সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জে বিএনপি ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের যত কমিটি গঠন করা হচ্ছে ততই সীমানা সংক্রান্ত জটিলতা বাড়ছে। নারায়ণগঞ্জে বিএনপির কমিটি গঠনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে দিচ্ছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। যে কোন সময় নিজ দলের নেতাকর্মীদের মাঝে বিস্ফোরণ সৃষ্টি হতে পারে। জেলা ও মহানগর বিএনপির কমিটি গঠনের মাধ্যমে বিশেষ নেতাদের সুবিধার্থে মহানগরীর মুল এলাকা জেলা বিএনপিতে অন্তর্ভূক্ত করে আবার জেলা বিএনপির এলাকা মহানগরীতে অন্তর্ভূক্ত করে কমিটি গঠন করার পরে অন্যান্য অঙ্গ সহযোগী সংগঠনগুলো সেই নির্দেশনা মানছেনা। এবার নতুন করে জেলা ও মহানগর যুবদলের নেতাকর্মীরা সীমানা নিয়ে মুখোমুখী অবস্থান করছেন।
জানাগেছে, ২৩ মার্চ শনিবার রাতে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের ২০১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় যুবদলের সভাপতি সাইফুল ইসলাম নীরব ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নরুল ইসলাম নয়ন। এর আগে গত বছরের ১৯ অক্টোবর একটি আংশিক কমিটি ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় যুবদলের এই দুই নেতা। যেখানে সভাপতি করা হয় শহিদুল ইসলাম টিটু, সিনিয়র সহ-সভাপতি সালাউদ্দীন চৌধুরী সালামত, সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট একেএম আমিরুল ইসলাম ইমন, হারুন অর রশিদ মিঠু, সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহিদুর রহমান স্বপন, রফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া ও সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউল ইসলাম চয়ন।
শনিবার পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে আগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে বহাল রেখে ১৯জনকে সহ-সভাপতি, ১০জনকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, ১৩ জনকে সহ-সাধারণ সম্পাদক, ৯ জনকে সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক, একজন কোষাধ্যক্ষ ছাড়াও আরও ৫ জনকে সহ-কোষাধ্যক্ষ পদে রাখা হয়েছে। একজন প্রচার সম্পাদক ও সহ-প্রচার সম্পাদক আরও ৪ জন। সাধারণ সদস্য পদে রাখা হয়েছে ৭৩ জন যুবদল নেতাকে।
কমিটিতে দেখা গেছে, কমিটিতে স্থান পাওয়া নেতাদের অনেকেই আবার মহানগর যুবদলের রাজনীতিতে জড়িত। যেখানে মহানগর যুবদলের আওতাধীন কমিটির বন্দর উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুর রহমান রিপনকে রাখা হয়েছে জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি পদে। আবার বন্দর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহিন আহমেদকে রাখা হয়েছে জেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে। এদের ছাড়াও বেশকজন নেতা মহানগর যুবদলের রাজনীতিতে জড়িত তাদেরকেও রাখা হয়েছে জেলা যুবদলের আওতাধীন কমিটিতে। অনেকেই আবার মহানগর কেন্দ্রীক রাজনীতিতে জড়িত এমন নেতাদেরও রাখা হয়েছে জেলা যুবদলের কমিটিতে।
তবে এ বিষয়ে জেলা যুবদলের সভাপতি শহিদুল ইসলাম টিটু বলেছেন, ‘বন্দরের ৫টি ইউনিয়ন জেলা যুবদলের আওতাধীন। যে কারনে ওই ৫টি ইউনিয়নের যুবদলের নেতারা স্বাভাবিকভাবেই জেলা যুবদলের কমিটিতে থাকবে।’ মহানগরীর রাজনীতিতে জড়িত এমন নেতাদের কেন জেলা যুবদলের কমিটিতে রাখা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে তাদের রাজনীতিটা করার সুযোগ করে দিতেই জেলা যুবদলের কমিটিতে রাখা হয়েছে।’ তিনি জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মামুন মাহামুদের উদাহরণ টেনে বলেন, অধ্যাপক মামুন মাহামুদ সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সদস্য সচিব। সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকাও মহানগরীর ভিতরে। তিনিও কিন্তু জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। বিষয়টি সে রকমই।’
এদিকে মহানগর যুবদলের সভাপতি কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ বলেছেন, বন্দরের ৫টি ইউনিয়ন মহানগর যুবদলের আওতাধীন ছিল এবং থাকবে। এটা নড়চড় হবে না।’
এর আগে জেলা ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটি গঠন করা হয়। যেখানে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এলাকাটি জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলে রাখা হয়। আবার জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের কমিটির ক্ষেত্রে সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকা রাখা হয় মহানগর ছাত্রদলের কমিটিতে। যদিও জেলা ও মহানগর শ্রমিকদলের ক্ষেত্রেও সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে নেতা রাখা হয় মহানগর শ্রমিক দলের কমিটিতে। মহানগর যুবদলের কমিটির ক্ষেত্রে সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে রাখা হয় বেশকজন নেতাকে। যাদের মধ্যে সেক্রেটারি মন্তুর বসবাস সিদ্ধিরগঞ্জে। অথচ জেলা বিএনপির সেক্রেটারি অধ্যাপক মামুন মাহামুদ সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সদস্য সচিবের পদে রয়েছেন। এর আগের বছর কেন্দ্রীয় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রহুল কবির রিজভী আহমেদ এক বিজ্ঞপ্তিতে নির্দেশনা দিয়েছিলেন জেলা ও মহানগর বিএনপির মুল দলের কমিটি যেভাবে হয়েছে সেভাবেই অন্যান্য অঙ্গ সহযোগী সংগঠনগুলো পরিচালত হবে। কিন্তু তা কেন্দ্রীয় নেতারাই রিজভীর নির্দেশনা মানছে না। ফলে নারায়ণগঞ্জে অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের মধ্যে বিরোধ বিরাট আকার ধারণ করছে।