সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মাহফুজুর রহমান কালামের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে যেসব চেয়ারম্যান প্রার্থীরা নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করে জয়ী হয়েছেন। তারা আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোশারফ হোসেনের সঙ্গে নেই। এসব চেয়ারম্যানের সঙ্গে আবার যোগ দিয়েছেন সোনারগাঁও উপজেলার বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাও। দুচারজন জনপ্রতিনিধিদের সমর্থন নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে থাকরেও বাকিরা রয়েছেন কালামের পক্ষে। ফলে কালামের নির্বাচনী মাঠ বেশ গরম। এসব জনপ্রতিনিধিদের পিছন থেকে কামালের পক্ষে কাজ করছেন স্থানীয় এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা।
জানাগেছে, আগামী ৩১ মার্চ নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঘোড়া প্রতীকে নির্বাচনে নেমেছেন উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান। ১৪ মার্চ বৃহস্পতিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার অফিসে সোনারগাঁয়ের প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্ধ দেয়া হয়। কালামের ঘোড়া প্রতীক নিয়ে নারায়ণগঞ্জ আদালতপাড়ায় রীতিমত উচ্ছ্বাস করেছেন সোনারগাঁয়ের জনপ্রতিনিধিদের সংগঠন জনপ্রতিনিধি ঐক্য ফোরাম। তার ঘোড়া প্রতীকে শ্লোগানও দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে মাহফূজুর রহমাম কালামের ঘোড়া প্রতীক নিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে ছুটে আসেন সোনারগাঁও পৌর মেয়র সাদেকুর রহমান। যদিও তিনি এসে দেখেন তার আগেই সোনারগাঁয়ের অন্যান্য জনপ্রতিনিধিরা কালামের ঘোড়া প্রতীক নিয়ে নারায়ণগঞ্জ আদালতপাড়ায় শোডাউন দিয়েছেন। ওই সময় উপস্থিত ছিলেন কাচপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশারফ ওমর, জামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যা হা-মীম শিকদার শিপলু, বারদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জহিরুল হক, নোয়াগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইউসুফ দেওয়ান সহ সোনারগাঁয়ের বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদ থেকে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা। তবে শুধু তাই নয় উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম ভূঁইয়াও সেখানে কালামকে দোয়া করে গেছেন। আবার উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুলতান আহমেদ মোল্লা বাদশা নিজেই কালামের মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেছেন।
সোনারগাঁয়ের নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁও) আসনে আওয়ামীলীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের শরীক দল জাতীয়পার্টি থেকে মনোনয়ন পান লিয়াকত হোসেন খোকা। ওই নির্বাচনে এখানে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন চেয়েছিলেন আওয়ামীলীগের সাবেক এমপি আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত, উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন ও উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান কালাম সহ অন্তত ১৫ জন আওয়ামীলীগ নেতা। নির্বাচনে মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে সিংহ প্রতীকে নির্বাচনে দাড়ান কায়সার হাসনাত।
নেতাকর্মীরা আরও জানান, ওই নির্বাচনে কায়সার হাসনাতের পক্ষে ছিলেন মোশারফ হোসেন ও কালাম ছিলেন মহাজোটের প্রার্থীর পক্ষে। নির্বাচনের ৭২ ঘন্টা পূর্বে নাটকীয়তায় নির্বাচন থেকে সরে দাড়ান কায়সার হাসনাত। নির্বাচনে কায়সার হাসনাতের পক্ষে কাজ করতে গিয়ে নেতাকর্মীরা হামলা মামলা নির্যাতনের শিকার হলেও মোশারফ হোসেন ও কায়সার হাসনাত তাদের পাশে দাড়ায়নি। এমনকি কোন ধরনের খোজ খবরও রাখেননি। কাচপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মাহাবুব পারভেজ নির্বাচনে কায়সার হাসনাতের পক্ষে কাজ করায় তার বৃদ্ধ বাবা ও বৃদ্ধা মা সহ ভাই বোনকে আটক করে মাদক উদ্ধারের মামলায় আসামি করে পুলিশ। ওই ঘটনায় মাহাবুব পারভেজ দাবি করেছিলেন সিংহ প্রতীকে কাজ করার কারনেই তার পরিবারকে হয়রানি করা হচ্ছে। কিন্তু কায়সার হাসনাত ও মোশারফ হোসেন কোন ধরনের সহযোগীতা তো দুরের কথা মাহাবুব পারভেজের পরিবারের কোন খবরও নেননি বলে আক্ষেপ করে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন তিনি। নির্বাচনের পর আওয়ামীলীগের হতাশাগ্রস্থ নেতাকর্মীদের নিয়ে কোন সভা কিংবা বৈঠকও করেননি চাচা মোশারফ হোসেন ও ভাতিজা কায়সার হাসনাত। যে কারনে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এবার মোশারফ হোসেন নেতাকর্মী সংকটে পড়েছেন। তাদের ছেড়ে নেতাকর্মীরা কাজ করছেন কালামের পক্ষে।