সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কমিটি গঠনে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার। এখানকার হাতে গোনা কয়েকজন তার অনুগামী আইনজীবী বাদে অধিকাংশ বিএনপি পন্থী আইনজীবীরা দাবি তুলেছেন নির্বাচনের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে জেলা আইনজীবী ফোরামের কমিটি গঠন করা হোক। তৈমূর আলমের পক্ষ থেকে অনৈতিক দাবি তোলা হয়েছে যেনো সমঝোতার মাধ্যমে ফোরামের কমিটি গঠন করা হোক। তারা নির্বাচন ভোটাধিকার প্রয়োগ চান না।
এদিকে বিএনপি পন্থী আইনজীবীরা বলছেন- বিএনপির মুল আন্দোলন এখন গণতন্ত্রের পক্ষে। গণতন্ত্র পূণরুদ্ধার আন্দোলন করতে গিয়ে বিএনপির লাখ লাখ নেতাকর্মী সারাদেশে কয়েক হাজার মামলায় আসামি হয়েছেন। অনেক ত্যাগ স্বীকার করছেন নেতাকর্মীরা। তৈমূর আলম খন্দকারও টিভি টকশোতে কখনও বা সভা সমাবেশে গণতন্ত্রের পক্ষে ভোটাধিকার প্রয়োগের পক্ষে জোরালো বক্তব্য রাখছেন। গণতন্ত্রের পক্ষে কথার ফুলঝুড়ি ছড়ানো তৈমূর আলম খন্দকার নিজ দলের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চান না। আইনজীবী ফোরামের কমিটি গঠনে তিনি গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন।
সম্প্রতি জানাগেছে, নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে বিএনপির আইনজীবীদের মধ্যে অনানুুষ্ঠানিক আলোচনা হয়। ওই আলোচনায় অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকারের পক্ষে ইতিমধ্যে ৬ সদস্য বিশিষ্ট গঠিত কমিটির নেতা অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাস একটি অনৈতিক দাবি তুলে প্রস্তাব দেন। তিনি প্রস্তাব দেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কমিটি গঠনে নির্বাচনের কোন প্রয়োজন নেই। সকলে বসে সমঝোতার মাধ্যমে কমিটি গঠন করা হোক। তার এমন অনৈতিক প্রস্তাবের বিষয়টি পরদিন স্থানীয় একটি পত্রিকায় প্রকাশিত হলে তা নিয়ে কঠোর সমালোচনা হয় আইনজীবীদের মাঝে।
এর আগে সাখাওয়াত অনুগামী আইনজীবীরা নির্বাচনের দাবিতে সভা করেছেন। অন্যদিকে তৈমূর আলমের অনুগামীরা সভা করে সমঝোতার মাধ্যমে কমিটি গঠনের জন্য ৬ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করেছেন। বিষয়টি আইনজীবীদের মাঝে হাস্যরসের সৃষ্টি হয়েছে। কারন একপক্ষ ভোটের মাধ্যমে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত আর তৈমূর পন্থীরা সমঝোতার করার জন্য কমিটি গঠন করলো। যে কমিটির অন্যতম নেতা আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাস।
কারন আইনজীবীরা বলছেন- দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হলে আগে নিজেদের দলের মধ্যেও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। যেখানে দুচারজন বাদে সকলেই চান ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে কমিটি গঠন করা হোক সেখানে তৈমূর আলম খন্দকার গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। যেখানে সবার আগে তিনিই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কমিটি গঠনের দাবি তোলা উচিত। অথচ তিনি জোর করে অযোগ্য অজনপ্রিয় বিতর্কিতদের কমিটির শীর্ষ পদে রাখতে এমন অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে যাচ্ছেন বিএনপির শীর্ষ আইনজীবীদের। তিনি বিএনপির সকল আইনজীবীদের অভিভাবক হিসেবে ভুমিকা না নিয়ে তিনি গুটিকয়েকজনের একটি গ্রুপের পক্ষ নিয়ে নিজের অবস্থান নারায়ণগঞ্জ কোর্ট থেকে শূণ্যের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন। এভাবে চলতে থাকলে নারায়ণগঞ্জ আদালতপাড়ায় তৈমূর আলম খন্দকারের নাম নেয়ার মত কোন আইনজীবী থাকবে কিনা সন্দিহান।
অন্যদিকে জানাগেছে, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সদস্য সংগ্রহ ফরম দুইভাগে বিতরণ ও পূরণ করা হয়েছে। একটি পক্ষে ছিলেন তৈমূর আলম খন্দকার ও অপর পক্ষে ছিলেন সাখাওয়াত হোসেন খান। ৮৬ জন আইনজীবীর সদস্য ফরম পূরণ করে কেন্দ্রে জমা দিয়েছেন তৈমূর আলম খন্দকার নিজ হাতে। অথচ সাখাওয়াত হোসেন খানের বলয় থেকে তার পক্ষে ১৫২ জন আইনজীবীর সদস্য ফরম কেন্দ্রে জমা দিয়েছেন। সুতরাং এতেই স্পষ্ট হয়ে যায় যে, দিগুণ আইনজীবী রয়েছেন সাখাওয়াত বলয়ে। আর নির্বাচন হলে যদিও এটাই দৃশ্যমান থাকে তাহলে তৈমূর আলমের অনুগামী কোন আইনজীবীর জয়ের সম্ভাবনা ক্ষীণ। মুলত সেই ভয়েই নির্বাচনে যেতে চাচ্ছেন না তৈমূর আলম। তিনি চাচ্ছেন সমঝোতার মাধ্যমে আকুতি মিনতি করে তার পক্ষ থেকে একজনকে শীর্ষ পদে অধিষ্ট করতে। এতেও তার দৈন্যদশার প্রমাণ মিলে যায়।
এর আগে নারায়ণগঞ্জ আদালতপাড়ায় বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও মহানগর বিএনপির সভাপতি সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট আবুল কালাম অনশন কর্মসূচি পালন করেছিলেন। সেই কর্মসূচিতে এই বর্ষিয়ান নেতা সহ উপস্থিত ছিলেন মাত্র ২১ জন আইনজীবী। তারপরেও তাদের হদিস খুলেনি। তাদের অবস্থান দিনকে দিন নিচের দিকেই যাচ্ছে সেটার কারনও তারা খতিয়ে দেখছেনা বলে খোদ তার অনুগামীদেরই দাবি।