সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ সোনারগাঁও পৌরসভার নির্বাচনকে সামনে রেখে পৌরবাসীর মাঝে নানা আলোচনা চলছে। ২০১১ সাল থেকে দুই মেয়াদে পৌরসভার মেয়র পদে দায়িত্ব পালন করে আসছেন মেয়র সাদেকুর রহমান। ২০১১ সালে আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থী গাজী মজিবুর রহমানকে পরাজিত করে মেয়র হোন সাদেকুর রহমান। ওই নির্বাচনে এখানে বিএনপি-জামাত সমর্থিত প্রার্থী ছিলেন সাদেকুর রহমান।
গত ২০১৫ সালের নির্বাচনে বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী মোশারফ হোসেন ও আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এটি ফজলে রাব্বীকে পরাজিত করে আবারো মেয়র নির্বাচিত হোন সাদেকুর রহমান। পৌর এলাকায় উল্লেখ্যযোগ্য তেমন কোন উন্নয়নই করতে পারেননি সাদেকুর রহমান যা পৌরসভার বিভিন্ন এলাকার রাস্তাঘাটের দিকে তাকালেই বুঝা যায়।
এদিকে পৌরবাসীর মাঝে নতুন করে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে গত নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী এটি ফজলে রাব্বীকে পরাজিত করে এবং সাদেকুর রহমানকে বিজয়ী করে পৌরসভার কি লাভ হয়েছে। সাদেকুর রহমানকে যারা নির্বাচিত করেছিলেন গত ৬ নভেম্বর সেই গোয়ালদি এলাকায় এক মতবিনিময় সভাতেই চরম ক্ষোভ ফুটে ওঠেছে। কারন দীর্ঘ ৫টি বছরে পৌরবাসী মেয়র সাদেকুর রহমানের ছায়াও তেমন একটা দেখতে পায়নি। জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা, উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় তার উপস্থিতি দেখাই যায়নি। অথচ ফজলে রাব্বী ওই বছর মেয়র নির্বাচিত হলে ৫টি বছর পৌরবাসী পেতো একজন জনপ্রতিনিধি।
২০১১ সাল থেকেই পৌরসভা চলে যায় সাদেকুর রহমানের ৪ খলিফার নিয়ন্ত্রণে। যারা মুলত পৌরসভার সকল কাজ নিয়ন্ত্রণ করতেন। এ নিয়ে তুমুল সমালোচনা থাকলেও গত নির্বাচনে রাজনৈতিক কারনে আবারো মেয়র নির্বাচিত হয়ে যান সাদেকুর রহমান।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, গত নির্বাচনে মুলত নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের আওয়ামীরীগের এমপি নজরুল ইসলাম বাবুর ভগ্নিপতি অ্যাডভোকেট এটি ফজলে রাব্বী নৌকা প্রতীক পান। ২০১৪ সাল থেকে সোনারগাঁয়ের সকল কিছুর নিয়ন্ত্রক জেলার প্রভাবশালী এমপি একেএম শামীম ওসমান ও স্থানীয় জাতীয়পার্টির এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা। তাদের ধারণা ছিল পৌরসভায় ফজলে রাব্বী মেয়র নির্বাচিত হলে সোনারগাঁয়ে এমপি নজরুল ইসলাম বাবুর রাজনৈতিক প্রভাব সৃষ্টি হবে।
এতে এমপি শামীম ওসমান ও এমপি খোকার কর্তৃত্ব এখানে খর্ব হতে পারে। যে কারনে এমপি শামীম ওসমান ও এমপি খোকা পরোক্ষভাবে সাদেকুর রহমানের পক্ষেই কাজ করেছিলেন। যা সম্প্রতি স্পষ্ট হয়ে গেছে নাগরিক কমিটির মেয়র প্রার্থী ডালিয়া লিয়াকতের বক্তব্যে। তিনি একটি অনুষ্টানে দাবি করেছেন গত নির্বাচনে তিনি সাদেকুর রহমানের জন্য ভোট প্রার্থনা করেছিলেন।
কিন্তু বর্তমানে পৌরবাসীর অনেকেই মতামত ব্যক্ত করেছেন, গত নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী ফজলে রাব্বীকে জনগণ পরাজিত করে লোকসান গুণেছেন। কারন এখানে ফজলে রাব্বী মেয়র নির্বাচিত হলে সোনারগাঁয়ে রাজনৈতিক প্রভাব সৃষ্টি করার জন্য এমপি নজরুল ইসলাম বাবু অনেক কাজ ভাগিয়ে আনার চেষ্টা করতেন। যাতে করে পৌরসভায় মেয়র পদে ফজলে রাব্বী শক্ত অবস্থানে থাকতেন এবং নজরুল ইসলাম বাবুও সোনারগাঁয়ে রাজনৈতিকভাবে পদচারণা বাড়াতেন।
এতে রাজনৈতিক কারনে এমপি শামীম ওসমান ও এমপি লিয়াকত হোসেন খোকার কর্তৃত্ব খর্ব হলেও পৌরবাসী পেতো সেরা উন্নয়ন। কিন্তু নির্বাচন আসলে সাধারণ মানুষ হয়ে যান অসাধারণ, তারা নিজেরাই বড় পলিটিশিয়ান সেজে যান। যে কারনে আবারো সাদেকুর রহমানকেই তারা ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেন। কিন্তু সাদেকুর রহমান যে কাঙ্খিত উন্নয়নের কিছুুই করতে পারেনি সেটা পৌরবাসী হারে হারে টের পেয়েছেন।