সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে দুই বছরের এক শিশু অপহরণের পর ব্যাপক অভিযান চালিয়ে শিশুকে উদ্ধার করেছে র্যাব-১১। ওই সময় অপহরণকারী স্বামী-স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। ২৯ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার বিকেলে এ তথ্য জানান র্যাব-১১ এ অধিকায়ক খন্দকার সাইফুল আলম।
তিনি জানান, গত ২৬ সেপ্টেম্বর রবিবার মোঃ মিজানুর রহমান (৩২) নামক এক ব্যক্তি র্যাব-১১, নারায়ণগঞ্জ বরাবর একটি অভিযোগ করেন যে, ২৬ সেপ্টেম্বর কতিপয় অপহরণকারীরা নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন মিজমিজি পাইনাদী এলাকায় তাদের ভাড়া বাড়ি হতে তার ২ বছর বয়সী শিশুপুত্রকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। মোবাইল ফোনে অপহরণকারী তার শিশুপুত্রকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে তার কাছে মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ দাবি করে। উক্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে র্যাব-১১ কর্তৃক গোয়েন্দা নজরদারী ও গোপন অনুসন্ধান শুরু করে।
র্যাব আরও জানায়, এরই ধারাবাহিকতায় সম্ভাব্য কয়েকটি স্থানে অভিযান চালিয়ে র্যাব-১১ এর একটি আভিযানিক দল সর্বশেষ গত ২৮ সেপ্টেম্বর সোমবার সাড়ে ৬টায় নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর থানাধীন উত্তর লক্ষণখোলা এলাকা হতে মোঃ ইমরান হোসেন ওরফে বাবু এবং মোছাম্মদ সানজিদা আক্তার নামক দুই অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পরে গ্রেপ্তারকৃত আসামী মোঃ ইমরান হোসেন ওরফে বাবুর বোনের ভাড়া বাসায় অভিযান চালিয়ে অপহৃত ভিকটিম শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত আসামী মোঃ ইমরান হোসেন ওরফে বাবু নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর থানার লক্ষণখোলা এলাকার মৃত মাজেদ হোসেনের ছেলে ও সানজিদা আক্তার মোঃ ইমরান হোসেন ওরফে বাবুর স্ত্রী।
র্যাব জানায়, অপহৃত ভিকটিম শিশুটির পিতা মোঃ মিজানুর রহমান পেশায় একজন পিকআপ চালক। ভিকটিমের পরিবার ও অপহরণকারীরা প্রায় এক বছর ধরে সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন মিজমিজি পাইনাদী এলাকায় পাশাপাশি ভাড়া বাসায় বসবাস করে আসছিলেন। পাশাপাশি বাসায় বসবাস করলেও ভিকটিমের পরিবার ও অপহরণকারীদের মধ্যে প্রতিবেশি হিসেবে কোন পরিচয় বা ঘনিষ্ঠতা ছিল না। ভিকটিমের পিতা মোঃ মিজানুর রহমান পিকআপ গাড়ী চালানোর উদ্দেশ্যে বাহিরে থাকা অবস্থায় তার স্ত্রী সাংসারিক কাজে ব্যস্ত থাকার সুযোগ কাজে লাগিয়ে অজ্ঞাতসারে অপহরণকারীরা স্বামী-স্ত্রী পরষ্পর যোগসাজশে মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশ্যে কৌশলে গত ২৬ সেপ্টেম্বর বিকেল ৪টায় শিশুটিকে অপহরণ করে নিয়ে যায় এবং নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর থানাধীন উত্তর লক্ষণখোলা দালাল বাড়ী জামে মসজিদের পাশে অভিযুক্ত মোঃ ইমরান হোসেন ওরফে বাবুর বোনের ভাড়া বাসায় জিম্মি করে রাখে। অপহরণকারীরা ভিকটিম শিশুটিকে নির্যাতন করে শিশুর মা-বাবাকে মোবাইল ফোনে কান্নার আওয়াজ শুনিয়ে মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ দাবি করে। এর প্রেক্ষিতে ভিকটিম শিশুটির বাবা র্যাব-১১ বরাবর একটি অভিযোগ দাখিল করেন।
উক্ত অভিযোগের ভিত্তিতে র্যাব-১১ এর একটি আভিযানিক দল কর্তৃক গোয়েন্দা নজরধারীর মাধ্যমে ঘটনার সত্যতা পেয়ে সম্ভাব্য কয়েকটি স্থানে অভিযান চালিয়ে গত ২৮ সেপ্টেম্বর সন্ধা সাড়ে ৬টায় উত্তর লক্ষণখোলা হতে অপহরণকারী মূল হোতা মোঃ ইমরান হোসেন ওরফে বাবু এবং সহযোগী তার স্ত্রী মোছাঃ সানজিদা আক্তারকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তার বোনের ভাড়া বাসায় অভিযান চালিয়ে অপহৃত ভিকটিম শিশুটিকে সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। উপস্থিত সাক্ষীদের সামনে আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে তারা ভিকটিম শিশুটিকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টা এবং আটকে রেখে শারিরীক নির্যাতন করার কথা স্বীকার করে।