সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ সোনারগাঁও পৌরসভার আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে পুরোদমে নির্বাচনী মাঠে নেমেছেন সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীরা। আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন প্রত্যাশা নিয়ে মাঠে ইতিমধ্যে ৬জন সম্ভাব্য প্রার্থী। যাদের মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের উপ-কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক ও ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ছগীর আহাম্মেদ। তিনি নির্বাচনের আরো বছর খানিক আগে থেকেই পুরোদমে প্রচারণা চালিয়ে আসছিলেন। এবার তিনি নির্বাচনী মাঠ গুছিয়ে শক্তি সঞ্চার করে চলেছেন। দেশের শীর্ষ দুই ব্যবসায়ী ছগীর আহাম্মেদের উপর আশীর্বাদ রেখেছেন যারা পৌরসভায় বেশ আলোচিত ব্যক্তি ও জনপ্রিয় মুখ। যে কারনে আপাতদৃষ্টিতে পৌরবাসী মনে করছেন পৌরসভার দুই শিল্পপতির এমন আশীর্বাদের কারনে ছগীর আহাম্মেদের নৌকা প্রতীকের লড়াইয়ে পাল্লা ভারী হয়েছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের একজন দানবীর হিসেবে পরিচিত শিল্পপতি সিআইপি ও ফারিয়া নীটনেক্স কম্পোজিটের মালিক সিআইপি ফেরদৌস ভূঁইয়া মামুন। বিশেষ করে সোনারগাঁও পৌর এলাকায় তিনি বেশ সুপরিচিত ও জনপ্রিয় ব্যক্তি। প্রতিটি নির্বাচনেই তিনি পেছন থেকে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখেন। কিন্তু এবার তিনি ছগীর আহাম্মেদকে সামনে রেখে তিনি নিজেও সামনে এসেছেন আলোচনায়। প্রকাশ্যেই তিনি সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী ছগীর আহাম্মেদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হয়েছেন এবং পৌরসভা নির্বাচন নিয়েও তিনি কথা বলেছেন।
যার মধ্যে সিআইপি ফেরদৌস ভুঁইয়া মামুন এক অনুুষ্ঠানে স্বীকারও করেছেন, ‘নৌকা প্রত্যাশি সবাই আমার সঙ্গে যোগাযোগ করছে যেনো আমি পাশে থাকি। আমি কাউকে না করি না।’ সিআইপি মামুনের এমন বক্তব্যেই স্পষ্ট পৌরসভা নির্বাচনে সিআইপি মামুন কতটা গুরুত্বপূর্ণ ও ফ্যাক্টর। আর সেই মামুন ভুঁইয়া যখন প্রকাশ্যে ছগীর আহাম্মেদের পক্ষ নেন তখন ছগীর আহাম্মেদের নৌকার লড়াইয়ে পাল্লা ভারী হওয়াটাই স্বাভাবিক।
এদিকে একই সঙ্গে দেশের সর্ববৃহৎ বেসরকারি বিমান সংস্থা ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সেরের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন সরাসরি ছগীর আহাম্মেদের প্রতি বন্ধু সহপাঠী হিসেবে শুভ কামনা করেছেন। এই ঘটনার পর পৌরসভার নেতাকর্মীরা ছগীর আহাম্মেদের দিকেই ঝুঁকছে বেশি।
ঘটনা সূত্রে জানাগেছে, গত ২৩অক্টোবর শুক্রবার বিকেলে পৌরসভার গোয়ালদি এলাকায় বিভিন্ন শ্রেণি পেশার ব্যক্তিবর্গ সিআইপি ফেরদৌস ভূঁইয়া মামুনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেন। ওই সময় আগামী পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী ও নৌকা প্রতীক প্রত্যাশি ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক ছগীর আহাম্মেদ উপস্থিত ছিলেন।
ওই সময় স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষজন পৌরসভা নির্বাচনের বিষয়ে ফেরদৌস ভূঁইয়া মামুনের মতামত জানতে চান।
