সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
পএবার জনগণের কাছে আল্লাহার দোহাই ও পায়ে পড়ে অনুরোধ করলেন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১৩নং ওয়ার্ডের জনপ্রিয় কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ। এই ওয়ার্ড থেকে তিনি টানা তিনবার কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। এবার জনগণের প্রতি তিনি করুণ আকুল আকুতি মিনতি করেছেন। তবে তিনি ভোট প্রার্থনার জন্য এই আকুতি জানাননি। তিনি জনগণকে সচেতন হতে এমন আকুতি জানান। ২৪ ফেব্রুয়ারি রবিবার বিকেলে কাউন্সিলর তার সহকারীর মাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে অনেকটা অসহায়ত্বের সুরে জনগণের কাছে অনুুরোধ এমন অনুরোধ রাখেন।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শনিবার ২৩ ফেব্রুয়ারী ১৩নং ওয়ার্ডের আমলাপাড়া আদর্শ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নারায়ণগঞ্জের-৫ আসনের এমপি সেলিম ওসমান পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থিত হলে কয়েকজন শিশু শিক্ষার্থী আমলাপাড়া চৌরাস্তার একটি ব্যক্তিগত জমিতে জমা হওয়া আবাসিক আবর্জনার বিষয়টি তুলে ধরলে এমপি সমস্যাটি সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলরের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
কাউন্সিলর বলেন, সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলর হিসাবে শিশু শিক্ষার্থীদের অভিযোগের দায় কাধে নিয়ে এমপি মহোদয়ের আদেশ পালন পূর্বক বিষয়টি সম্পর্কে শিক্ষার্থী, অভিভাবক, এলাকাবাসী ও মাননীয় এমপি মহোদয়ের সদয় জ্ঞাতার্থে দুটি কথা তুলে ধরতে চাই। নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়র ডাঃ সেলিনা হায়াত আইভীর নেতৃত্বে আমরা সবর্দা ওয়ার্ড তথা শহরকে আবর্জনা মুক্ত রাখার ব্যাপারে সচেষ্ঠ। কিন্তু সম্মানিত জনগণের সচেতনতার অভাবে আমরা বার বার ব্যর্থ হচ্ছি। এমপি মহোদয় আমলাপাড়া চৌরাস্তার যে স্থানটির কথা উল্লেখ্য করেছেন সে স্থানটি একটি পরিত্যাক্ত পাবলিক প্রপ্রার্টি।
‘২০০৫ সাল থেকে নারায়ণগঞ্জ পৌরসভা এনজিওর মাধ্যমে ঘরে ঘরে গিয়ে গৃহস্থালি আবর্জনা সংগ্রহ করা শুরু করলেও কতিপয় জনগণ যেখানে সেখানে আবর্জনা ফেলা অব্যাহত রাখে। গত বছর আমলাপাড়া চৌরাস্তার জায়গাটিতে যেন আবর্জনা ফেলতে না পারে সেজন্য আমি জায়গাটি পরিস্কার করে ফুলের গাছ ও অনেক গুলো সচেতনতা মূলক বিলবোর্ড স্থাপন করি। কিন্তু কিছুতেই মানব চরিত্র পরিবর্তন করা সম্ভব হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, আবর্জনা বিষয়ে যে স্কুলের ছোট সোনামনিরা এমপি মহোদয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন সে স্কুল সহ আশে পাশের আরো কয়েকটি স্কুলের সম্মানিত অনেক অভিভাবকও সকালে বাচ্চাকে স্কুলে দিয়ে যাওয়ার সময় পলিথিন ভর্তি আবর্জনা উক্ত স্থানে ফেলে যান। শুধু আমলাপাড়াবাসী নয়, উক্ত রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী অন্যান্য ওয়ার্ড থেকে আসা অভিভাবকরাও এই কাজটি করেন। এ তথ্যাটি আমি দায়িত্ব নিয়ে ও বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে দিলাম।’
‘আজ আমি আলোচিত স্থানটি পরিস্কার করে চারদিকে ৬ ফুট উচু টিনের বেড়া দেয়ার ব্যবস্থা করেছি। কিন্তু হলফ করে বলতে পারি আগামী মাসে একই অবস্থার সৃষ্টি হবে। শুধু আমলাপাড়াই নয় সারা ওয়ার্ড তথা শহর জুড়েই বৈদ্যুতিক খুঁটির নীচে ও রাস্তার যেখানে সেখানে যখন তখন আবর্জনা ভর্তি পলিথিন পরে থাকে। অনেকে তাদের বাড়ীর নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত ভাঙ্গা ইট, বালি, টাইলস ভাঙ্গা, পাথর ও নির্মাণ সামগ্রীর অবশিষ্টাংশ বস্তায় ভরে রাস্তায় ফেলে রাখেন। জামতলা এলাকা সহ ওয়ার্ডেও বিভিন্ন স্থানে ব্যাংঙের ছাতার মতো গড়ে উঠা রেষ্টুরেন্টগুলোও যেখানে সেখানে রাতের আধারে আবর্জনা ফেলে পরিবেশ নষ্ট করছে। তাদের অনেকবার অনুরোধ ও সাবধান করেও সুফল পাওয়া যাচ্ছে না।’
জনপ্রিয় এই কাউন্সিলর আরও আক্ষেপ প্রকশ করে বলেন, ‘অনেকে বাড়ীঘর নির্মাণের ইট, বালি ড্রেনের উপড় রাখেন। সেই বালি ড্রেনে গিয়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করে। অনেক অনুরোধ করে বলেছি বালি রাখার আগে পলিথিন বিছিয়ে নিতে। কিন্তু কোন কাজ হয় না। কার কথা কে শোনে অবস্থা। সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ ও কর্মচারীরা তাদের সীমিত সামর্থ্য ও লোকবল নিয়ে সাধ্যের চেয়েও বেশী কাজ করেও ভাল ফলাফল আনতে পারছে না শুধু মাত্র জনগনের একাংশের অসচেতনতা ও অসহযোগিতার কারনে। পরিছন্ন নগর গড়ার দায়িত্ব প্রাপ্ত হয়ে না করতে পারার ব্যার্থতা কাধে নিয়ে বলতে চাই এর জন্য নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসাবে দায় স্বীকার করলেও এর মূলদায় অসচেতন জনগণের। আমি জনগণের পায়ে ধরে আল্লাহর দোহাই দিয়ে একটি অনুরোধ করতে চাই, দয়া করে আপনারা সচেতন হোন। আমাদের সহায়তা করুন যাতে একটি বাসযোগ্য ওয়ার্ড তথা আধুনিক নারায়ণগঞ্জ গড়তে পারি। মনে রাখা দরকার প্রথমেই আমাদের নিজেদের পরিবর্তন হওয়া দরর্কা তবে শহরের পরিবর্তন ঘটবে।’