সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের ভোট গ্রহণ আগামী ২৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। ১৮ জানুয়ারি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামীলীগ ও বিএনপির দুটি প্যানেলের ১৭জন করে ৩৪জন আইনজীবী তাদের নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন।
এদিন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানিয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় নেমেছে আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে আওয়ামীলীগ সমর্থিত মোহসীন-মাহবুব প্যানেলের ১৭ জন আইনজীবী। ১৮ জানুয়ারি সোমবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে নির্মিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রার্থীরা ফুুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন।
আদালতপাড়ায় সাধারণ আইনজীবীরা বলছেন, উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় আওয়ামীলীগ এবারও শক্তিশালী প্যানেল গঠন করেছে। নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে এবারও সভাপতি পদে অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ মোহসীন মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমানকে দিয়ে উন্নয়নের শ্লোগানে প্যানেল গঠন করা হয়।
সভাপতি পদে মোহসীন মিয়া এক দফা দায়িত্ব পালন করলেন। একইভাবে সাধারণ সম্পাদক পদে মাহবুবুর রহমানও দায়িত্ব পালন করলেন। এর আগে টানা দুইবার সেক্রেটারি ছিলেন মোহসীন মিয়া। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে ছিলেন মাহবুবুর রহমান। ওই পরিষদে সভাপতি পদে ছিলেন অ্যাডভোকেট হাসান ফেরদৌস জুয়েল। একাধারায় আলোচিত ডিজিটাল বার ভবন নির্মাণ করায় বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন এই তিন আইনজীবী নেতা।
সকল আইনজীবীদের মাঝে একজন সাদামাটা আইনজীবী হিসেবেই সুখ্যাতি রয়েছে মাহবুবুর রহমানের। দাপট দেখানো কিংবা অহমিকা তার ছায়াতেও পড়েনি। সিনিয়র আইনজীবীদের সঙ্গে তিনি বেশ সম্মানসূচক আচরণ করেন। সকলের সঙ্গে তিনি সুসম্পর্ক রেখেই আদালতপাড়ার রাজনীতি ও সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। যে কারনে সাধারণ আইনজীবীদের মাঝে বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠেছেন মাহবুবুর রহমান।
তবে সভাপতি ও সেক্রেটারি পদে জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আস্থা রেখেছেন আওয়ামীলীগের আইনজীবী নেতারা। তারা তাদের জয় নিয়ে জোরালো আশাবাদী। তবে তাদের সঙ্গে অন্যান্য পদগুলোর জয় নিশ্চিত করতে ভাল ভাল প্রার্থী খুজেছিল আওয়ামীলীগ।
যেখানে আদালতপাড়ায় ক্লিনইমেজধারী ও সকলের মাঝে সুপরিচিত অ্যাডভোকেট রবিউল আমিন রনিকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হিসেবে অধিষ্ট করা হয়েছে। তার রয়েছে রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ড। সকল আইনজীবীর মাঝে রবিউল আমিন রনির গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে বেশ। রনির মত ভাল প্রার্থী প্যানেলে থাকায় অন্যান্য পদের প্রার্থীরা ভোটের ক্ষেত্রে সুবিধা পাবেন। কারন রনি পুুরো প্যানেলের পক্ষেই ভোট প্রার্থনা করছেন।
এ ছাড়াও দীর্ঘদিন যাবত তিনি নারায়ণগঞ্জ আইন কলেজের প্রভাষক হিসেবে শিক্ষকতা করছেন। যেখানে তার হাতে তৈরি অনেক আইনজীবী রয়েছেন যারা ভোটার। এক্ষেত্রে তার ভোটের সংখ্যা আরো বেড়ে যায়। এসব কারনে আইনজীবীরা বলছেন, জনপ্রিয় সভাপতি প্রার্থী মোহসীন মিয়া ও সেক্রেটারি প্রার্থী মাহবুবুর রহমানের সঙ্গে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে রবিউল আমিন রনিকে অন্তর্ভুক্ত করায় আওয়ামীলীগের প্যানেল আরো শক্তিশালী হয়েছে।
আইনজীবীদের দাবি- নারায়ণগঞ্জের ১২’শ আইনজীবীর স্বপ্নের ডিজিটাল বার ভবন নির্মাণ কাজ চলমান। ইতিমধ্যে দোতলা ভবনের কাজ প্রায় শেষের দিকে। সম্মানজনক একটি জায়গায় বসে আইন পেশা পরিচালনার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছেন আওয়ামীলীগের আইনজীবীরা। যেখানে একমাত্র দানবীর সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমানের একক অর্থায়নে ডিজিটাল বার ভবনের নির্মাণ কাজ হচ্ছে। সহযোগীতা করেছেন এমপি শামীম ওসমানও।
আগামী ২৮ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে দ্বিতীয় বারের মত সভাপতি পদে অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ মোহসীন মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামীলীগের পূর্ণ প্যানেল নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতায় নেমেছেন।
১৭টি পদে প্রতিদ্বন্ধিতাকারী আইনজীবীদের নিয়ে একটি শক্তিশালী প্যানেল গঠন করা হয়েছে বলে মনে করছেন আওয়ামীলীগের আইনজীবীরা। তারা আশা দেখছেন এবারও ১৭টি পদেই বিজয়ী হবে আওয়ামীলীগের সমর্থিত প্যানেল। আদালতপাড়ায় বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন বর্তমান সভাপতি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ মোহসীন মিয়া ও বর্তমান সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান। যে কারনে এবারও তাদের উপরই আস্থা রেখেছেন নীতি নির্ধারণী আইনজীবী নেতারা।
আওয়ামীলীগ প্যানেলের সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে অ্যাডভোকেট বিদ্যুৎ কুমার সাহা, সহ-সভাপতি পদে অ্যাডভোকেট বরুণ চন্দ্র দে, যুগ্ম সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট রবিউল আমিন রনি, কোষাধ্যক্ষ পদে অ্যাডভোকেট মনিরুজ্জামান কাজল, আপ্যায়ন সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ স্বপন ভূঁইয়া, লাইব্রেরী সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট মাহমুদুল হক মমিন, ক্রীড়া সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট সাজ্জাদুল হক সুমন, সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট আসাদুর রহমান বিপ্লব, সমাজ সেবা সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট ইসরাত জাহান ইনা, আইন ও মানবাধিকার সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট নুসরাত জাহান তানিয়া।
এ ছাড়াও কার্যকরী সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন অ্যাডভোকেট সিরাজুল হক মিলন, অ্যাডভোকেট শরীফুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট কামরুল হাসান, অ্যাডভোকেট আবু তাহের রানা ও অ্যাডভোকেট রোমানা আক্তার।
নির্বাাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন অ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম ভুঁইয়া। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছেন, ১১ জানুয়ারি থেকে ১৩ জানুয়ারি পর্যন্ত সকাল ১১টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত মনোনয়ন পত্র সংগহ ও দাখিলের তারখি। ১৪ জানুুয়ারি প্রার্থীতা যাচাই বাছাই ও প্রাথমিক বৈধ প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করা হবে।
১৫ জানুয়ারি থেকে ১৭ জানুয়ারির মধ্যে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করতে পারবে। ১৮ জানুয়ারি চূড়ান্ত প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করা হবে। ২৮ জানুয়ারি সকাল ৯টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আইনজীবী সমিতির নবনির্মিত ডিজিটাল বার ভবনের দ্বিতীয়।