সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ আদালতপাড়ায় বিএনপির রাজনীতিতে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে। এক সময় আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে বিএনপির প্যানেল গঠন নিয়ে কখনও অ্যাডভোকেট তৈমূর আলমের বাসায় কখনওবা ঢাকায় তৈমূর আলমের চেম্বারে দৌড়াতে হতো বিএনপির আইনজীবীদের।
এখানকার বিএনপির প্যানেল গঠনে তৈমূর আলম খন্দকারই ছিলেন সর্বেসর্বা। অবশেষে সেই রীতির অবসান ঘটিয়ে ছাড়লেন নারায়ণগঞ্জের আলোচিত আইনজীবী নেতা ও মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান।
১৩ জানুুয়ারি বুধবার বিকেলে আওয়ামীলীগ ও বিএনপির প্যানেলের প্রার্থীরা তাদের মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছেন। বিএনপির মনোনয়ন পত্র দাখিলের আগে ও পরে আদালতপাড়ায় বিএনপির আইনজীবীদের নিয়ে শোডাউনও করেছেন সাখাওয়াত হোসেন খান। সাখাওয়াত হোসেন খান দাবিও করেছেন, আমরা আওয়ামীলীগের প্যানেল জমাদানের সময় যে পরিমান আইনজীবী ছিলেন তাদের চেয়ে দিগুন আইনজীবী নিয়ে আমরা প্যানেল জমা দিয়েছি।
বিএনপির এই প্যানেল গঠনে সাখাওয়াতের পর সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেছেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ জাকির ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এইচএম আনোয়ার প্রধান। ফোরামের সভাপতি এবারও আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে সভাপতি হয়ে নিজেই প্যানেল গঠনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
নারায়ণগঞ্জ আদালতপাড়ায় বিএনপির রাজনীতির একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ সাখাওয়াত ও তার অনুগামীদের হাতে। যেখানে এক সময় তৈমূর আলম ও তার অনুগামী বেশকজন আইনজীবী ছিলেন যারা বর্তমানে আদালতপাড়ার রাজনীতি ছেড়ে জেলা ও মহানগর বিএনপির রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হয়েছেন। তাদেরকে এখন বাহিরের কর্মসূচিতেগুলোতে সক্রিয় দেখা যাচ্ছে।
বিএনপির আইনজীবীরা জানিয়েছেন, আগামী ২৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য পরিষদ প্যানেল গঠন করেছে বিএনপি। অ্যাডভোকেট সরকার হুমায়ুন কবিরকে সভাপতি ও কামাল হোসেন মোল্লাকে সাধারণ সম্পাদক করে ১৭টি পদেই প্রার্থী চূড়ান্ত করে মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছেন বিএনপির প্রার্থীরা।
১৩ জানুয়ারি বুধবার বিকেলে আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে গঠিত নির্বাচন কমিশন বরাবর প্রার্থীদের নিয়ে এই মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছেন মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান।
ওই সময় অ্যাডভোকেট নবী হোসেন, অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন সহ বিএনপির অন্যান্য সিনিয়র আইনজীবীরাও সঙ্গে ছিলেন। মনোনয়ন দাখিল করে বিএনপির আইনজীবীদের নিয়ে আদালতপাড়ায় শোডাউন করেন সাখাওয়াত হোসেন খান।
তিনি বলেন, আমরা জয়ের আশা নিয়েই হুমায়ুন-কামাল প্যানেল তৈরি করেছি। নির্বাচনে কোনো ধরণের কারচুপি কিংবা প্রভাব বিস্তার হুমকি ধমকি না দেয়া হয়, যদি নির্বাচন সুষ্ঠ হয়, আমরা ১৭টি পদেই বিজয়ী হবো। তারা ভয়ে আগেই নির্বাচন কমিশন নিজেদের মনগড়া মত গঠন করেছে। আমরা আপত্তি জানিয়ে আসছি। আমরা এখনও নির্বাচন কমিশন পূনর্গঠন চাই। আমরা শক্তিশালী প্রার্থীদের বাছাই করেই প্যানেল গঠন করেছি। আওয়ামীলীগের আইনজীবীদের চেয়ে দিগুণ আইনজীবী নিয়ে আমরা আমাদের প্যানেলের মনোনয়ন দাখিল করেছি।
প্যানেলে সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে অ্যাডভোকেট মানিক মিয়া, সহ-সভাপতি পদে অ্যাডভোকেট আনোয়ারুল আলম রিপন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট সালাউদ্দিন ভূঁইয়া সবুজ, কোষাধ্যক্ষ পদে অ্যাডভোকেট জাহিদুল ইসলাম মুক্তা, আপ্যায়ণ সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট জাহিদুর রহমান, লাইব্রেরী সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট মোহসীন শেখ, ক্রীড়া সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট অ্যাডভোকেট গোলাম সারোয়ার, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট সারোয়ার জাহান, সমাজ সেবা সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট আসমা হেলেন বিথি, আইন ও মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম, কার্যকরী সদস্য পদে অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে শুক্কুর মাহামুদ, অ্যাডভোকেট হাফিজুর রহমান মাসুদ, অ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান ও অ্যাডভোকেট জামান হোসেন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করবেন।
নির্বাাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন অ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম ভুঁইয়া। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছেন, ১১ জানুয়ারি থেকে ১৩ জানুয়ারি পর্যন্ত সকাল ১১টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত মনোনয়ন পত্র সংগহ ও দাখিলের তারখি। ১৪ জানুুয়ারি প্রার্থীতা যাচাই বাছাই ও প্রাথমিক বৈধ প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করা হবে।
১৫ জানুয়ারি থেকে ১৭ জানুয়ারির মধ্যে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করতে পারবে। ১৮ জানুয়ারি চূড়ান্ত প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করা হবে। ২৮ জানুয়ারি সকাল ৯টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আইনজীবী সমিতির নবনির্মিত ডিজিটাল বার ভবনের দ্বিতীয়।