সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপির রাজনীতি এখন বিএনপির দুই নেতার ’বাসা বাড়ি’ ও “ল’ চেম্বার”-এ বন্ধি হয়ে পড়েছে নারায়ণগঞ্জ বিএনপি। দেশের অন্যতম রাজনৈতিক দলের কার্যালয় নেই নারায়ণগঞ্জে। যেখানে মহানগর বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট আবুল কালামের বাসা বাড়িতে অবস্থিত ‘ল’ চেম্বার’ টিকেই মহানগর বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয় হিসেবে দাবি করছেন নেতারা।
অন্যদিকে গত ৩০ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক পদে অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকারকে দায়িত্ব দিয়েছে কেন্দ্রীয় বিএনপি। তবে সেই আশা ভরসা নিয়ে তৈমূর আলমের উপর দায়িত্ব দেয়া হলো কিন্তু তিনি ফিরে যাচ্ছেন তার আমলের দিকে। সেই আমলের মতই তিনি বিএনপিকে বন্ধি করেছেন তার বাসা বাড়ি ও ল চেম্বারের ভেতরেই। দলের মিটিং হচ্ছে এখন কখনও তার বাসায় কিংবা কখনও তার চেম্বারে।
জানাগেছে, ২০১৭ সালে বিএনপির সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট আবুল কালামকে সভাপতি ও এটিএম কামালকে সেক্রেটারি মহানগর বিএনপির আংশিক কমিটির অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় বিএনপি। বছর দেড়েক পর পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি গঠনের শুরু থেকে আবুল কালামের বাসা বাড়ি শহরের কালিরবাজার এলাকায় তার ‘ল’ চেম্বারে মহানগর বিএনপির ব্যানারে কর্মসূচি পালন শুরু হয়।
মহানগর বিএনপির শীর্ষ নেতারা এখন এই খুপরে ঘরের আকারের চেম্বারটিকেই মহানগর বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয় হিসেবে দাবি করেছেন। অথচ এই সদর আসনে ৩বার এমপি হয়েছিলেন আবুল কালাম। কিন্তু মহানগর বিএনপির একটি আলিশান কার্যালয় তিনি গড়ে তুলেননি। অথচ তিনি বারবার এমপি নির্বাচিত হয়েছেন।
অন্যদিকে একই দশা নারায়ণগঞ্জ জেরা বিএনপির। ২০১৭ সালে জেলা বিএনপির কমিটি গঠনের পর সাবেক সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান মনির তার ফ্যাক্টরীর ভেতরে নিয়ে গিয়েছিলেন জেলা বিএনপিকে। বেশকটি কর্মসূচিও পালন করেছিলেন কাজী মনির। কিন্তু সেই ধারা অব্যাহত রেখেছেন বর্তমান আহ্বায়ক তৈমূর আলম। ২০০৯ সালের ২৫ নভেম্বর থেকে ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি জেলা বিএনপির সভাপতি পদে দায়িত্বে ছিলেন তৈমূর।
ওই সময় তার দলীয় সকল সিদ্ধান্ত আসতো তার মাসদাইরের বাসা বাড়ি থেকে। যেখানে তিনি বাড়ির নিচ তলার ফ্লোরকে নাম দিয়েছেন মজলুম মিলনায়তন! একইভাবে চলতো তার ঢাকায় মেহেরাবা প্লাজায় অবস্থিত তার ল’ চেম্বারেও। দলীয় অনেক বিষয়ে তিনি তার বাসা ও ল চেম্বারে বসেই সিদ্ধান্ত নিতেন। তবে সেই ধারাবাহিকতা আবারো শুরু করেছেন তৈমূর আলম। ইতিমধ্যে তার ল’ চেম্বারে গোপন বৈঠক করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন জেলা বিএনপির কমিটির একজন।
কখনও তার বাসা বাড়ির মজলুম মিলনায়তন কিংবা কখনও তার ল’চেম্বার হয়ে ওঠেছে জেলা বিএনপির রাজনীতি। তার নিয়ন্ত্রিত বাসা বাড়ি ও ল’চেম্বারে বসে কখনই কোন নেতা তার দলীয় সিদ্ধান্তের বিষয়ে কঠোর মতামত দিতে পারেনা। ঠিক যেমন কারো বাসায় মেহমান হয়ে গেলে তার বাসায় গিয়ে সমালোচনা করা যায়না। বিএনপির শীর্ষ দুই নেতা তাদের বগলে বিএনপি ধরে রাখতে দলীয় সিদ্ধান্তগুলো অন্যান্য নেতাদের উপর চাপিয়ে দেয়ার কৌশল হিসেবে নিজেদের বাড়ি ও চেম্বার ব্যবহার করছেন বলেও অভিযোগ।