সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আনোয়ার হোসেন মেম্বারের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও সোনারগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। নোয়াগাঁও ইউনিয়নের লাধুরচর এলাকায় কৃষকদের ফসলি জমি ও সরকারি খালের মাটি কেটে বিক্রির অভিযোগে আনোয়ার হোসেন ও তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকেরা জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন।
লাধুরচর গ্রামের কৃষক খালেক মাস্টার, আজগর আলী, আবদুর রহিম ও রাসেল মিয়া অভিযোগ করেন- কোনো রকম অনুমতি ছাড়াই লাধুরচরের কৃষকদের জমির মাটি খননযন্ত্র দিয়ে কেটে বিভিন্ন ইটভাটায় বিক্রি করা হচ্ছে। মাটি লুটের ঘটনায় জড়িত নোয়াগাঁও ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের মেম্বার আনোয়ার হোসেন ও তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় ইতিমধ্যে কয়েকজন কৃষককে পিটিয়ে আহত করে আনোয়ার মেম্বারের লোকজন। স্থানীয় প্রশাসনকে বিষয়টি মৌখিকভাবে জানালেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন ভুক্তভোগী কৃষকেরা।
নোয়াগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নং ওয়ার্ডের মেম্বার সেলিম মিয়া বলেন, ‘প্রকাশ্যে দিনদুপুরে এভাবে মাটি সন্ত্রাসের ঘটনা আমার জীবনে দেখিনি। যেহেতু কৃষকেরা আমার পার্শ্ববর্তী ওয়ার্ডের বাসিন্দা, তাই তাঁরা প্রতিদিনই আমার কাছে এসে কান্নাকাটি করেন। কৃষকদের কান্না দেখে আমার খুব খারাপ লাগে। আমি বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন ও থানা-পুলিশকে অবগত করলেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছেনা।’
গত মঙ্গলবার সকালে লাধুরচরে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় ৫০টি ট্রাক কৃষকদের বোরো ধানের জমির ওপর দিয়ে চলাচল করছে। সরকারি খাল ও খালপাড়ের কৃষকদের জমির মাটি জোরপূর্বক কেটে এসব ট্রাকে বিভিন্ন ইটভাটায় নেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় কৃষকেরা যাতে মাটি কাটায় বাধা দেওয়ার সাহস না পান, সেজন্য একটি পক্ষ লাঠি, রামদা নিয়ে ঘটনাস্থল পাহারা দিচ্ছে। গণমাধ্যমকর্মীদের ছবি তুলতে বাধা দেওয়া হচ্ছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ইউনিয়ন সদস্য আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমরা সরকারি খালের মাটি কেটে বিক্রি করছি এ কথা সত্য; তবে এতে কৃষকের জমি হয়তো কিছুটা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। খাল খনন হলে কৃষকেরাই বেশি উপকৃত হবেন।’ খাল খননে সরকারি অনুমতি আছে কি না, সে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি মন্তব্য করতে রাজি হননি।
সোনারগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অঞ্জন কুমার সরকার বলেন, ‘আমি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হয়েছি। অবৈধভাবে মাটি কাটা হলে অবশ্যই দু-এক দিনের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’