সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনে আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান বলেছেন, ‘বিদায় নিতে চেয়েছিলাম। এখন দেখলাম স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পরে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙা হচ্ছে। সুতরাং বিদায় নেওয়ার সময় হয় নাই। ষড়যন্ত্রকারীদের বিদায় দেওয়ার জন্য আরও কঠিনভাবে নামবো। এত কঠিনভাবে নামবো যে, আপনার বাপ-দাদারা, পাকিস্তানি বাহিনী নাকে খত দিয়ে পাকিস্তান গিয়েছিল কিন্তু আপনারা পাকিস্তানও যাইতে পারবেন না। প্রধানমন্ত্রীর কথাও শুনবো না। নাকে খতের সাথে সাথে মাটিতে পুতে দেবো।’
২৮ ডিসেম্বর সোমবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের বন্দর ঘাট সংলগ্ন সুরুজ্জামান টাওয়ারে অনুষ্ঠিত এক কর্মীসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের ব্যানারে এই কর্মীসভা অনুষ্ঠিত হয়।
শামীম ওসমান আরও বলেন, ‘কাউন্সিলররা, চেয়ারম্যানরা উপস্থিত আছেন। নারায়ণগঞ্জ শহরে ট্রেন সাতাশবার যায়, সাতাশবার আসে। নারায়ণগঞ্জ শহর তো আর শহর না, এই একটা যানজট। শহর দিয়া হেঁটেও যাওয়া যায় না। ডাবল রেললাইন হলে এই নারায়ণগঞ্জে চলাচল করা আরও মুশকিল হয়ে যাবে। আমি রেলমন্ত্রীকে প্রস্তাব দিয়েছিলাম, শহরে রেলওয়ের বিশাল জায়গায় রেলওয়ের হাসপাতাল কিংবা সুপার মার্কেট করার। আর চাষাঢ়া পর্যন্ত রেললাইন রাখার।’
তিনি বলেন, ‘সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্বে যিনি আছেন তাকে বলবো, আমরা উন্নয়ন করতে চাই। সিটি কর্পোরেশনকে অনুরোধ করছি, সাংসদ সেলিম ওসমানকেও অনুরোধ করতেছি। টাকা লাগলে ১০০-২০০ কোটি টাকা আমি এনে দিবো। সব দলেই ভালো, খারাপ মানুষ আছে। দেশকে যারা ভালোবাসের তাদেরকে এক হতে হবে। মানুষ শান্তিতে থাকতে চায়। তাই ভালো মানুষগুলোকে এক হতে হবে।’
পঞ্চায়েত ব্যবস্থা চালুর প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের কর্মীসভা আমি করবো না। আমি সাধারণ মানুষের নিয়ে সভা করবো। দেশটাকে ধ্বংস করে দেওয়ার খেলা হচ্ছে। আমরা দেশটাকে আফগানিস্তান, সিরিয়া হতে দেবো না। কে কী পেলাম সেটা দেখার বিষয় না। কাউকে তো আওয়াজ তুলতে হবে। এই কাজ তো আমার না। আমি তো মহানগর আওয়ামী লীগের ছোট্ট একটা সদস্য। তাও আবার রাখতেও পারে, ফালাইয়াও দিতে পারে। এই কাজ তো জেলা আওয়ামী লীগ, মহানগর আওয়ামী লীগের দায়িত্ব। এই কাজ তো নারায়ণগঞ্জের মেয়র সাহেবের দায়িত্ব। যারা মজা করে, খান-দান, ঘুরে বেড়ান। আমি মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে কেবল আমার দায়িত্ব পালন করছি। অনেক কিছু বলতে চেয়েও বলতে পারছি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘মুজিববর্ষে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যে আঘাত করা হলো। এ আঘাত বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য বা আওয়ামী লীগের উপর পড়েনি। এ আঘাত বাংলার মুক্তিযোদ্ধাদের উপর পড়েছে। জাতির পিতা আওয়ামী লীগের সম্পদ না, বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের সম্পদ। এই আঘাত যদি সরকার পরিবর্তনের জন্য হতো তাহলে বিচলিত হতাম না। একাত্তরের পরাজিত শক্তিরা বাংলাদেশকে আফগানিস্তান, সিরিয়া বানাতে চাইছে। কারণ আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে বাংলাদেশ একটা গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান নিচ্ছে।
শামীম ওসমান বলেন, ‘বিদেশে বসে দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নামে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধেও এমন অশ্লীল ভাষায় কথা বলছে যা সহ্য করার মত না। আল্লাহ ছাড়া পৃথিবীতে কেউ পারফেক্ট না। মৌলবীদের পেছনে অনেক সুন্দর সুন্দর মানুষ আছে। ডান, বাম সব মিলিত হয়েছে। কারণ তারা প্রভুদের কাছ থেকে পয়সা নিয়েছে। বাংলাদেশকে অকার্যকর করতে। টার্গেট একটাই শেখ হাসিনা।’
বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ রশিদের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. খোকন সাহা, সহসভাপতি চন্দনশীল, সাধারণ সম্পাদক কাজিম উদ্দিন, মহানগর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন সাজনু, মহানগর স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি জুয়েল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক কাউন্সিলর সাইফুদ্দিন আহমেদ দুলাল, মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদ, সাধারণ সম্পাদক হাসনাত রহমান বিন্দু, যুবলীগ নেতা খান মাসুদ প্রমুখ।