সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের নির্বাচন চলতি বছরে সম্পন্ন হবে। গত নির্বাচনে ১০টি ইউনিয়নের মধ্যে জাতীয়পার্টির সমর্থনে ৪টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্র্রার্থী ছিল যার মধ্যে ৩টিতে জাতীয় পার্টির সমর্থনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়। বাকি ৭টিতে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা নির্বাচিত হোন।
বিএনপি এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেনা বলে ঘোষণা করেছে। এবার অন্তত ৫টি ইউনিয়নে জাতীয়পার্টির সমর্থিত ও মনোনিত প্রার্থী থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। দশটি ইউনিয়নে দশজন চেয়ারম্যানের মধ্যে অনেকের নিজ নিজ দলের মনোনয়ন যেমন অনেকাংশে নিশ্চিত, আবার কারো কারো জয়ের ব্যাপারেও আশাবাদী। ঠিক উল্টো দিকে কারো কারো দলীয় মনোনয়ন যেমন শঙ্কার মধ্যে রয়েছে আবার কারো কারো নির্বাচনে প্রার্থী হলেও জয়ের বিষয়ে সৃষ্টি হয়েছে অনিশ্চয়তা।
উপজেলার সবচেয়ে আলোচিত ইউনিয়ন মোগরাপাড়া। এখানে বর্তমান চেয়ারম্যান হিসেবে রয়েছেন আরিফ মাসুদ বাবু। তবে এখানে নৌকার লড়াইয়ে নির্বাচনী মাঠে নেমে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ[-সভাপতি শাহ মোহাম্মদ সোহাগ রনি। একই সঙ্গে নির্বাচনী মাঠে জাতীয়পার্টির নেতা কাজী নাজমুল ইসলাম লিটু। নতুন করে আলোচনায় সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী। এখানে আরিফ মাসুদ বাবুর মনোনয়ন ও জয় নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান হিসেবে রয়েছেন উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম। এখানে তার মনোনয়ন ও জয়ের ব্যাপারে স্থানীয় আওয়ামীলীগ আশাবাদী। করোনাকালে চেয়ারম্যান মাসুম যে মানববতা দেখিয়েছেন তা আরো তার জনপ্রিয়তা বাড়িয়েছে। যে কারনে নৌকা প্রতীক প্রত্যাশা নিয়ে এখানে কেউ নির্বাচনী মাঠে নেই। এখানে জাতীয়পার্টিও প্রার্থীর দেয়ার জন্য আপাতত চিন্তাভাবনা করছেনা।
বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নে গত নির্বাচনে জাতীয়পার্টির সমর্থনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন ডা. আব্দুর রউফ। এখানে গত নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী ছিলেন আল আমিন সরকার। তিনি এবারও নৌকার লড়াইয়ে নির্বাচনী মাঠে। সঙ্গে কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা রুবায়েত হোসেন শান্ত ও সাবেক চেয়ারম্যান মাহাবুব সরকারও রয়েছেন আলোচনায়। তবে এবারও জাতীয়পার্টির সমর্থন থাকছে বর্তমান চেয়ারম্যানের দিকেই।
বারদী ই্উনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান জহিরুল হক। এবারও তিনি নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। এখানেও জাতীয়পার্টির কোন প্রার্থী দেয়ার সম্ভাবনা নেই। নৌকার লড়াইয়ে রয়েছেন উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কামাল হোসেন ও আওয়ামীলীগ নেতা মাহাবুবুর রহমান বাবুল।
জামপুর ইউনিয়নে গত নির্বাচনে জাতীয়পার্টির সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলেন জাতীয়পার্টির জেলার নেতা শাহ মোহাম্মদ হানিফ। তবে এবার এই ইউনিয়নে আশরাফুুল ভুঁইয়া মাকসুদকে চেয়ারম্যান প্রার্থী ঘোষণা করেছেন স্থানীয় এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা। এখানে বর্তমান চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগের হা-হীম শিকদার শিপলু ও নৌকা প্রতীক প্রত্যাশি দেওয়ান শরীফুল ইসলাম নির্বাচনী আলোচনায় রয়েছেন। তবে এমপির সমর্থনের বিষয়টি তাদের শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
নোয়াগাঁও ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ইউসুফ দেওয়ান এবারও জাতীয়পার্টির সমর্থন পেতে যাচ্ছেন সেটা প্রায় নিশ্চিত। এখানে গত নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে পরাজিত হয়েছিলেন সাবেক চেয়ারম্যান দেওয়ান উদ্দীন চুন্নু।
সাদিপুর ইউনিয়নে গত নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান হোন আব্দুর রশিদ ভুঁইয়া। এবারও তিনি নৌকা প্রতীক চাইবেন। তবে নৌকার লড়াইয়ে নির্বাচনে মাঠে বেশ জোড়ালো রয়েছেন যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতা জাকির হোসাইন। এখানে জাতীয়পার্টি প্রার্থী দেয়ার চিন্তা করছে। ইতিমধ্যে আবুল হাসান রতনের এখান থেকে নির্বাচনের সম্ভাবনা রয়েছে। তার দিকেই থাকছে জাতীয়পার্টির সমর্থন।
সনমান্দি ইউনিয়নে গত নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান হোন জাহিদ হাসান জিন্নাহ। তবে গত নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন সাবেক চেয়ারম্যান সাহাবউদ্দীন সাবু। এবারও তিনি নৌকা প্রতীকের প্রত্যাশা নিয়ে নির্বাচনী মাঠে পুরোদস্তর প্রচারনায়। এখানে জাতীয়পার্টির প্রার্থী দেয়ার কোন চিন্তা ভাবনা আপাতাত নাই। নৌকা প্রতীক প্রত্যাশার আলোচনায় রয়েছেন যুবলীগ নেতা নজরুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম, শ্যামলী চৌধুরী।
কাঁচপুুুর ইউনিয়ন পরিষদে বর্তমান চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন ওমর। তিনি গত নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান হোন। তবে এখানে জাতীয়পার্টির কোন প্র্রার্থী আপাতত দেয়ার কোন পরিকল্পনা না থাকলেও জনপ্রতিনিধি ঐক্য ফোরাম নিয়ে বিরুপ মন্তব্য করায় স্থানীয় জনপ্র্রিতিনিধিরা তার উপর চরম ক্ষুব্দ। এখানে নৌকা প্রতীকের লড়াইয়ে নির্বাচনী মাঠে শ্রমিকলীগ নেতা আব্দুল মান্নান সহ বেশকজন রয়েছেন।
শম্ভুপুরা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান উপজেলা জাতীয়পার্টির সভাপতি আব্দুর রব গত নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হোন। এখানে নৌকার প্রার্থী ছিলেন উপজেলা মহিলা লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট নূর জাহান বেগম। এবারও তিনি নির্বাচনী আলোচনায় রয়েছেন।