানান, মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় এলাকাবাসীর বিভিন্ন লোকসান করে। কারো গরু ছাগলকে মারধর, মানুষ মারধর, রাস্তায় এসে গাড়ি ভাংচুর এমনকি নিজের পরিবারের লোকজনকে কাছে পেলে আঘাত করার চেষ্টা করে। এই জন্যই পায়ে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে তাকে।
তিনি আরো জানান, আমার অন্য ভাই-বোনেরা সম্পত্তির লোভে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করছেন না। আমি একা কিভাবে তার দায়িত্ব নেব?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি জানান, নজরুলকে শিকলবন্দী করায় আমরা প্রতিবাদ করেছি। তাকে চিকিৎসা করার জন্য তার ভাইদের বলা হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে কোন প্রকার চিকিৎসার ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। তাই দ্রুত প্রশাসন হস্তক্ষেপ করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করলে নজরুল স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবেন দাবী এলাকাবাসীর।
সাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ মোল্লা জানান, এই বিষয়ে কেই আমাকে জানায়নি। তাকে উদ্ধার করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আনতে পরিষদের পক্ষ থেকে সকল প্রকার সহযোগীতা করা হবে।
সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আতিকুল ইসলাম মিডিয়াতে জানান, আপনার মাধ্যমে প্রথম শুনলাম। ঘটনাস্থল থেকে তাকে উদ্ধার করে স্বাস্থ্য পরীক্ষা-নীরিক্ষা করে চিকিৎসার মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আনা যায় কি না তার ব্যবস্থা করা হবে।