সোনারগাঁয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে বাড়ছে এমপি খোকার দাপট!

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

চলতি বছরে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের কোন জটিলতা না থাকলেও বছরের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যেই নির্বাচনগুলো সম্পন্ন হবে। সোনারগাঁও পৌরসভা নির্বাচনের আওয়াজ ওঠলেও সীমানা সংক্রান্ত জটিলতায় নির্বাচন স্থগিত। আদৌ নির্বাচন হবে কিনা কিংবা কবে হবে সেটা নির্ভর করছে আদালতের উপর।

তবে পৌরসভা নির্বাচনের আওয়াজ কমে আসলেও নির্বাচনী মাঠে এবার ১০টি ইউনিয়ন পরিষদে সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থীরা। যদিও গত নির্বাচনের চেয়ে এবার সোনারগাঁয়ে জাতীয়পার্টি ও মহাজোটের এমপি লিয়াকত হোসেন খোকার দাপট দেখা যাচ্ছে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে থেকেই।

দশটি ইউনিয়নের মধ্যে বেশকটি ইউনিয়নে জাতীয়পার্টির শক্তিশালী চেয়ারম্যান প্রার্থী রয়েছেন মাঠে। গত নির্বাচনে এখানে দুটি ইউনিয়নে জাতীয়পার্টির চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। এবারের নির্বাচনে হয়তো দশটি ইউনিয়নেই দেখা যেতে পারে জাতীয়পার্টির প্রার্থী নতুবা নৌকার প্রার্থী হলেও জাতীয়পার্টির ছাড় না পেলে জয়ের সম্ভাবনায় বাধা থাকবে।

সোনারগাঁও পৌরসভা নির্বাচনে এমপি খোকার সহধর্মিনী ডালিয়া লিয়াকতকে ইতিমধ্যে মেয়র প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। মুলত জাতীয়পার্টির নেতৃত্বে থাকলেও ডালিয়া লিয়াকতের পক্ষে বিশিষ্ট নাগরিক ও বিভিন্ন দলমতের সমর্থন থাকায় তাদেরকে নিয়ে পৌর নাগরিক কমিটি ডালিয়া লিয়াকতকে মেয়র প্রার্থী ঘোষণা করেছে। নির্বাচনে নামার সাথে সাথে সোনারগাঁও পৌরসভা নির্বাচনটি নিয়ে রাজনীতিতে ভিন্নমাত্রা যোগ হয়েছে। সীমানা জটিলতায় মামলা ও সেই কারনে নির্বাচনের তফসিল এখানে ঘোষণা করা হয়নি।

উপজেলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি ইউনিয়ন হলো মোগরাপাড়া ইউনিয়নটি। এই ইউনিয়নের বাসিন্দাই এমপি খোকা ও সাবেক এমপি আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত সহ আওয়ামীলীগ ও জাতীয়পার্টির অনেক প্রসিদ্ধ নেতারা। এখানে ত্রিপক্ষীয় নির্বাচনী আলোচনায় সোনারগাঁও পৌরসভার মতই রাজনীতির মাঠ গরম হয়ে ওঠতে পারে।

এর কারন হিসেবে জানাগেছে, মোগরাপাড়া ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক পার্টির নেতা ও জেলা জাতীয়পার্টির সদস্য কাজী নাজমুল ইসলাম লিটু। তার দাদা ছিলেন এই ইউনিয়নের একজন স্বনামধন্য চেয়ারম্যান। একটি রাজনৈতিক পরিবার থেকে ওঠে আসা কাজী লিটু। এরি মাঝে এখানে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সোহাগ রনি। এই ইউনিয়নে বর্তমানে চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন আওয়ামীলীগের হাসনাত পরিবারের সদস্য আরিফ মাসুদ বাবু। বিএনপির গত বারের ড্যামী প্রার্থী পারভেজ সাজ্জাদ চপল এবার নির্বাচনে নাই। ফলে নির্বাচন নাগাদ এখানে ত্রিপক্ষীয় রাজনীতিতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠতে পারে নির্বাচনী মাঠ।

গত নির্বাচনে উপজেলার বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ডা. আব্দুর রউফ ও শম্ভুপুরা ইউনিয়ন থেকে আব্দুর রব জাতীয়পার্টির প্রার্থী হয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হোন। বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী ছিলেন আল আমিন সরকার ও শম্ভুপুরায় নৌকার প্রার্থী ছিলেন অ্যাডভোকেট নূর জাহান। জামপুরে জাতীয়পার্টির প্রার্থী শাহ মোহাম্মদ হানিফ থাকলেও তিনি নৌকার প্রার্থী হা-মীম সিকদার শিপলুুর কাছে পরাজিত হন।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এই তিনটি ইউনিয়নে জাতীয়পার্টি থেকে তারা তিনজনই নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত রয়েছেন। তবে বৈদ্যেরবাজার ও শম্ভুপুুরায় জাতীয়পার্টির কেউ না থাকলেও জামপুর ইউনিয়নে নির্বাচনী মাঠে পুরোদমে রয়েছেন জাতীয়পার্টির নেতা আশরাফুল ভুঁইয়া মাকসুুদ। ইতিমধ্যে এমপি খোকা ও সহধর্মিনীকে নিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োন করেছেন মাকসুুদ। সেখানে তিনি বেশ শক্ত অবস্থান তৈরি করেছেন। এখানে আওয়ামীলীগেরও রয়েছে একাধিক প্রার্থী। নির্বাচনী মাঠে উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি দেওয়ান শরীফুল ইসলাম।

উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জাতীয়পার্টি থেকে নির্বাচনী আলোচনায় এখন উপজেলা জাতীয়পার্টির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান বিডিআর রফিকুল ইসলাম রফিক। একইভাবে আলোচনায় রয়েছেন জাতীয়পার্টির নেতা সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম ভুঁইয়াও। ফলে এখানেও থাকতে পারে এমপি খোকার প্রার্থী।