সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জের পশ্চিম তল্লা বায়তুস সালাত জামে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় তিতাসের সাময়িক বরখাস্তকৃত ৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দুই দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। এর আগে তাদের গ্রেপ্তার করে আদালতে নেয়া হয়।
১৯ সেপ্টেম্বর শনিবার দুপুরে সিআইডির নারায়ণগঞ্জ জেলা কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান সিআইডির ডিআইজি মঈনুল হাসান।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, তিতাসের বরখাস্ত ৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এই বিস্ফোরণের ঘটনায় অন্য কারও অবহেলার সম্পৃক্ততা পেলে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।
গ্রেপ্তাররা হলেন নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা জোনের তিতাস গ্যাস কোম্পানির ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, উপ-ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদুর রহমান রাব্বী, সহকারী প্রকৌশলী এসএম হাসান শাহরিয়ার, সহকারী প্রকৌশলী মানিক মিয়া, ফতুল্লা জোনের সিনিয়র সুপারভাইজার মনিবুর রহমান চৌধুরী, সিনিয়র উন্নয়নকারী আইউব আলী, সাহায্যকারী হানিফ মিয়া, ওয়েল্ডার ইসমাইল প্রধান।
এর আগে বিস্ফোরণের ঘটনায় হতাহতের পর দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে তাদের সাময়িক বরখাস্ত করে তিতাস।
বরখাস্তের আদেশে বলা হয়, নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানার খানপুর, তল্লা এলাকায় বায়তুল সালাহ জামে মসজিদে গত ৪ সেপ্টেম্বর আনুমানিক রাত সাড়ে ৮টায় বিস্ফোরণ ঘটে। এই ঘটনায় বেশ কয়েকজন মুসল্লি মারা গেছেন। এ ছাড়া মসজিদের সম্পত্তির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। যে কারণে তিতাসের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। মসজিদের বিস্ফোরণজনিত ঘটনা ফতুল্লা জোনের আওতাধীন এলাকায় হয়েছে। এ দুর্ঘটনা ফতুল্লা জোনের কর্মকর্তা ও কামচারীদের দায়িত্ব পালনে অবহেলার কারণে হওয়ায় ৮ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান ও চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।
এদিকে শনিবার ওই ৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীর পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে নারায়ণগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাওসার আলমের আদালতে পাঠানো হয়। আদালত তাদের প্রত্যেককে ২ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গত ৪ সেপ্টেম্বর রাতে নারায়ণগঞ্জের পশ্চিম তল্লা বাইতুস সালাত জামে মসজিদে এশার নামাজ চলাকালে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। দগ্ধ ৩৭ জনকে ঢাকা মেডিকেলের শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে উৎসারিত আগুন এবং তিতাসের লাইনের ছিদ্র থেকে মসজিদের অভ্যন্তরে জমা হওয়া গ্যাস থেকে বিস্ফোরণটি হয়েছে বলে বিভিন্ন তদন্ত কমিটি জানায়। মসজিদের পাশেই মাটি খুঁড়ে গ্যাস লাইনের পাইপে ছয়টি ছিদ্র পাওয়া যায়।
এ ঘটনায় জেলা প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস, তিতাস, ডিপিডিসি ও সিটি করপোরেশন থেকে পৃথক পাঁচটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে তিতাস গ্যাস কোম্পানি, জেলা প্রশাসন ও ফায়ার।