মানবাধিকার কর্মী ও সাংবাদিক পরিচয়ে বহুমুখী প্রতারণা: র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার ২

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকা হতে বহুমুখী সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের মূলহোতা সহ ২জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১১।  ৩১ মে সোমবার বিকেলে এ তথ্য জানান, র‌্যাব-১১ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার প্রণব কুমার।

তিনি জানান, র‌্যাব প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধের উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেপ্তার, আইন-শৃঙ্খলার সামগ্রিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।  মাদক, জুয়া এবং বিভিন্ন প্রতারক চক্রের সিন্ডিকেটসহ বিভিন্ন অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জন্য র‌্যাব ফোর্সেস নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে থাকে।

তিনি আরও জানান, এরই ধারাবাহিকতায় প্রাপ্ত অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিনে তদন্ত সাপেক্ষে ৩১ মে সোমবার বিকেলে র‌্যাব-১১ এর ব্যাটালিয়ন সদরের চৌকস দল নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন মাদানীনগর এলাকা হতে বহুমুখী প্রতারণার মূলহোতা প্রদীব চন্দ্র বর্মণ ও আনিসুর রহমান নামের দুইজন প্রতারককে গ্রেপ্তার করে।  গ্রেপ্তারকৃতদের হেফাজত হতে ১টি প্রাইভেটকার, মোবাইল ২টি, ব্যানার, জীবনবৃত্তান্ত ফরম, সাংবাদিক আইডিকার্ড, তালাশ নিউজ-৭৯ টিভি কার্ড উদ্ধার করা হয়।

র‌্যাব আরও জানায়, বহুমুখী প্রতারক চক্রের মূলহোতা প্রদীপ চন্দ্র বর্মণ ওয়াকিটকি সেট, মনোগ্রাম সম্বলিত জ্যাকেট ও হ্যান্ডকাফ দেখিয়ে নিজেকে একাধারে ‘সমাজের জন্য আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন প্রয়োগকারী সংস্থা’ তালাশ নিউজ টিভি-৭৯ ও দৈনিক সত্যের সংগ্রাম পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, প্রকাশক ও সম্পাদক হিসেবে পরিচয় প্রদান করে থাকে এবং সে ভুয়া আইডি কার্ড তৈরি করে, ট্রাফিক পুলিশ ও যুব ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে চাকুরীর আশ্বাস দিয়ে এবং তার কথিত টিভি চ্যানেল ও ‘সমাজের জন্য আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন প্রয়োগকারী সংস্থার’ অন্যান্য সদস্যপদে ও নিউজ চ্যানেলের জেলা প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি প্রদান করে সরল বিশ্বাসী মানুষের কাছ থেকে চাকুরী প্রদানের আশ্বাস দিয়ে পরিকল্পনা মাফিক বিপুল পরিমান টাকা হাতিয়ে নিত বলে জানায়।

পরবর্তীতে তার কাছে কেউ টাকা ফেরত চাইলে তার কথিত টর্চার সেলে নিয়ে গিয়ে সে তাদের অত্যাচারের হুমকি প্রদান করত বলে ভুক্তভুগিদের কাছ থেকে জানা যায়।

চাঞ্চল্যকর তথ্য হলো এই যে, এই প্রদীপ চন্দ্র নিজে এক সময় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ছিল। ২০১৫ সালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর স্বাক্ষর জাল করার অপরাধে তার বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল।  এছাড়াও অবৈধভাবে ওয়াকিটকি সেট ব্যবহার ও বিতরণ করার অপরাধে তার বিরুদ্ধে ২০১৯ সালে টাঙ্গাইলের কালিহাতি থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

প্রতারক প্রদীপ এর প্রধান সহযোগী আনিসুর রহমান নিজে মূলত একজন রিকশা চালক বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।  সে নতুন সদস্য সংগ্রেহের কাজে তাকে বিভিন্ন ভাবে সহায়তা করে আসছিল বলে জানা যায়।

অভিযোগ প্রাপ্তির পর সরেজমিনে বিষয়টি সত্যতা যাচায়ের পর র‌্যাব-১১ তথ্য প্রযুক্তি ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এই বহুমুখী প্রতারক চক্রের মূলহোতা ও তার সহযোগী আনিসুর রহমানকে হাতে-নাতে গ্রেপ্তার করা হয়।  র‌্যাব-১১ এমন প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছে এবং এই ধরণের অভিযান অব্যহত থাকবে।