সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার গোগনগর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এবিএম আজহারুল ইসলাম। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ বুকে লালন দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে এই গুরুদায়িত্ব পালন করছেন নিষ্ঠা ও সফলতার সাথে। দলের দুঃসময়ে আগলে রেখেছেন, কিন্তু সুসময়ে অদ্যাবধি কোনো ব্যক্তিস্বার্থে সুবিধা নিতে যাননি।
স্থানীয়দের মতে, গোগনগর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের ত্রিরত্ন হিসেবে পরিচিত যে তিনজন পূর্বসুরী সূত্রে আওয়ামীলীগার, সেই তিনজনের একজন এবিএম আজহারুল ইসলাম।
স্থানীয়রা জানান, তাঁর পিতা এক সময়ের বিখ্যাত পাট ব্যবসা কেন্দ্র সিরাজ জুট ফাইবার্স এর সত্ত্বাধিকারী ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর সান্নিধ্য পাওয়া সৌভাগ্যবানদের একজন হলেন এই এবিএম সিরাজুল ইসলাম। পিতার মতই ব্যক্তি স্বার্থের ঊর্ধ্বে থেকে দলের
জন্য নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন আজহারুল ইসলাম।
ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিত্তশালী নব্য আওয়ামীলীগাররা উদয় হবার পর থেকে গোগনগর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের ক্রান্তিকাল চলছিলো। কিন্তু দীর্ঘ রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা ও কর্মীদের সাথে আত্মিক সম্পর্কের দ্বারা সব গুছিয়েও এনেছেন। একদিকে অঢেল টাকার হাতছানি, অন্যদিকে দলীয় আদর্শ।
অন্যদিকে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রত্যাশি চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিমউদদীন আহমেদের সহযোগিতায় দলকে আগলে রেখেছেন তিনি। শত চেষ্টা করেও ইউনিয়ন কমিটির কাউকে হাইব্রিডরা তাঁদের পক্ষে নিতে পারেনি। সিনিয়র নেতাদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ নৌকার প্রার্থী প্রত্যাশি হিসেবে জসিমউদদীন আহমেদকে ঘিরে ঐক্যবদ্ধ আছে। আর এসবের নেপথ্যে এবিএম আজহারুল ইসলাম উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখে চলেছেন।
সার্বক্ষনিক জসিমউদ্দিন আহমেদের সাথে আছেন, যেকোনো প্রয়োজনে নিজে থেকে উদ্যোগী হয়ে সেই প্রয়োজন মেটাচ্ছেন। জসিমউদ্দিন আহমেদকে নিয়ে নির্বাচনী মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন, নিয়মিত দলীয় অফিসে আসছেন, কর্মীদের সাথে শেয়ারিংয়ের দ্বারা তাঁদের উজ্জীবিত করে চলেছেন, নির্বাচনী প্ল্যানিং করছেন। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে রাজনীতি দিয়েই মোকাবেলা করছেন আজহারুল ইসলাম।
তিনিই সবসময় সর্ব মহলে এটা জোর দিয়ে বলেছেন এবং মনে করছেন আগামী নির্বাচনে জসিমউদদীন আহমেদই নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবেন আর বিপুল ভোটে জিতেও আসবেন ইনশাআল্লাহ।
সদালাপী, মিশুক ও ধার্মিক এই আজহারুল ইসলাম গত দেড় যুগ ধরে গোগনগর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগকে আগলে রেখেছেন। স্বাধীনতার পর আওয়ামীলীগ এখানে ভালো অবস্থানে থাকলেও ৭৫পরবর্তীতে দলের অবস্থা নাজুক হয়ে ওঠে। সারাদেশেই অবশ্য একই অবস্থা ছিলো। তখন বঙ্গবন্ধুর নাম নেওয়াই কঠিন ছিলো। সেই কঠিন সময়েও এবিএম আজহারুল ইসলামদের বাড়িতে বঙ্গবন্ধুর বিশাল ছবি টাঙানো থাকতো। যে ছবি কমপক্ষে দশবার ভেঙে ফেলেছে স্বাধীনতাবিরোধী চক্র। পরম ভালোবাসা ও অসীম সাহসিকতায় আবার টাঙিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর ছবি।
মহান মুক্তিযুদ্ধে তাঁদের পরিবারের মোট পাঁচ জন অংশগ্রহণ করেন। এবিএম আজহারুল ইসলামের পিতা এবিএম সিরাজুল ইসলাম, তাঁর বড় ভাই ও তিন চাচা মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। তন্মধ্যে তাঁর চাচা সিপাহী জামালউদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম রনাঙ্গনে অসম সাহসিকতা দেখিয়ে শহিদ হন। আর তাঁর পিতা একাধারে মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও রনাঙ্গনের যোদ্ধা ছিলেন। পারিবারিকভাবে তাঁরা আট ভাই। তাঁদের মধ্যে এক ভাই এবিএম নজরুল ইসলাম ২০০১ সালের ২১শে আগষ্ট চাষাঢ়ায় শামীম ওসমানের কার্যালয়ে চালানো নারকীয় বোমা হামলায় নিহত হন।
ব্যক্তিজীবনে এক ছেলে ও দুই মেয়েকে নিয়ে বেশ সুখী পরিবার তাঁর। ২০০৩সালে দলের কাউন্সিলে গোগনগর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে অদ্যাবধি স্বপদে বহাল আছেন কর্মিদের নিকট ভীষণ জনপ্রিয় এই আওয়ামীলীগ নেতা। অনেক চড়াই উৎরাই পেরিয়ে গোগনগর ইউনিয়নে দলকে শক্ত অবস্থানে দাঁড় করিয়েছেন। এই জন্য তিনি কৃতিত্ব দেন গোগনগরের আরেক ঐতিহ্যবাহী পরিবারের সন্তান, আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী জসিমউদদীন আহমেদ সহ কয়েকজন সিনিয়র নেতাদের।
তিনি বলেন, সাংগঠনিকভাবে আমি গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দলকে পরিচালনা করতে চেষ্টা করেছি। কেন্দ্রীয় সকল কর্মসূচী পালন করেছি কারো কাছ থেকে চাঁদা না নিয়ে। জসিম ভাই এক্ষেত্রে অনেক সহায়তা করেছেন। আমরা প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনা মেনে মানুষের কাছে গিয়েছি, সাধ্যমতো সহযোগিতা করতে চেষ্টা করেছি। তাঁর ফলও আমরা পেয়েছি। স্বাধীনতার পর গত ২০১৬সালের ইউপি নির্বাচনে প্রথম বারের মতো সৈয়দপুর বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে নৌকা প্রতিক সর্বোচ্চ ভোট পেয়েছে। এক সময়ের বিএনপি অধ্যুষিত গোগনগর ইউনিয়নে এখন সাংগঠনিক ও ভোটের বিবেচনায় আলহামদুলিল্লাহ আওয়ামীলীগ অনেক এগিয়ে। কৃতিত্বের ভাগিদার সবাই।
তিনি আরও বলেন, আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে জসিমউদদীন ভাইকে বিজয়ী করে আনা। আল্লাহ যদি সহায় থাকেন, যদি লক্ষ্য পূরণ হয়, তখন হয়তো কিছুটা তৃপ্ত হবো।