সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলা ও কাঞ্চন পৌর যুবদলের আহ্বায়ক কমিটি একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানায় কেন্দ্রীয় যুবদল। অথচ এই কমিটির অনুমোদন করেছে জেলা যুবদলের সভাপতি শহিদুল ইসলাম টিটু ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন। কমিটি গঠনের পর অভিযোগ ওঠেছে যুবলীগ নেতাদের হাতে যুবদলের নেতৃত্ব তুলে দেয়া হয়েছে। এ সংক্রান্ত বেশকটি ছবিও প্রমাণ স্বরুপ ফেসবুকে প্রচার করেছে যুবদলের নেতাকর্মীরা।
জানাগেছে, গত ১৭ মার্চ বুধবার দেলোয়ার হোসেনকে আহ্বায়ক করে ও নূর হাসান বাবুলকে সদস্য সচিব করে রূপগঞ্জ উপজেলা যুবদলের কমিটি এবং মফিজুল ইসলামকে আহ্বায়ক ও কোহিনুর আলমকে সদস্র সচিব করে কাঞ্চন পৌর যুবদলের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে দেলোয়ার হোসেন জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি পদে রয়েছেন। কিন্তু রাজপথের রাজনীতিতে তার কোন সক্রিয়তা দেখা যায়নি। বাকি তিনজনের মধ্যে দুজনই যুবলীগের রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন।
মুলত নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের কমিটি গঠনের পেছনে ভুমিকা রেখেছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান দিপুু ভুঁইয়া। যে কারনে দিপু ভুঁইয়ার অনুগত লোকজনদের নিয়ে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর আগে সপ্তাহব্যাপী দিপু ভুঁইয়ার জন্মদিন পালন করেছিল যুবদলের নেতাকর্মীরা। কিন্তু জিয়াউর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী ও দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে তেমন কর্মসূচি পালন করতে দেখা যায়নি যুবদলকে।
গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে রূপগঞ্জে আলোচনায় ওঠেছিল দিপু ভুঁইয়া আওয়ামীলীগে যোগদান করতে যাচ্ছেন। মুলত রূপগঞ্জ আসনে দলীয় মনোনয়নের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের সবুজ সংকেত পেলেই তিনি আওয়ামীলীগে যোগদান করে রূপগঞ্জের এমপি হয়ে যাবেন। যে কারনে বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘ দুই বছর কারাভোগ করলেও কেন্দ্র ঘোষিত জেলা বিএনপির কোনো মুক্তির দাবির কর্মসূচিতে আসেননি দিপু ভুঁইয়া। নেতাকর্মীদের দাবি সামনে হয়তো দিপু ভুঁইয়া সেই লক্ষ্যেই যুবলীগ নেতাদের হাতে যুবদলের নেতৃত্ব তুলে দিচ্ছেন। যাতে করে সকলকে নিয়ে আওয়ামীলীগে যোগদান করাটা সহজতর হয়।
তার আরো প্রমাণ মিলেছে কয়েক মাস পূর্বে রূপগঞ্জের ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ’টাকার বিনিময়ে কমিটি মানবো না’ শ্লোগানে মানববন্ধন করায় তাদের উপর হামলা চালায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। জেলা ছাত্রদলের কাছে দাবি করে এমন মানববন্ধন করায ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তিন ছাত্রদল কর্মীকে ফ্লাইওভার ব্রীজের নিজে বেধে নির্যাতন করে। মুলত দিপু ভুঁইয়া চেয়েছিল তার অনুগত নাহিদ হাসান ভুঁইয়া সহ বেশকজনকে নিয়ে টাকার বিনিময়ে রূপগঞ্জে ছাত্রদলের কমিটি ভাগিয়ে নিতে। কিন্তু বিষয়টি নেতাকর্মীরা টের পেয়ে মানববন্ধন করে। এতে হামলা চালায় ছাত্রলীগ। ওই সময় নেতাকর্মীরা অভিযোগও করেছিলেন দিপু ভুঁইয়ার ইশারাতেই ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের উপর হামলা চালানো হয়েছে। এমনকি আবু মাসুমের বাড়িঘরে হামলা ভাংচুর চালানো হয়েছিল।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপক সমালোচনা চলছে যুবদলের কমিটি গঠন নিয়ে। রূপগঞ্জের যুবদল নেতা ফারুক আহাম্মেদ ফেসবুকে লিখেছেন, নামের সাথে আশ্চর্য রকম মিল। নীরব যুবদলকে নামের স্বার্থকতার মতই নীরব করে ফেলেছে। (টাকা খাইছে বলবোনা, অন্য কিছুর কথাও শুনি) নীরব যখন নারায়নগঞ্জ যুবদলকে নিরব করল টুকু তখন জেলে। জেল থেকে এসে ওনি বাদ যাবেন কেন? ওনি রূপগঞ্জ যুবদলকে টুকু (ছোট) করতে করতে যুবলীগই বানিয়ে ফেললেন। যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটি নতুন করে না করলে এর খেসারত এ গুরুত্বপূর্ণ সময় দিতে হবে। যে যাই বলি অযোগ্যদের হাতে দল এতে কোনোই সন্দেহ নাই, ইশরাক, এছহাক সরকারদের হাতে দায়িত্ব দেয়া হোক।
আরেকটি পোস্টে তিনি লিখেছেন, সৌহার্দের রাজনীতি,যুবলীগ কে যখন যুবদল অনুমোদন দেয়। জনাব তারেক রহমান, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন বিএনপি। নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলকে অনেক আগেই সাইফুল ইসলাম নীরব আর ভুঁয়া সাহেব (আপনার স্ত্রীর বান্ধবীর স্বামী পরিচয়দানকারী) মিলে ধ্বংস করে দিছে। সর্বশেষ নারায়ণগঞ্জ জেলায় আন্দোলনের সুতিকাগার রূপগঞ্জ উপজেলা যুবদলকে নীরব, সালাউদ্দিন টুকু মিলে যুবদল নেতাদের বাদ দিয়ে যুবলীগ নেতাদের দিয়ে কমিটি বানিয়ে আওয়ামী যুবদল বানিয়ে ফেলছেন। তাদের কাছে জেলার বিএনপির সভাপতি, সেক্রেটারি কারো সুপারিশের মুল্য নাই, ওনারা ভুয়া সাহেব যা বলে তাই শুনে। জেলা বিএনপির, থানা বিএনপির সিনিয়র নেতাদের অবজ্ঞা করে আওয়ামী সমর্থিত লোক দিয়ে কেন কমিটি হবে? ছবিগুলো আওয়ামী সরকারের এমপি সাহেবকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান যুবদলের আহবায়ক কমিটি।