সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের পশ্চিম দেলপাড়া খালপাড় আবাসিক এলাকায় কয়েকটি পাথর মিল থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এলাকাবাসী। এগুলোকে উচ্ছেদ করার দাবীতে এলাকাবাসী ঐক্যবদ্ধ হয়ে কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুল আলম সেন্টু বরাবর অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী।
১০ অক্টোবর শনিবার রাতে পশ্চিম দেলপাড়া খালপাড় আবাসিক এলাকার ৩শ’র মতো মানুষজন ঐক্যবদ্ধ হয়ে সেন্টু চেয়ারম্যানের কাছে এ অভিযোগ করেন।
অভিযোগকারীদের মধ্য থেকে মো. আবুল কাশেম জানান, আমি পশ্চিম দেলপাড়া খালপাড় এলাকার বাসিন্দা। আমাদের এখানে তিন চারটি পাথর মিল আছে, এগুলো হলো রাব্বি পাথর মিল, খোকন পাথার মিল ও আজাহার উদ্দিনের দুইটি পাথর মিল। এগুলো পাথর ও ইট ভাঙ্গায়। এই এলাকাটা অতন্ত্য গণবসতিপূর্ণ এলাকা। এই পাথর মিলের চার পাশে অসংখ্য ঘর বাড়ি রয়েছে অনেক লোকজন বসবাস করে। এই পাথর মিলগুলো চলার সময় অনেক ধুলোর সৃষ্টি হয় এবং বিকট শব্দে ভুতুড়ে সৃষ্টি হয় যেটাকে বলে বসবাসের অযোগ্য। এটা শুধু পরিবেশ দূষণ না চরম দূষণ এবং অমানবিক পরিবেশ সৃষ্টি হয়। এখানে লোকজন আর টিকে থাকার মতো পরিবেশ থাকেনা। এই পাথর মিলগুলোর সরানোর জন্য কয়েকদিন যাবত আমরা কারখানার মালিক ও জমির মালিককে অভিযোগ করে আসতেছিলাম কিন্তু তারা কোনো কিছুকে তোয়াক্কা করে না। যেজন্য আমরা আজকে প্রায় ৩’শর মতো এলাকাবাসী ঐক্যবদ্ধ হয়ে চেয়ারম্যানের কাছে আসছি অভিযোগ নিয়ে। দেখি চেয়ারম্যান সাহেব আমাদের কি আশ^স্থ করে। তার কাছে আমাদের নালিশ এখানে কি জীবনের মূল্য বেশি নাকি ব্যবসা বা অর্থের মূল্য বেশি? এখানে আমাদের দেখা বা জানামতে কালু, মফিজ, মানিক চাঁন ও তাদের স্ত্রীসহ প্রায় ২৫-৩০জন লোক টিবি রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এরা এইসব কারখানার শ্রমিক ছিলো এবং এইসব কারখানার আশেপাশে বসবাস করতো। আমরা যারা বসবাস করতেছি আমাদের অনেকে যক্ষা রোগে ও শ্বাসকষ্ট রোগে আক্রান্ত। এই কারখানাগুলোর কারণে আমরা এলাকাবাসী মৃত্যুর মুখে।
একই এলাকার বাসিন্দা কলেজে পড়ুয়া শিক্ষার্থী মুক্তা আক্তার জানান, আমার বাড়ির পাশে একটা পাথর মিল আছে এটা সারা দিনরাত ২৪ ঘন্টা চলে। কিছু বলতে গেলে তারা অনেক দাপটের সাথে কথা বলে। তাদের পিছনে অনেক লোক আছে তারাও বাড়িতে এসে অনেক অত্যাচার করে, জগরাঝাটি করে এবং বোকাঝোকা করে আমাদের সবাইকে ভয় ভীতি দেখিয়ে রাখে। কিন্তু এই ধুলোর কারণে আমরা আমাদের ঘরে বসবাস করতে পারিনা। ছোট বেলা থেকে আমার আম্মু সুস্থ ছিলো কিন্তু এখন এই ধুলোর কারণে আমার আম্মুর শ্বাসকষ্ট হয়েছে। শ্বাসকষ্টে এই নিয়ে তিন বার আমার আম্মুর অবস্থা অনেক খারাপ ছিলো কিন্তু হাসপাতালে নেই নাই করোনার ভয়ে। আমাদের দক্ষিণ পাশের যেই জানালাটা সেগুলো আমরা খুলতেই পারিনা। বন্ধ থাকা অবস্থায়ই আমাদের রুমের প্রতিটি ফার্নিচারের উপর ধুলো দিয়ে জমাট বেধে যায় সেগুলো পরিস্কার করলেও কিছুক্ষন পর আবার সেই অবস্থায়ই হয়। আমরা এলাকাবাসী চাই আমাদের এলাকা থেকে যেনো এই পাথর মিল গুলো উঠিয়ে দেওয়া হয়। তাই আমরা এলাকাবাসী দলবদ্ধ হয়ে চেয়ারম্যান এর কাছে এই বিষয়ে অভিযোগ করতে আছি।
এ বিষয়ে কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মনিরুল আলম সেন্টু বলেন, আপনারা এলাকাবাসী এসেছেন আমি বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখবো। আমি ঐ কারখানা গুলোর মালিকদের সাথে কথা বলে দেখি কি করা যায়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, পশ্চিম দেলপাড়া খালপাড় এলাকার বাসিন্দা ও বিশিষ্ট সমাজ সেবক মো. শহিদুল্লাহ, আবদুল হক সিকদার, মো. বিল্লাল হোসেন, মো. সিদ্দিকুর রহমান, মো. শরিফ খান, খোকন চৌধুরী, সাইদুর রহমান, আব্দুর রউফসহ প্রায় ৩’শ এলাকাবাসী।