ওইদিন ফেরদৌস ভুঁইয়া মামুন বলেছিলেন, আগামী পৌরসভা নির্বাচনে অনেকেই নির্বাচনের জন্য মাঠে নেমেছেন। অনেকেই আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন যেনো পাশে থাকি। আমি তো সবাইকে না করি না। সবাইকেই বলি আপনারা যদি চান তাহলে আপনাদের পাশে আমরা থাকবো। যদি আপনারা সবাই চান, সবার উপকার হয় তাহলে থাকবো নতুবা থাকবো না। আমরা পৌরবাসীর ভাল চাই, আমরা কোন রিটার্ন চাইনা। সেজন্য চিন্তা ভাবনা করলাম আমরা পৌরবাসীর ভাল কাজে থাকবো।
তিনি আরও বলেছিলেন, যেহেতু এখানে প্রবাসী আইসা ঢুকছে, একজন হইলো থানাবাসী আরেকজন হইলো পৌরবাসী প্রবাসী, ওয়ান ভোট ওয়ান ক্যান্ডিডেট, এটা কেমনে হয়? এটা দেখলাম যে পৌরবাসীর এটা খুব পেইন হচ্ছে। পৌরবাসীর পেইন হচ্ছে বিধায় ডিসিশন নিলাম সবাইকে নিয়ে বইসা যদি পৌরবাসী চায় তাহলে আমরা থাকবো।
তিনি বলেছিলেন, আমরা ব্যবসা বানিজ্য নিয়ে ব্যস্ত থাকি। তারপরও আমরা মানুষের জন্য থাকবো। আল্লাহ বলেছেন আগে তুমি নামাজ পড়ো, তারপরে মানব সেবা করো। মরবো তো একদিন ঠিকি, যখনই মরি, মানব সেবা করে যদি পাই, যদি বেহেসতে যেতে পারি তাহলে সবাইকে নিয়েই গেলাম, সমস্যা নাই।
এরপর তিনি জানান আগামী ৬ নভেম্বর পৌরবাসীকে নিয়ে বসা হবে। তিনি বলেন, পৌরসাবীর অনেকের বক্তব্য আমরা শুনবো। পৌরবাসীর কথা আলোচনা সব শুনবো। পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডের প্রতিটি এলাকার লোকজন নিয়ে বসবো।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ বেসরকাারি বিমান সংস্থা ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল-মামুন। তিনি বলেছিলেন, অনেকেই জানেন আমি সোনারগাঁও জি.আর ইনস্টিউিটশনের ছাত্র। আমাকে কেউ যদি জিজ্ঞেস করে আপনার বাড়ি কোথায়? তখন আমি বলি সোনারগাঁয়ে। পৃথিবীর যত বড় অনুষ্ঠানই থাকুক না কেন কেউ যদি আমাকে বলে সোনারগাঁয়ে অনুষ্ঠান আমাকে যেতে হবে, আমার সমস্ত কিছু বাদ দিয়ে আমি এখানে আসি। আমার প্রাণের টানে আসি। আমি আপনাদের যেকোন ভাল কাজে আছি, আমাকে ডাকলেই আমি ছুটে আসবো ইনশাহআল্লাহ।
মেয়র প্রার্থী ছগীর আহাম্মেদ সম্পর্কে তিনি বলেন, কবুল করার মালিক আল্লাহ।
মেয়র প্রার্থী ছগীর আহাম্মেদ তার বক্তব্যে ফেরদৌস ভূঁইয়া মামুন ও মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল-মামুনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেছিলেন, সোনারগাঁয়ে কৃতি সন্তান দেশের অন্যতম শিল্পপতি সিআইপি ফেরদৌস ভূঁইয়া মামুন ভাইয়ের বক্তব্য স্পষ্ট যে উনি কি চান। উনি চান পৌরবাসী ভাল থাকুক। কারন পৌরসভার মেয়র দিয়ে উনার কিছু আসবে যাবে না, উনি না চাইলেও যেই পৌরসভার মেয়র হোক না কেন, যে দেশ থেকেই এখানে মেয়র হোক না কেন যদি পৌরবাসী চায়, তাহলে উনাদেরও মামুন ভুঁইয়া সাহেবদের জিজ্ঞেস করেই করতে হবে। এটাই এখানে ট্রেডিশন। যে কারনে উনার চাওয়া হলো পৌরবাসী ভাল থাকুক।
পৌরবাসীর সেবায় ফেরদৌস ভূঁইয়া মামুনের অবদান তুলে ধরে ছগীর আহাম্মেদ আরও বলেছিলেন, সোনারগাঁও পৌরবাসী অতন্ত শান্তিপ্রিয় মানুষ। শান্তিতে বিশ্বাসী, অশান্তিতে বিশ্বাসী না। যে কারনে পৌরবাসী কাকে দিয়ে ভাল থাকবে বিবেচনা করেই বিগত দিনে যারা নেতৃত্ব দিয়েছেন তাকেও সহায়তা মামুন ভুঁইয়া সাহেব করেছেন এবং আগামী দিনেও কাকে নিয়ে নেতৃত্ব দিলে পৌরবাসী ভাল থাকবে, শান্তিতে থাকবে এটা চিন্তা করে হয়তো পৌরবাসীকে নিয়ে তিনি একটা সিদ্ধান্তে উপনিত হবেন।
ছগীর আহাম্মেদ পৌরবাসীকে উদ্দেশ্য করে মামুন ভুঁইয়ার বক্তব্যের রেশ টেনে বলেন, উনি স্পষ্ট করেছেন পৌরসভার নেতৃত্ব দিবে পৌরবাসী, নট প্রবাসি। যার সাথে পৌরসভার মাটির সম্পর্ক আছে, নাড়ির টান আছে, যে পৌরসভার নাড়ি পোতা সন্তান সেই হবে আগামী দিনে পৌরসভার মেয়র।