সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
বিএনপির দলীয় আন্দোলন সংগ্রামে ছিলেন না। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও সক্রিয় ছিলেন না এমন সব নেতাদের নিয়ে জেলা বিএনপির সভাপতি ও সেক্রেটারি গঠন করেছেন ফতুল্লা থানা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি। কমিটি গঠনের বিষয়ে জেলা বিএনপির সভাপতি ও সেক্রেটারি বাদে বাকিদের কেউ জানেন বলে দাবি করেননি। এমনকি থানা কমিটিতে পদ পাওয়া নেতারাও জানেন না কমিটি গঠনের বিষয়ে। একইভাবে জেলা বিএনপির সভাপতির বক্তব্য পত্রিকার মাফরত নেতাকর্মীরা জানতে পারেন ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতির পদ সহ বিএনপি থেকে পদত্যাগ নিয়েছেন শিল্পপতি মুহাম্মদ শাহআলম। দুটি ঘটনাই নেতাকর্মীদের অগোচোরে হয়। যে কারনে নেতাকর্মীরা বলছেন, রাতের আধারেই পদত্যাগ করেছেন মুহাম্মদ শাহআলম। আবার রাতের আধারেই শাহআলমের অনুগামী চাটার দলের কর্মীদের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে ফতুল্লা থানা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি।
ওই বিষয়ে ২৭ ফেব্রুয়ারি বুধবার দুপুরে অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘ সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম’ কে অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাস বলেন, কমিটিতে কেউ টেয়া(টাকা) দিয়া স্থান পায় নাই। আর বিএনপি নেতারা টেয়া দিবেন কিভাবে তাদের তো টেয়া পয়সা নাইরে ভাই।’
কমিটিতে পদ পাওয়া নেতারাই কমিটি গঠনের বিষয়ে জানেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, যারা এ কমিটিতে স্থান পেয়েছেন তাদের যদি কেউ না জানেন যে তারা কমিটিতে স্থান পেয়েছেন। তাহলে তারা অবশ্যই জানবেন। এ কমিটির মিটিং হবে। ওই মিটিংই সবার জানবেন।
তিনি দাবি করেন- এ কমিটি করা হয়েছে আমাদের সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য। যাতে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ থেকে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে পারি।’
পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনে কতদিন এই আহ্বায়ক কমিটিকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে জানতে চাইলে আজাদ বিশ্বাস বলেন, কমিটির নির্দিষ্ট কোন মেয়াদ নেই। তবে শীঘ্রই কমিটির মিটিং ডাকা হবে এবং এ কমিটিকে পুর্ণাঙ্গ কমিটিতে রূপান্তরিত করা হবে।’
এদিকে ২৬ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার রাতে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুকুল ইসলাম রাজীব তার ফেসবুকে লিখেন, ‘দারুণ একটা খবর দেখলাম ফতুল্লা থানা বিএনপি কমিটি হয়েছে। আবার দেখলাম জেলা বিএনপির কেউ জানেনা। সভাপতি সাধারণ সম্পাদক মিলে কমিটি দিতে পারেন এবং সাধারণ সম্পাদক বলেছেন এটা কাউকে জানানোর প্রয়োজন নাই। কারন দলটা উনাদের পৈত্রিক সম্পত্তি বলে কথা। যদিও এত বড় হতাশার নির্বাচনের পর কোন একদিন কমিটির সবাই বসতে পারেননি। আরেকজন পদত্যাগ করেছে বলে কমিটি এই কিছুদিন আগে সাধারণ সম্পাদক বলেছেন কর্মসূচির জন্য জেলা বিএনপি প্রস্তুত নয় কিন্তু আজ কমিটি দেয়ার জন্যে দুজনের প্রস্তুতি ও তাগিদ আনন্দই দিবে সবাইকে সন্দেহ নাই। কমিটিতে জেলা বিএনপিতে যারা আছেন তাদের ছাড়া বাকী সবাইকে অভিনন্দন।’
জানাগেছে, শিল্পপতি মুহাম্মদ শাহআলম ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন মোহাম্মদ শাহ আলম। একই সঙ্গে তিনি কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য পদেও ছিলেন। তবে তার পদত্যাগের বিষয়টি একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান মনির। পদত্যাগের বিষয়ে মোহাম্মদ শাহ আলম ওই পত্রিকাকে বলেছেন, স্বাস্থ্যগত কারণে এই পদে দায়িত্ব পালন করা সম্ভব নয় বলে পদত্যাগ করেছি।
শাহ আলম আরও বলেন, ‘দেশ, জাতি ও জনগণের সেবা করার জন্য রাজনীতিতে এসেছিলাম। তবে আমার মা-বাবার নামে প্রতিষ্ঠিত আফিয়া-জালাল ফাউন্ডেশন ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত জান্নাহ ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে আজীবন জনগণের সেবা করে যাব। জনকল্যাণমূলক কাজে দলমত-নির্বিশেষে সকল এলাকাবাসীর সহযোগিতা কামনা করি।’ নাশকতার মামলা দায়ের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিদেশে চিকিৎসাধীন থাকাকালীন গত সেপ্টেম্বরে আমার বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় মোট ১১টি মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। সম্প্রতি এই বিষয়ে অবগত হয়ে উচ্চ আদালত থেকে নাশকতার ওই মিথ্যা মামলায় জামিন পেয়েছি।’
নেতাকর্মীদের সূত্রে, ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে কল্যাণ পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির কোষাধ্যক্ষ পদ থেকে পদত্যাগ করে বিএনপিতে যোগ দেন শিল্পপতি মুহাম্মদ শাহআলম। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৪(ফতুল্লা) আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে মোহাম্মদ শাহ আলম আওয়ামী লীগের প্রার্থী সারাহ বেগম কবরীর সঙ্গে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করে মাত্র ২ হাজার ১০০ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন।
এদিকে ২৬ ফেব্রুয়ারি জেলা বিএনপির অনুমোদিত ফতুল্লা থানা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটিতে কমিটিতে অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাসকে আহ্বায়ক ও নজরুল ইসলাম পান্না মোল্লাকে সদস্য সচিব করে ৭১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। আজাদ বিশ্বাস বর্তমানে জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও ফতুল্লা থানা বিএনপির সেক্রেটারি পদে ছিলেন। নজরুল ইসলাম পান্না মোল্লা জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক পদে রয়েছেন।
কমিটিতে যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে রয়েছেন মোঃ আব্বাস উদ্দিন বাবলু, এম এ আকবর, মোঃ সুমন আকবর, একরামুল কবির মামুন, রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী, আলাউদ্দিন বারী, আবু তাহের মোল্লা. অ্যাডভোকেট এসএম মাহমুদুল হক আলমগীর, নাদিম হাসান মিঠু, অ্যাডভোকেট আল আমিন সিদ্দিক, আবুল হোসেন, হাবিবুর রহমান রিপন, আমজাদ শিকদার, মন্টু মিয়া মেম্বার, বোরহান উদ্দিন বেপারী।
এছাড়াও কমিটিতে সদস্য পদে রয়েছেন খন্দকার হুমায়ুন কবির, মিলন মেহেদী, জাহিদ হাসান রোজেল, লুৎফর রহমান খোকা, মোসাম্মদ রহিমা শরীফ মায়া, শরিফুল ইসলাম মোল্লা, করিব প্রধান, মঈনুল হোসেন রতন, কাজী আমিন, তুষার আহমেদ মিঠু, মনজুর আলী, রুহুল আমিন শিকদার, হানিফ শেখ, শরিফ উদ্দিন সরদার খোকন, আনোয়ারুল ইসলাম খাঁন লিটন, ফিরুজুর রহমান খাঁন, আরাফাত আলম জিতু, আক্তার হোসেন, বশির আহমেদ তোতা, মনির হোসেন, মাসুদ মিয়া মেম্বার, সিদ্দিকুর রহমান, শাহিন খন্দকার, আলিম উদ্দিন খন্দকার, দ্বীন ইসলাম দিলু, হাফিজুল হক, সিরাজুল ইসলাম, আক্কাস আলী, সিরাজুল ইসলাম সিরাজ, হান্নানুর রফিক রঞ্জু, মিছির আলী, আলী আজগর, রুহুল আমিন, আবুল বাশার জামান, ডাঃ আলীম খান, নিজাম উদ্দিন, হানিফ, সালাউদ্দিন আহমেদ, ইকবাল হোসেন, হাবিবুর রহমান, কামাল বেপারী, মেজবাহ উদ্দিন দুলাল, গিয়াসউদ্দিন লাভলু, নাসির উদ্দিন জাহান সাগর, মাহমুদ হোসেন, রফিক, সরদার শামিম লুনা, সোহেল আবদুল্লাহ, আবুল কালাম পাটোয়ারী, জয়নাল মল্লিক, কামাল হোসেন, মোঃ ইদ্রিস আলী মিন্টু, গাজী ইব্রাহীম, আবু বখতিয়ার সোহাগ, কামাল হোসেন, আনোয়ার হোসেন ও ইকবাল হোসেন।