সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদলের একটি বেশিই সক্রিয়তা দেখা যায়। এ নিয়ে স্থানীয় মিডিয়াতে প্রতিনিয়ত সোনারগাঁয়ে পদচারণার বিষয়ে সমালোচনা হয়।
এক অনুষ্ঠানে জেলা আওয়ামীলীগ সেক্রেটারি শহীদ বাদল বলেছেন, সোনারগাঁয়ে কেউ কেউ জ্বালাও পোড়াও করে। কেউ কেউ ফুুটো করে দিতে চায়। এগুলো চলবে না। ১৫ই আগস্টের শোক দিবসের প্যান্ডেল ভাইঙ্গা ফালাইবেন, পুড়াইয়া ফালাইয়বেন জ্বালাইয়া ফালাইবেন, এগুলোর বিচার হবেনা ভাবছেন? আওয়ামীলীগ যতক্ষন আছে, আমরা যতক্ষন বেঁচে আছি, ততক্ষন পর্যন্ত বলতে চাই কেউ কোনো অন্যায় অবিচার করে পার পাবেন না।
সোনারগাঁয়ে নিয়মিত আসার বিষয়ে তিনি বলেন, এক লোক বিয়ে করেছে, ধরেন সোনারগাঁয়ে বিয়ে করেছে, শ্বশুর বাড়িতে বারবারই আসে, এহন বারবার যখন শ্বশুর বাড়িতে আসে তখন জামাইয়েরে কি জামাই ষষ্ট কইরা আদর যত্ন করে? মধুর হাড়ি কি বার বার আইন্না দেয়? তো মিষ্টি মধু খাওয়ার জন্য জামাইরা আসে। আমার এক ভাই পত্রিকায় কি জানি দেখছে, দেইখা বলতাছে বাদল ভাই আপনারা নিয়ে তো পত্রিকায় আসছে, আমি বললাম কি আসছে? সে বললো সোনারগাঁয়ে মিষ্টি মধু খাওয়ার জন্য নাকি আপনি সেখানে যান? আমি নাকি সোনারগাঁয়ে মধু খাইতে আসি? এমনটা হয়ে গেছে জামাই বারবার আসে তো তাই এহন শালা সম্বন্ধীরা বিদায় করবো কেমনে? তো গল্প বলে, শ্বশুর বাড়ি মধুর হাড়ি নিত্য গেলে পিছার বাড়ি। এহন আমারে সোনারগাঁও আসতে না করে। ওই ভাইয়েরা না করে। তো আপনারা বলেন আমি কি আসবো নাকি আসবো না?
২৫ আগস্ট বুধবার বিকেলে সোনারগাঁয়ের নোয়াগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের আগামী নির্বাচনে সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী মোঃ ছাইদুর রহমাদের উদ্যােগে তার বাড়িতে ১৫ আগষ্ট জাতীয় শোক দিবস ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এসব কথা বলেন শহীদ বাদল।
এতে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. আবু জাফর চৌধুরী বিরু।
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও আওয়ামীলীগের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাতকে উদ্দেশ্য জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য ডা. আবু জাফর চৌধুরী বিরু বলেছেন, ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ সাল দেখছেন, ২০০১ থেকে ২০০৬ দেখেছেন, কি ছিল সেই চেহারা যা আপনারাই নিজেরাই অনুধাবন করবেন সেই চেহারা কি সোনারগাঁয়ে আছে? সোনারগাঁয়ে কি ঐক্যবদ্ধ আওয়ামীলীগের চিত্র আছে? অবশ্যই না। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের দোষ? অবশ্যই না। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ২০০৮ সালে নৌকা প্রতীক দিয়েছিল, তাহলে রাখতে পারলেন না কেন? কি ছিল সেদিনের প্রতিপক্ষ? কেউতো ছিল না। তাহলে কেন নৌকা হারালেন? আপনার ব্যক্তিগত অযোগ্যতার কারনে নৌকাটি হারিয়েছেন। ঘুমান! দিন শেষে ওঠবেন বিকেল ৫টার সময়, নৌকা কি আর থাকবে? নেত্রী খেলোয়ার হায়ার করেছেন। খেলায় জিততে হবে। দোষটা কার? ইঞ্জুর প্লেয়ারের দোষ। এখন প্র্রতিপক্ষ এসেছে। প্র্রতিযোগীতা করেন। প্রতিযোগীতায় যদি জিতেন তাহলে জিতবেন। প্রতিযোগীতায় যাওয়ার আগেই ভয় পাচ্ছেন কেন? কারন আপনি জানেন আপনি প্রতিযোগীতায় জিতবেন না। কারন আপনি তো আগেই ব্যর্থ হয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, আপনাদের উদ্দেশ্য করে বলতে চাই বাংলাদেশ আওয়ামীলীগকে শক্তিশালী করতে আবু জাফর চৌধুরী বিরু সোনারগাঁয়ে এসেছি। শক্তিশালী করবো। আগামী নির্বাচনে নৌকা প্রতীক এনে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে জয় উপহার দিব।
কায়সারকে উদ্দেশ্য করে নিজের রাজনৈতিক ইতিহাস তুলে ধরে বিরু দাবি করেন- ৮৭সালে ময়ময়নিসংহ কলেজে ভর্তি হয়েছেন। বুয়েটেও তিনি সুযোগ পেয়েছেন। ইন্টারমেডিয়েট পর্যন্ত কোনো রাজনীতি ছিল না। তিনি বলেন, ময়মনসিংহ কলেজে ভর্তি হয়েই ছাত্রলীগের রাজনীতি করেছি। স্বাধীনতার পক্ষের সাথে রাজনীতি করছি। এরশাদবিরোধী আন্দোলনে আপনি কোথায় ছিলেন? তার আগে আপনি কোথায় মিটিং মিছিল করেছেন সেটা প্রমান করুন। আমরা ছাত্রলীগ করেছি। ছাত্র সমাজ ও ছাত্রদলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছি। আপনি কোথায় ছিলেন? আমি ২০০৮ সালে সোনারগাঁয়ে আসি।
কায়সার হাসনাত ও মাহফুজুর রহমান কালামকে উদ্দেশ্য করে বিরু বলেন, এই সোনারগাঁয়ে ২০০৮ সাল আসার পরে জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশের বাহিরে কোনো নির্বাচন করিনি আমি। কিন্তু সেই থেকে আপনারা নেত্রীর নির্দেশ কয়টা মান্য করেছেন? তিনবার উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচন করেছেন নেত্রীর নির্দেশনার বাহিরে। ফেল করেছেন, বিএনপিকে পাস করিয়েছেন, দল থেকে বহিস্কৃত হয়েছেন। আপনারা অন্য প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেছেন। ঘোড়া নিয়ে নির্বাচন করেছেন, সিংহ নিয়ে নির্বাচন করেছেন। সুতরাং আপনার মুখে কথা মানায় না। আপনারা ইজারা নিয়েছেন আওয়ামীলীগ বানাবেন? আগে নিজেরা আওয়ামীলীগ হোন।
উক্ত অনুষ্ঠানে বারদী ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি আসাদুজ্জামান আসাদের সঞ্চালনায়-বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- সোনারগাঁ উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলী হায়দার, সোনারগাঁ উপজেলা সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মাসুদ রানা মানিক, উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি হাসান রাশেদ, বারদী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলল প্রস্তুতি কমিটির সভাপতি মোঃ নজরুল ইসলাম প্রমুখ।