সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে গত ৩ এপ্রিল শনিবার সোনারগাঁও রয়েল রিসোর্টে এক নারী সহ (তার দাবিমতে দ্বিতীয় স্ত্রী) অবরুদ্ধের সময় মোবাইলে ভিডিও ধারণ করছিলেন স্থানীয় সংবাদকর্মী হাবিবুর রহমান হাবিব নামে একজন।
কিন্তু হাবিবুর রহমান হাবিবের সঙ্গে ব্যক্তিগত বিরোধের জের ধরে এবং তার এলাকার কিছু দূর্বৃত্তরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয় হাবিবুর রহমান মাওলানা মামুনুল হকের দাড়ি মোবারক ধরে টানাটানি করেছিল। হাবিবের ছবি সহ ফেসবুকে প্রচার করে দাড়ি ধরে টানার ভুয়া মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়ে হেফাজতের নেতাকর্মীদের উস্কে দেয় এক শ্রেণির দূর্বৃত্তরা।
ফেসবুকে প্রচারিত কোন ভিডিওতেই হাবিবুর রহমান হাবিব মাওলানা মামুনুল হকের দাড়িধরে টেনেছিলেন এমন কোনো দৃশ্য দেখা যায়নি। তবে ভিডিও ফুটেজে কোনো একজনের হাত মামুনুল হকের দাড়ির সামনে দেখা যায়। সেই হাতের গড়ন ও উচ্চতা লম্বায় মামুনুল হকের দাড়ি হাবিবুর রহমানের টানার কোন সম্ভাবনা নাই। কারন মামুনুল হক প্রায় সাড়ে ৬ ফুটের উপরে লম্বা এবং হাবিবুর রহমান ৫ফিটের একটু উপরে। দাড়ি ধরে টানার দৃশ্যের হাতের রংয়ের সাথেও হাবিবুর রহমানের হাতের রং মিলছেনা।
হাবিুবর রহমান নিজেও দাবি করেছেন তিনি এমন কাজটি করেননি। এমনকি উপস্থিত অনেক সাংবাদিকও বলেছেন কোনো সাংবাদিকই মাওলানা মামুনুল হকের সঙ্গে অসধাচারণ করেনি। সাংবাদিক বাদে অন্য কেউ এমনটা হয়তোবা করতে পারেন। একজন সহজ সরল নিরীহ হাবিবুরের বিরুদ্ধে হেফাজতকে উস্কে দিয়েছেন হাবিবুর রহমানের এলাকার ও তার পার্শবর্তী এলাকার বেশকজন ব্যক্তি যা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে।
এদিকে জানাগেল, সোনারগাঁয়ের রয়্যাল রিসোর্টে হেফাজত ইসলামে কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করার ঘটনার তথ্য সংগ্রহ করতে যাওয়া স্থানীয় সাংবাদিক হাবিবুর রহমানের উপর হামলা চালানো হয়েছে।
৫ এপ্রিল সোমবার রাতে উপজেলার সনমান্দি ইউনিয়নের ভাটিরচর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে মাওলানা মামুনুল হকের দাড়ি ধরে টান দেওয়ার অভিযোগ তুলে সাংবাদিকের উপর হামলা করা হয়। আহত ওই সাংবাদিককে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার দুপুরে সাংবাদিক হাবিবুর রহমান বাদি হয়ে সোনারগাঁ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এর আগে রয়েল রিসোর্টে গত ৩ এপ্রিল শনিবার বিকেলে হেফাজত নেতা মামুনুল হককে স্থানীয়রা এক নারী সহ অবরুদ্ধ করে রাখে। ওই সময় স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিক উপস্থিত হয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন করে ফেসবুকে লাইভ করেন। এসময় চ্যানেল এস নামের একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের সোনারগাঁ প্রতিনিধি হাবিবুর রহমানও ভিডিও ধারণ করছিলেন। কিন্তু হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে মামুনুল হকের দাড়ি ধরে টান দিয়েছে এমন অভিযোগ তোলা হয় ফেসবুকে।
এ ঘটনায় হেফাজতের নেতাকর্মীরা তাকে ওই সময় থেকেই মারধরের হুমকি দেন। পরবর্তীতে সাংবাদিক হাবিবুর রহমান নিজেকে আত্মগোপনে ছিলেন। সোমবার রাতে তিনি সনমান্দি ইউনিয়নের ভাটিরচর গ্রামে নিজ বাড়িতে গেলে হাবিবুর রহমানের পূর্ব শত্রুতার জের ধরে তার বিরোধীরা হেফাজতের লোকজনকে খবর নিয়ে সেখানে নিয়ে বাড়িতে হামলা করে। এসময় তাকে মারধর করে ঘরের বাইরে নিয়ে আসে। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ক্ষমা চাইতে বলে মামুনুলের কাছে। সেই ভিডিতে দেখা যায়, মামুনুলের অনুসারীরা সাংবাদিক হাবিবকে লাঞ্ছিত করছেন।
সাংবাদিক হাবিবুর রহমানের ছোট ভাই মোফাজ্জল হোসেন জানান, ঘরে বড় ভাই হাবিবুর রহমান ঘুমন্ত অবস্থায় ছিল। খবর পেয়ে রাত সাড়ে নয়টার দিকে হেফাজতের নাম করে স্থানীয় জামায়াত শিবির ও বিএনপির নেতাকর্মীরা লাঠিসোটা নিয়ে আমাদের বাড়িতে হামলা করে। টেনে হেঁচড়ে আমার ভাইকে ঘরের বাইরে নিয়ে মারধর করে। পরবর্তীতে পুলিশ এসে উদ্ধার করে তাকে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
সোনারগাঁ থানার ওসি মো. হাফিজুর রহমান বলেন, সাংবাদিক হাবিবের উপর হামলা চালিয়েছে হেফাজত সমর্থকরা। তাকে উদ্ধার করে রাতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার দুপুরে সাংবাদিক হাবিবুর রহমান বাদি হয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন। উধর্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে মামলা গ্রহণ করা হবে।