সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত ভাষা সৈনিক ও মুক্তিযোদ্ধা মরহুম একেএম শামসুজ্জোহার ৩২তম মৃত্যুবার্ষিকীতে মাসদাইরে কবরস্থানে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলা
আইনজীবী সমিতি। ২০ ফেব্রুয়ারি সকালে নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ মোহসীন মিয়ার নেতৃত্বে আইনজীবী সমিতির আইনজীবীরা এই শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আলী আহাম্মদ ভূ্্ঁইয়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, আপ্যায়ণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মনিরুজ্জামান কাজল, লাইব্রেরী সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুবাস বিশ্বাস, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সাজ্জাদুল হক সুমন, সমাজ সেবা সম্পাদক অ্যাডভোকেট রাশেদ ভূ্ইঁয়া, কার্যকরী সদস্য অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নান ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট দিলীপ বিশ্বাস, অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দীন, অ্যাডভোকেট আলী আকবর, অ্যাডভোকেট দেলোয়ার হোসেন প্রধান সুজন সহ অন্যান্য আইনজীবীগণ।
এদিকে বুধবার বাদ আসর উত্তর চাষাঢ়ায় ঐতিহ্যবাহী হীরা মহলে শামসুজ্জোহার আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। দোয়ায় একেএম শামসুজ্জোহা আত্মার মাগফেরাত কামনা এবং তাঁর সহধর্মিনী মিসেস নাগিনা জোহা, বড় ছেলে প্রয়াত নাসিম ওসমানের আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয়। পাশাপাশি এমপি সেলিম ওসমান ও এমপি শামীম ওসমানের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে দোয়া প্রার্থনা করা হয়েছে। এখানেও নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির এসব আইনজীবী নেতা সহ কয়েকশ আইনজীবী অংশগ্রহণ করেন।
এ দোয়া মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন- প্রয়াত শামসুজ্জোহার মেঝ ছেলে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান, ছোট ছেলে নারায়ণগঞ্জ-৪ সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান, নারায়ণগঞ্জ-৩ সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা, নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ, সাবেক নারী সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট হোসনে আরা বেগম বাবলী, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের জাতীয় পরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান দিপু, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা, শামীম ওসমানের পুত্র অয়ন ওসমান, নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট হাবিব আল মুজাহিদ পলু, মহানগর জাতীয় পার্টির আহবায়ক সানাউল্লাহ সানু, সদস্য সচিব আকরাম আলী শাহীন, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাস, ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগ সভাপতি এম সাইফুল্লাহ বাদল, মহানগর আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি চন্দন শীল, সহ-সভাপতি রবিউল হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক শাহনিজাম, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এহসানুুল হাসান নিপু, সাবেক সভাপতি শেখ সাফায়েত আলম সানি, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান সুজন, সাবেক সহ-সভাপতি মিনহাজুল ইসলাম রিয়াদ, অ্যাডভোকেট আলী আকবর, নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদ প্রধান, বিএনপির নেত্রী দিলারা মাসুদ ময়না, কলাগাছিয়া ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সভাপতি বাচ্চু মিয়া, ১৯নং ওয়ার্ড জাতীয় পার্টির সভাপতি পলি বেগম, জেলা শ্রমিক পার্টির আহবায়ক আবুল খায়ের ভূইয়া, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফয়সাল আহম্মেদ সাগর, ২০নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর বিএনপি নেতা গোলাম নবী মুরাদ, ২১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মহানগর বিএনপির দপ্তর সম্পাদক হান্নান সরকার, ২২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর বিএনপি নেতা সুলতান আহম্মেদ, ২৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইফুদ্দিন আহম্মেদ দুলাল প্রধান, ২৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর বিএনপি নেতা এনায়েত হোসেন, ২৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শামসুজ্জোহা, বন্দর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এহসান উদ্দিন, মদনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এমএ সালাম, শামসুজ্জোহা এমবি ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মঈন উদ্দিন আহম্মেদ সহ সকল ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডের সদস্যবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।
এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়, মরহুম একেএম সামসুজ্জোহা ছিলেন ভাষা সৈনিক স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত(মরনোত্তর) ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর। তিনি মহান ভাষা আন্দোলন, ১১ দফা, ৬ দফা, মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম সংগঠক। তিনি ১৯৭০ সালে গণপরিষদ ও ১৯৭৩ সালে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে ছিলেন। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের বিজয় লগ্নে ১৯৭১ সনের ১৬ই ডিসেম্বর জাতির জনকের পরিবারকে (বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাসহ) বন্দী দশা থেকে মুক্ত করতে গিয়ে ঢাকায় হানাদার বাহিনী কর্তৃক গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন।
নারায়ণগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী ‘বায়তুল আমান’-এ জন্ম হওয়া বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন। মহান ভাষা আন্দোলনে তাঁর পরিবারে ৫ জন সদস্য এক সাথে কারাবন্দী হয়ে ছিলেন। স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে তিনি আদমজী জুট মিলসহ চিত্তরঞ্জন কটন মিলস্,আর্দশ কটন মিল লক্ষ্মী নারায়ণ কটন মিলস, লতিফ বাওয়ানী কটন মিলস, ঢাকা কটন মিলস পুন:র্গঠন করে ছিলেন। তিনি নারায়ণগঞ্জ টেক্সটাইল ম্যানেজমেন্ট বোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু স্ব-পরিবারে নিহত হওয়ার পর তিনি খুনি চক্রের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে দীর্ঘ দিন কারাভোগ করেন। ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ ক্লথ মার্চেন্টস এসোসিয়েশন প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৭৮ সালে তিনি নারায়ণগঞ্জ টাউন কো-অপারেটিভ ব্যাংকের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, মরহুম একেএম শামসুজ্জোহার সহধর্মিনী মরহুম নাগিনা জোহা ছিলেন ভাষা সৈনিক। তিনি রতœগর্ভা মা পুরস্কারে ভূষিত হয়ে ছিলেন। তাঁর ৩ ছেলের মধ্যে বড় ছেলে প্রয়াত নাসিম ওসমান ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন ৪বার নির্বাচিত সংসদ সদস্য, মেঝ ছেলে সেলিম ওসমান একই আসনে দ্বিতীয় মেয়াদে সংসদ সদস্যের দায়িত্ব পালন করছেন এবং ছোট ছেলে শামীম ওসমান নারায়নগঞ্জ-৪ আসনে তৃতীয় মেয়াদে সংসদ সদস্যের দায়িত্ব পালন করে চলেছেন।