সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের ৭টি ইউনিট কমিটি গঠন নিয়ে জাল জালিয়াতি করে কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে ধরা খেয়েছেন মহানগর ছাত্রদলের নেতারা। সাতটি কমিটি গঠনের জন্য খসড়া কমিটিতে নাম দেয়া ৬৮ জনের মধ্যে ৪৫ জনের এসএসসি পাশের সার্টিফিকেটেই তদারকি করে পাওয়া গেছে জালিয়াতির ঘটনা। এসব নেতারা কমিটিতে পদ পেতে ভূয়া সনদপত্র বানিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে জমা দেন। অনেকের বয়সের সঙ্গে সনদের মিল পেয়ে সনদপত্রগুলো যাচাই করেন কেন্দ্রীয় নেতারা এতে ধরা পড়ে যান স্থানীয়রা।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের সুপার ফাইভের একজন শীর্ষ নেতা জানিয়েছেন- করোনা পরিস্থিতির পূর্বে ঢাকায় মহানগর ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি রাফিউদ্দীন রিয়াদ ও সভাপতি সাহেদ আহমেদের সঙ্গে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এমন খবর স্থানীয় মিডিয়াতে প্রকাশিত হলে সাহেদের পক্ষ নিয়ে নেতাকর্মীরা ফেসবুকে রিয়াদ সহ বেশকজনকে নিয়ে কঠোর সমালোচনা করেন এবং তাদের নিজেদেরই এসএসসি পাশের সার্টিফিকেট নেই বলে জানান। মুলত পাচ ক্লাশ পাশ করা রাফিউদ্দীন রিয়াদ, সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ মাগফুর ইসলাম পাপন ও স্বশিক্ষিত (ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে নির্বাচনী তফসিল অনুযায়ী) আল আমিন প্রধানই ৬৮জনের সার্টিফিকেট যাচাইয়ের কথা বলেছিলেন। ওই সময় ৪৫ জনের জাল সনদ ধরা না পড়লে কমিটি গঠন করা হয়ে যেতো।
অনেক নেতারা জানিয়েছেন, ওইদিন নারায়ণগঞ্জের নেতা কেন্দ্রে গিয়েছিলেন মুলত কমিটি আনতে। কিন্তু রিয়াদ, পাপন ও আল আমিন প্রধান সনদপত্র যাচাইয়ের কথা জানান কেন্দ্রীয় নেতাদের। যার ফলশ্রুতিতে সনদগুলো যাচাই করে ৪৫ জনের ভয়া সার্টিফিকেট পাওয়া যায়। তারপর আটকে যায় কমিটি ঘোষণা। ওই সময় কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের ঢাকা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মশিউর রহমান রনি মিডিয়াতে জানিয়েছিলেন- নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের আওতাধীন বিভিন্ন ইউনিটের কমিটিগুলো জমা দেয়া হয়েছে। সেগুলো আবারো যাচাই বাছাই করে সুপার ফাইভের নেতারা কেন্দ্রে জমা দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তবে ওইদিন রিয়াদ ও সাহেদের হাতাহাতির বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেছিলেন।
নেতাকর্মীরা বলছেন- কেউ কেউ এসএসসি পাশ করলেও মুলত বয়সের ক্রাইটেরিয়ার কারনে কেউ কেউ সনদপত্রে পাশের সাল পরিবর্তন করেছিলেন। আবার কারো কারো সার্টিফিকেট নাই তারাও ভুয়া সার্টিফিকেট বানিয়ে জমা দিয়েছিলেন। তাদেরগুলোই ধরা পড়ে যায়। মহানগর ছাত্রদলের আওতাধীন সদর থানা কমিটি, বন্দর থানা কমিটি, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কমিটি, সরকারি তোলারাম কলেজ কমিটি, নারায়ণগঞ্জ কলেজ কমিটি, কদমরসূল কলেজ কমিটি ও নারায়ণগঞ্জ আইন কলেজ কমিটির খসড়া কেন্দ্রে জমা দেয়া হয়।
এদিকে জানাগেছে, ওই ঘটনার পর আবারো সাতটি ইউনিট কমিটির খসড়া কেন্দ্রে জমা দেয়া হয়েছে। কোন কোন কমিটিতে কেন্দ্রীয় নেতারা সরাসরি হস্তক্ষেপ করছেন। যদিও পরবর্তীতে জমা দেয়া খসড়া কমিটিগুলো আবার সেভাবে যাচাই করা হয়নি এবার। বাদ পড়ার সময় ওইসব কমিটিতে শীর্ষ পদে থাকা অনেকের নাম এবার বাদ পড়েছে। এ নিয়ে মহানগর ছাত্রদলের বেশকজন নেতাকর্মীদের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করছে। ভুয়া সনদপত্র বাতিল হওয়া কমিটিতে নাম থাকা নেতাদের অনেকেই দায় দিচ্ছেন মহানগর ছাত্রদলের শীর্ষ নেতাদের। কেউ কেউ জানিয়েছেন মহানগর ছাত্রদলের শীর্ষ নেতারাই ভুয়া সনদপত্র বানাতে নির্দেশনা দিয়েছিলেন। আবার তারাই কেন্দ্রে গিয়ে ভুয়াটা ধরিয়ে দিয়েছেন।