সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, আমরা আমাদের ভুলভ্রান্তিকে অন্যের ঘাড়ে চাপাতে ভালোবাসি। মসজিদে ভয়াবহ বিস্ফোরণে ব্যাপক প্রাণহানি ‘সরকারের ব্যর্থতা’। সরকার এটা ঘটায়নি কিন্তু দগ্ধদের তাৎক্ষনিক চিকিৎসার ব্যবস্থা না করতে পারা তাদের ব্যর্থতা। তারা প্রত্যেক সময় অর্ধেক কাজ করে বিলীন হয়ে যান। তারা যদি সচেতন থাকতো তাহলে অর্ধেক লোকও মারা যেত না। অর্ধেক লোক শান্তি পেত যদি এখানেই (নারায়ণগঞ্জে) চিকিৎসা করা যেত।
৬ সেপ্টেম্বর রবিবার দুপুরে দুর্ঘটনাকবলিত নারায়ণগঞ্জে পশ্চিম তল্লায় বায়তুস সালাত জামে মসজিদ পরিদর্শনে এসে গণমাধ্যমকে তিনি এসব কথা বলেন।
নারায়ণগঞ্জের কোন হাসপাতালে দগ্ধ রোগীদের পর্যাপ্ত চিকিৎসা দেয়ার কোন ব্যবস্থা না থাকাতে দুঃখ প্রকাশ করেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
তিনি বলেন, আমাদের দেশে এটাই একমাত্র ঘটনা। এখানে আসার আগে আমি বার্ন ইউনিটে গিয়েছিলাম। অনেক কষ্টে আমি আমার কান্না থামিয়ে রেখেছি। একটা দুঃখের বিষয় হচ্ছে এখানে তাদের যে চিকিৎসাটা দেওয়া উচিত ছিল সেটা হয় নাই। এত বড় একটা জেলা শহর, এত বড় একটা হসপিটাল। এখানে উচিত ছিল সঙ্গে সঙ্গে মরফিন ইনজেকশন দেয়া৷ তাহলে ব্যাথাটা থাকতো না। দুর্ভাগ্য যে আমাদের পর্যাপ্ত ওষুধ নেই। অথচ ওষুধের দাম খুব বেশি না। একটা ইনজেকশনের দাম ৩৫ টাকা মাত্র। সরকার চাইলে মৃত্যুর সংখ্যাটা আরও কমতে পারতো।
এখান থেকে ঢাকাতে যেতে প্রায় দুই ঘন্টা সময়। এই যে কষ্টটা, আগুনে পোড়ার এই ব্যাথাটা আপনার উপলব্ধি করতে পারবেন না। আমাদের সরকার একটু সতর্ক হলে একটু ব্যবস্থা নিলে ২৪ জনের জায়গায় অর্ধেক লোক কম মারা যেত।’ মন্তব্য করেন গণস্বাস্থ্যের এই প্রতিষ্ঠাতা৷
দেশের প্রতিটি জেলা হাসপাতালে বার্ন ইউনিটের দাবি জানান ডা. জাফরুল্লাহ৷ তিনি বলেন, এখানে স্বাস্থ্য বিভাগেরও একটা ব্যর্থতা আছে। এখানে তারা প্রত্যেকটা জেলা হাসপাতালে একটা বার্ন ইউনিট দেয়া। এটা কিন্তু খুব সোজা কাজ। এবং এর খরচও বেশি না। দুই দিনেই যেকোনো ডাক্তারকে খুব ভালোভাবে ট্রেনিং দেয়া যায়। আগামী এক মাসের মধ্যে ৬৪ জেলায় কম করে দুই জন ডাক্তারকে দুই থেকে তিন দিনের ট্রেনিং দিয়ে সেটা খুব সহজে করা যায়৷ প্রয়োজনে আমিও সরকারকে সহযোগিতা করবো৷
বিস্ফোরণে নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে সরকারের পক্ষ থেকে ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানিয়ে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘যারা আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন তাদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেয়া আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।
এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীদের বিচারের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তিতাস গ্যাসের সম্পর্কে শুধু আলোচনা হবে, পরীক্ষা হবে এই সমস্ত আজগুবি কথা না বলে এটার ৭ দিনের মধ্যে একটা বিচার হওয়া উচিত।
৪ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সদর উপজেলার পশ্চিম তল্লা এলাকার বায়তুস সালাত জামে মসজিদে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘেেট। এতে এখন পর্যন্ত ২৪ জনের প্রাণহানি হয়েছে৷ গুরুতর দগ্ধ আরও ১৩ জন জাতীয় শেখ হাসিনা বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন৷