সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
আগামী ২৮ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। আওয়ামীলীগের বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ সমর্থিত সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ প্যানেলে সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন বর্তমান সভাপতি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ মোহসীন মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক পদে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান।
মোহসীন-মাহবুব প্যানেলের প্রতি পূর্ণ সমর্থন প্রকাশ করেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগ। এ লক্ষে ২৪ জানুয়ারি রবিবার থেকে ২৫ জানুুয়ারি সোমবারও নারায়ণগঞ্জ আদালতপাড়ায় জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগ সহ এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের হাজারো নেতাকর্মীরা আওয়ামীলীগের প্যানেলের ১৭ জন প্রার্থী ও আওয়ামীলীগের আইনজীবীদের নিয়ে শোডাউন করেছেন। এতে চাঙ্গা হয়ে ওঠেছে মোহসীন-মাহবুব প্যানেলের প্রার্থীরা। কারন মোহসীন-মাহবুব প্যানেলের পক্ষে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতারা সহ যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ, ছাত্রলীগ, শিক্ষানবিশ আইনজীবী ও আইন কলেজের শিক্ষার্থীরাও। তারা আদালতপাড়ায় নিয়মিত শোডাউন করছেন। এসব কারনে আইনজীবীদের মাঝে মোহসীন-মাহবুব প্যানেলের আওয়াজ ওঠেছে।
আগের দিন রবিবার নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদল ও মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহার নেতৃত্বে আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের হাজারো নেতাকর্মীদের এই শোডাউন করা হয়। শোডাউন শেষে সমাবেশও করেছেন।
ওই সময় মহানগর আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি চন্দন শীল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহনিজাম, মহানগর যুবলীগের সভপতি শাহাদাত হোসেন সাজনু, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এহসানুল হাসান নিপু, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাফায়াত আলম সানি, সাবেক সেক্রেটারি মিজানুর রহমান সুজন, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আজিজুর রহমান আজিজ, সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসমাঈল রাফেল প্রধান, মহানগর ছাত্রলীেগের সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদ প্রধান, মহানগর কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান লিটন, যুবলীগ নেতা জানে আলম বিপ্লব সহ শীর্ষ পর্যায়ের অনেক নেতারাই উপস্থিত ছিলেন।
আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের বিষয়ে বিএনপির আইনজীবীরা সমালোচনা করায় তার কঠোর জবাব দিয়েছেন অ্যাডভোকেট খোকন সাহা। তিনি বলেছেন, দুএকটি পত্রিকায় লিখেছে শাহনিজাম সাজুনরা বহিরাগত। আমরা বলতে চাই তারা বহিরাগত নয়, আপনাদের বিএনপির গডমাদার তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে, তাই নিজাম-সাজনুরা আদালতে হাজিরা দিতে এসেছেন। নির্বাচনের কারনে কি বিচারপ্রার্থীরাও আদালতে আসবে না?
খোকন সাহা আরও বলেন, আপনারা বলেছেন হাত পা ভেঙ্গে দিবেন। এই বক্তব্যে আপনাদের অতীত মনে করিয়ে দিলেন। বিএনপি জামাত জোট সরকার আমলে আপনারা আমাদের দুই আইনজীবীকে মারধর করে হাত পা ভেঙ্গে দিয়েছিলেন। আদালতপাড়া থেকে গুলি ছুড়েছিলেন। শহীদ বাদলকে তুলে নিয়ে গিয়েছিলেন। অস্ত্রের ভয় দেখিয়েছিলেন। আমি দুই বছর আদালতে আসতে পারিনি। আমরা এসব ভুলিনি। আপনাদের মত আচরণ আমরা করিনি। আপনারা এই আমলেও আগুন দিয়ে পেট্রোল দিয়ে মানুষ মেরেছেন। আপনাদের বিরুদ্ধে নাশকতার মামলা আছে। আপনারা মানুষ মারেন।
সোমবারও সভাপতি প্রার্থী মুহাম্মদ মোহসীন মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মাহবুবুর রহমানের নেতৃত্বে পূর্ণ প্যানেল এই শোডাউনে অংশগ্রহণ করেন। শোডাউনে আইনজীবীদের সঙ্গে আরো ছিলেন জেলা আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট এসএম ওয়াজেদ আলী খোকন ও সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মাসুদ উর রউফ।
আগের দিন সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ শহরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে কয়েকশ আইনজীবীদের উপস্থিতিতে মোহসীন-মাহবুব প্যানেলের পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই পরিচিতি সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের জাতীয়পার্টির সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান। পরিচিতি সভায় তিনি বলেছেন, মোহসীন-মাহবুব প্যানেল নির্বাচিত হলে আইনজীবীদের স্বপ্নের ডিজিটাল বার ভবন নির্মাণের বাকি কাজ সম্পন্ন করা হবে।
অন্যদিকে জানাগেছে, গত ১৮ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে নির্মিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করে আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে আওয়ামীলীগ সমর্থিত মোহসীন-মাহবুব প্যানেলের ১৭ জন আইনজীবী।
আওয়ামীলীগ প্যানেলের সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে প্রার্থী রয়েছেন অ্যাডভোকেট বিদ্যুৎ কুমার সাহা, সহ-সভাপতি পদে অ্যাডভোকেট বরুণ চন্দ্র দে, যুগ্ম সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট রবিউল আমিন রনি, কোষাধ্যক্ষ পদে অ্যাডভোকেট মনিরুজ্জামান কাজল, আপ্যায়ন সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ স্বপন ভূঁইয়া, লাইব্রেরী সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট মাহমুদুল হক মমিন, ক্রীড়া সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট সাজ্জাদুল হক সুমন, সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট আসাদুর রহমান বিপ্লব, সমাজ সেবা সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট ইসরাত জাহান ইনা, আইন ও মানবাধিকার সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট নুসরাত জাহান তানিয়া।
এ ছাড়াও কার্যকরী সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন অ্যাডভোকেট সিরাজুল হক মিলন, অ্যাডভোকেট শরীফুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট কামরুল হাসান, অ্যাডভোকেট আবু তাহের রানা ও অ্যাডভোকেট রোমানা আক্তার।