সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জেের সোনারগাঁ উপজেলার বারদী ইউনিয়নের গোয়ালপাড়া গ্রামের সালাউদ্দিনের ছেলে বাবুল ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগের অন্ত নেই এলাকাবাসীর।
তার অর্থের দাপটে সাধারণ মানুষের জমি দখল থেকে শুরু করে নিরীহ মানুষকে মারধর সহ নানা অপকর্ম করে যাচ্ছে এ পরিবারের সদস্যরা। সাধারণ মানুষ তাদের বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস পাচ্ছেনা। তাদের এই অপকর্মের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুললেই নেমে আসে অমানুষিক নির্যাতন, হামলা, মিথ্যা মামলা এমনকি প্রাণনাশের হুমকি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, উপজেলার বারদী ইউনিয়নের গোয়ালপাড়া গ্রামের মৃত সালা উদ্দিনের ছেলে বিএনপি নেতা জসিম উদ্দিন ভুইয়া, লায়ন মাহবুবুর রহমান ভুইয়া বাবুল, আমিনুল ইসলাম ভুইয়া সহ তার পরিবারের সদস্যরা আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশ করে বিভিন্ন অপকর্ম চালানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফলে আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষুন্ন হয়ে পড়েছে এবং অতিষ্ট হয়ে উঠেছে এলাকার নিরীহ মানুষ।
বাবুল ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে যত অপকর্মের অভিযোগ-
১। উপজেলার বারদী ইউনিয়নের গোয়ালপাড়া গ্রামের আকবর হোসেনের কাছ থেকে প্রায় ১ লাখ টাকা দামের একটি গরু ক্রয় করেন বাবুল ভুইয়া। গরু বিক্রেতার টাকা এখনও পর্যন্ত পরিশোধ করা হয়নি। পরে বিক্রেতা তার পাওনা টাকা চাইতে গেলেই মারধরের শিকার হতে হয়।
২। গোয়ালপাড়া গ্রামের জালাল মিয়া ওরফে দুলু মিয়া নামে এক ব্যক্তির বসত বাড়ির জায়গা জোরপূর্বকভাবে দখল করে বাবুল ভুইয়া তাদের বাড়ীর বাউন্ডারী দেয়াল নির্মান করেন। ওই ব্যক্তি গ্রামের মাতাব্বরদের কাছে বিচার চেয়ে কোনো বিচার পাননি। অর্থের দাপটে তাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলেনি।
৩। গোয়ালপাড়া গ্রামের কাজী রফিকুল ইসলাম মারা যাওয়ার পর বাবুল ও তার পরিবারের লোকজন রফিকুল ইসলামের জায়গা তাদের জায়গা দাবি করে কবর দিতে দেওয়া হয়নি।
৪। গোয়ালপাড়া গ্রামের নুরুল হক ও তার পরিবার পাওনা টাকা চাওয়ার অপরাধে পিটিয়ে গ্রাম ছাড়া করা হয়েছে।
৫। গোয়ালপাড়া গ্রামের মাহাবুব শিকদারের বাড়ীঘর ভাংচুর করা হয় এবং জাপানি জসিম ও জুয়েল মিয়া ১৯৯৬ সালে নৌকার প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার কারনে তাদেরকে বাবুল বাহিনীর লোকজন মারধর করে চুল কেটে গ্রামছাড়া করা হয়েছে।
৬। গোয়ালপাড়া গ্রামের আনোয়ার হোসেনের বাড়ীঘর দখল করে নেয় বাবুল ও তার বাহিনীর লোকজন।
৭। গোয়ালপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ফিরোজ এর পরিবারের সদস্যরা তাদের বিরুদ্ধে কথা বলায় বাবুল ও তার বাহিনীর লোকজন তাদের মারধর করে পিটিয়ে আহত করে।
স্থানীয় ভুক্তভোগীরা আরো জানান, আওয়ামী লীগের নামধারী নেতা বাবুলের বড় ভাই জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া সরকার পতনের আন্দোলন করে ২০১৮ সালে সোনারগাঁ থানায় ৩টি বিষ্ফোরক, চেক প্রতারণারসহ একাধিক মামলা আসামি। তার মেঝো ছেলে লায়ন মাহবুবুর রহমান বাবুল পোশাক কারখানা চাকুরি ছাড়ার পর ১০/১২ বছরে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে কোটি টাকার মালিক বনে যান। এতে সর্বমহলে আলোচনা ও সমালোচনার পাত্র হয়েছেন তিনি। ঢাকায় বনশ্রীতে বহুতল ভবন, ইসলামপুরের চায়না মার্কেটে ৫টি দোকান ও তার নিজ গ্রামে প্রায় ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করেছেন আরো একটি বহুতল ভবন। তাদের এসব অর্থের দাপটে ২০১৬ সালে বারদী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে সালাউদ্দিনের ছেলে আমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করে পরাজিত হয়। ২০১৮ সালে জাতীয় নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থীর পক্ষে বারদী ইউনিয়নে নির্বাচন পরিচালনা করেন এ পরিবার এবং তার ভাই জসিম উদ্দিন বিএনপির নির্বাচনী এজেন্ট ছিলেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে লায়ন মাহবুবুর রহমান বাবুলের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, একটি চক্র আমার ও আমার পরিবারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। আমার পরিবারের কোনো সদস্য অনিয়মের সঙ্গে জড়িত নয়।
সূত্র: সোনারগাঁও বার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম