সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের আওতাধীন ৮টি ইউনিট কমিটি ঘোষণার পর তুলকালাম কান্ড ঘটছে। কমিটি গঠনের পর পদবঞ্চিতদের তুমুল আন্দোলনের মুখে ইতিমধ্যে ইউনিটের শীর্ষ দুই নেতাকে অব্যাহতি দিয়েছেন জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মশিউর রহমান রনি ও সেক্রেটারি খায়রুল ইসলাম সজীব। একজনকে বিবাহিত হওয়ার অভিযোগে অন্যজনকে এসএসসি পরীক্ষার সনদপত্র জালিয়াতির অভিযোগে অব্যাহতি দেয়া হয়। তবে নেতাকর্মীরা কমিটি নিয়ে পদবানিজ্যের অভিযোগের পর নিয়মিত বিক্ষোভ মিছিল করে আসছেন। গত এক সপ্তাহ যাবত এই বিক্ষোভ মিছিল করছেন পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা।
জানাগেছে, গত অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহে জেলা ছাত্রদলের আওতাধীন ৮টি ইউনিট কমিটির অনুমোদন দেয়া হলেও রহস্যজনক কারনে তা প্রকাশ করা হয় গত ২ নভেম্বর রবিবার গভীর রাতে।
জেলার ৮টি ইউনিট হলো- ফতুল্লা থানা, সরকারি মুড়াপাড়া ডিগ্রি কলেজ, সোনারগাঁ ডিগ্রি কলেজ, তারাব পৌর ছাত্রদল, কাঞ্চন পৌর ছাত্রদল, আড়াইহাজার পৌর ছাত্রদল, গোপালদী পৌর ছাত্রদ, সরকারি সফর আলী ভূঁইয়া কলেজ কমিটি।
কমিটির মধ্যে ফতুল্লা থানা ছাত্রদলের আহ্বায়ক করা হয়েছে মেহেদী হাসান দোলন, সদস্য সচিব করা হয় রাকিব আহমেদ রিয়াদ, সরকারি মুড়াপাড়া কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক শাওন ভূঁইয়া শাকিল, সদস্য সচিব আকিব হাসান, সোনারগাঁ ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের আহবায়ক আব্দুর রহিম, সদস্য সচিব রিফাত সরকার, তারাব পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক কাজী রাজন, সদস্য সচিব আনিসুর রহমান নাবির, কাঞ্চন পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক পাভেল মিয়া, সদস্য সচিব তন্ময় হাসান, আড়াইহাজার পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক ইয়াসিন মিয়া, সদস্য সচিব মামুন মিয়া, গোপালদী পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক আবুল বাশার সুমন, সদস্য সচিব সাইফুল ইসলাম, সরকারি সফর আলী ভূঁইয়া কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক মঞ্জুরুল হক কাকন, সদস্য সচিব হৃদয় মিয়াকে দায়িত্ব দেয়া হয়।
তবে এসব কমিটি গঠনের পর বানিজ্যের অভিযোগ তুলে ফতুল্লায় নিয়মিত আন্দোলন করে আসছেন ছাত্রদলের পদ বঞ্চিত নেতাকর্মীরা। ফতুল্লায় ইতিমধ্যে মশিউর রহমান রনিকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করেছেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। একই সঙ্গে রূপগঞ্জের কমিটি গঠনেও এমন অভিযোগ তোলা হয়। এ ছাড়াও কমিটিতে অছাত্র, বিবাহিত ও ছাত্রদলের রাজনীতিতে নেই এমন সব লোকজনকে শীর্ষ পদে রাখার অভিযোগ ওঠেছে।
অন্যদিকে জানাগেছে, মুলত অনেক আগেই ফতুল্লা ও এর আশপাশের কমিটিগুলো এককভাবে করেছেন মশিউর রহমান রনি। সোনারগাঁয়ের কমিটিগুলোর নিয়ন্ত্রক খায়রুল ইসলাম সজীব। দুজনের মধ্যে ভাগাভাগি করেই তারা কমিটি গঠন করছেন। মুলত দলীয় লোকজনদের চেয়ে তাদের দুজনের ব্যক্তিগত পছন্দের লোকজনকে অগ্রাধিকার দিয়ে এই কমিটি গঠন করা হয়। পরবর্তীতে নানা সমালোচনার পর তারাব পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক থেকে কাজী রাজনকে অব্যাহতি দেন রনি ও সজীব। একইভাবে ভূয়া এসএসসি সনদপত্র দিয়ে ফতুল্লা থানা ছাত্রদলের সদস্য সচিব বানানো হয় রিয়াদকে। আন্দোলনের মুখে তাকেও অব্যাহতি দিতে বাধ্য হয় জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ও সেক্রেটারি।
ভিন্ন সূত্রে জানাগেছে, জেলা ছাত্রদলের ১২ সদস্য বিশিষ্ট আংশিক কমিটি থাকলেও এসব কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে বাকি দশজনের কোন মতামত গ্রহণ করা হয়নি। যে কারনে রনি ও সজীবের বিরুদ্ধে এসব আন্দোলনের পিছনে ওই দশজন নেতাদের মধ্যে কারো কারো অনুগামীরাই আন্দোলন করছেন। মুলত বাকি দশজনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে নিজেদের মনগড়া কমিটি গঠন করেছেন রনি ও সজীব। যে কোন সময় এককভাবে সজীবের পছন্দে সোনারগাঁও থানা ও পৌর ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা করা হতে পারে।