সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
গত ১৭ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি বাতিল ঘোষণা করার পর নতুন কমিটি গঠনের লক্ষ্যে মহানগরীর তিনটি থানার শীর্ষ নেতারা এক জোট হয়ে একটি খসড়া কমিটি প্রস্তুত করেছেন। প্রাথমিকভাবে তৈরি এই খসড়া কমিটিতে ক্রমিক নং অনুসারে ১১ কিংবা ১৫ জনের নাম কেন্দ্রে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। কেন্দ্রীয় যুবদলের জানানো মতে আহ্বায়ক কমিটি গঠনের লক্ষ্যেই এভাবে খসড়া প্রস্তুত করা হচ্ছে।
তবে খসড়া কমিটি নারায়ণগঞ্জ থেকে চূড়ান্ত হলেই কেন্দ্রে দু’একদিনের মধ্যে জমা দেয়ার সম্ভাবনা। তবে এই খসড়া কমিটিতে বিগত কমিটির সুপার ফাইভের সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার বাদে বাকি ৪ জনের নামই রাখা হচ্ছে। তবে নতুন চমক হলো প্রথম ৫ জনের মধ্যে মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মাজহারুল ইসলাম জোসেফের নাম রাখা হয়েছে।
সূত্রমতে, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ ও সাধারণ সম্পাদক মমতাজ উদ্দীন মন্তুর নেতৃত্বে গঠিত নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের কমিটি বাতিল করা হয়। কেন্দ্রীয় যুবদলের দপ্তর সম্পাদক কামরুজ্জামান দুলাল স্বাক্ষরিত কেন্দ্রীয় যুবদলের প্যাডে মহানগর যুবদলের বর্তমান কমিটি বাতিল করার বিষয়টি জানান।
খসড়া কমিটিতে প্রথমে থাকছেন মহানগর যুবদলের বিগত কমিটির সেক্রেটারি মমতাজ উদ্দীন মন্তু, এরপরেই রাখা হচ্ছে মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মাজহারুল ইসলাম জোসেফ, পর্যায়ক্রমে থাকছেন বিগত কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি মনোয়ার হোসেন শোখন।
পরবর্তী সারিতে থাকছেন মহানগর যুবদলের বিগত কমিটির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাগর প্রধান, সাংগঠনিক সম্পাদক রশিদুর রহমান রশু, সহ-সভাপতি আহাম্মদ আলী, নাজমুল হাসান রানা, জুয়েল প্রধান, জুয়েল রানা, মোয়াজ্জেম হোসেন মন্টি।
তবে আলোচনায় থাকা মহানগর যুবদলের বিগত কমিটির সহ-সভাপতি রানা মুজিব, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেখ মোহাম্মদ অপু, মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি সাহেদ আহাম্মেদ ও সিনিয়র সহ-সভাপতি রাফিউদ্দীন রিয়াদের নাম খসড়া কমিটিতে তৃতীয় সারিতে রাখা হবে কিনা সেটা নিয়ে চিন্তা ভাবনা চলছে। তবে মহানগর ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আল আমিন প্রধানকে রাখা হয়েছে খসড়া কমিটিতে। এ ছাড়াও বেশকজন সাবেক ছাত্রদল নেতা ও মহানগর যুবদলের বিগত কমিটির বেশকজনের নাম এই খসড়ায় সম্পৃক্ত করা হতে পারে বলেও জানিয়েছেন খসড়া কমিটি তৈরিতে ভুমিকা রাখা নেতারা।
তাদের দাবি- তিনটি থানার শীর্ষ নেতাদের নিয়েই আহ্বায়ক কমিটি গঠনের লক্ষ্যে একটি খসড়া কেন্দ্রে জমা দেয়া হবে। তবে অবশ্যই যাদের নাম রাখা হবে তাদের অতীত রাজনৈতিক ইতিহাস চিন্তা ভাবনা করেই রাখা হবে। মুলত একটি শক্তিশালী কমিটি গঠনের লক্ষ্যেই তিনটি থানার শীর্ষ নেতাদের সম্পৃক্ত করার চেষ্টা চলছে। তবে কমিটিতে কারো ব্যক্তিগত কর্মচারী, পিএস এপিএস, কোন নেতার বাড়ির কামলা, কারো বডিগার্ড ও কারো কর্মীর পর্যায়ে এদেরকে রাখা হবে না।
নেতাকর্মীরা জানান, মাকসুুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ এক সময় মহানগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ওই সময় যুবদলের সভাপতি ছিলেন প্রয়াত জাহাঙ্গীর আলম। পরবর্তী কমিটিতে মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক পদে দায়িত্ব পান খোরশেদ। এরপর সুপার ফাইভের কমিটিতেও তাকে সভাপতি করা হয়। সুপার ফাইভের বাকি চার জনের মধ্যে রয়েছেন সেক্রেটারি পদে মমতাজ উদ্দীন মন্তু, সিনিয়র সহ-সভাপতি মনোয়ার হোসেন শোখন, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাগর প্রধান ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে রশিদুর রহমান রশু।
পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে এই পাঁচনজনকে বহাল রেখে বিরাট একটি কমিটি গঠন করা হয়। ১৮ জন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক করা হয়। যেখানে নেতাও যুগ্ম সম্পাদক, আবার তার কর্মীও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হয়ে যান। একই দশা সহ-সভাপতি পদের ক্ষেত্রেও। এসব নিয়ে তুমুল সমালোচনা, বিরোধ, পাল্টাপাল্টি সভা সমাবেশ, পাল্টা কর্মসূচি ছিল ব্যাপক সমালোচনায়।
এসব সমালোচনাতেও খোরশেদের পদ বহাল রেখেছিল কেন্দ্রীয় যুবদল। কিন্তু করোনা কালে যুবদল নিয়ে খোরশেদের ভুমিকা বিরাট প্রশ্ন তুলে দেয়। যুবদল এমনকি বিএনপির নাম ভুলে গিয়ে তিনি টিম খোরশেদ নাম দিয়ে করোনাকালে মানুষের সেবায় নামেন। যেখানে তিনি দল ও তার দলের চেয়ারপারসনের নাম কখনও মুখেও নেননি। এমনকি সরকারি দলের এমপির দেয়া একটি মন্তব্যকে নিজের খেতাব হিসেবে দাবি করে জাহির করতে থাকেন। এসব বিষয়গুলো কেন্দ্রীয় যুবদলের কাছে তুলে ধরেন অন্যান্য নেতারা। ফলে সত্যতা পাওয়ায় এই কমিটি বাতিল করে দেয়।